কবে শুরু হতে চলেছে অমরনাথ যাত্রা
প্রেসকার্ড নিউজ লাইফস্টাইল ডেস্ক, ২৬ জুন : অন্যতম পবিত্র এবং প্রধান তীর্থস্থান হল অমরনাথ , যা জম্মুর রাজধানী শ্রীনগর থেকে ১৩৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩,৬০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত রয়েছে। প্রতি বছর প্রচুর সংখ্যক ভক্ত বাবা বরফানি দেখতে এখানে আসেন।
কেউ কেউ অমরনাথকে স্বর্গের পথ বলে, আবার কেউ কেউ মোক্ষের স্থানও বলে থাকেন। যদিও এখানে পৌঁছনো সহজ নয়। অমরনাথে পৌঁছনোর পরও অমরনাথের পবিত্র গুহায় আসতে দীর্ঘ যাত্রা ও আরোহণ করতে হয়। কোন সময় শুরু হতে চলেছে অমরনাথ যাত্রা চলুন জেনে নেই-
এই বছর অমরনাথ যাত্রা শুরু হবে ১লা জুলাই থেকে যা শেষ হবে ৩১শে আগস্ট। শুরুতে অমরনাথ যাত্রা ছিল মাত্র ১৫ দিনের। কিন্তু ১৯৯৪ সালে অমরনাথ যাত্রার মেয়াদ দু মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বছর অনুষ্ঠিতব্য অমরনাথ যাত্রার জন্য সরকার একটি সময়সূচিও জারি করেছে। যাত্রার জন্য নিবন্ধন ১৭ই এপ্রিল, থেকে শুরু হয়েছে, যা অনলাইন এবং অফলাইন দুটি ক্ষেত্রেই করা যেতে পারে।
অমরনাথ যাত্রার ইতিহাস :
অমরনাথ যাত্রা সম্পর্কিত ইতিহাস অনুসারে, মহর্ষি ভৃগু প্রথম পবিত্র অমরনাথ গুহায় গিয়েছিলেন। কথিত আছে যে একবার কাশ্মীর উপত্যকা সম্পূর্ণরূপে জলে নিমজ্জিত হয়ে গেলে, মহর্ষি কাশ্যপ নদী ও স্রোতের জল বের করে দেন। সেই সময়ে ঋষি ভৃগু একই পথ দিয়ে হিমালয় যাত্রায় এসেছিলেন। এ সময় তিনি বাবা অমরনাথের গুহা পরিদর্শন করেন। এরপর থেকে প্রতি বছর অমরনাথে জুলাই-আগস্ট মাসে পবিত্র গুহা দর্শন শুরু হয়। ঐতিহাসিক কালহানের বই 'রাজতরঙ্গিনী' এবং ফরাসি পর্যটক ফ্রাঁসোয়া বার্নিয়ারের বইতে অমরনাথ যাত্রার বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।
অমরনাথ যাত্রার গুরুত্ব:
অমরনাথ গুহাকে প্রাচীনকালে 'অমরেশ্বর' বলা হত। তুষার দিয়ে শিবলিঙ্গ তৈরি হওয়ায় এখানকার লোকেরা একে 'বাবা বরফানি' নামেও ডাকে। দেবী পার্বতীর শক্তিপীঠ অমরনাথ গুহায় অবস্থিত, যা ৫১টি শক্তিপীঠের মধ্যে একটি। কথিত আছে যে এখানে দেবী ভগবতীর গলা পড়েছিল। যে ভক্ত শুদ্ধ মন ও ভক্তি নিয়ে অমরনাথের পবিত্র গুহায় তৈরি শিবলিঙ্গ দর্শন করেন, তিনি মোক্ষ লাভ করেন। পুরাণে আরও বলা হয়েছে যে কাশীতে লিঙ্গ দর্শন ও পূজো করলে ১০ গুণ বেশি, প্রয়াগের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি এবং নৈমিষারণ্য তীর্থযাত্রার চেয়ে ১০০০ গুণ বেশি পুণ্য পাওয়া যায় অমরনাথ দর্শনে।
অমরনাথ গুহা রহস্য:
অমরনাথ গুহা গ্রীষ্মকাল ছাড়া বেশিরভাগ সময়ই তুষারে ঢাকা থাকে। অমরনাথ গুহার রহস্য হল এখানে প্রাকৃতিকভাবে শিবলিঙ্গ তৈরি হয়েছে। গুহার ছাদ থেকে বরফের ফাটল থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল পড়ে, যার কারণে বরফের শিবলিঙ্গ তৈরি হয়। শিবলিঙ্গের পাশে, আরও দুটি ছোট বরফের শিবলিঙ্গ তৈরি হয়, যাকে ভক্তরা মা পার্বতী এবং ভগবান গণেশের প্রতীক বলে মনে করেন।অমরনাথ গুহার শিবলিঙ্গই বিশ্বের একমাত্র শিবলিঙ্গ, যা সময়ের সঙ্গে বাড়ে ও কমে। চাঁদের আলো শুক্লপক্ষের পূর্ণিমায় এটি তার পূর্ণ আকারে থাকে এবং অমাবস্যা পর্যন্ত এর আকার কমতে থাকে। এই ঘটনা প্রতি বছর ঘটে। বরফের তৈরি এই প্রাকৃতিক শিবলিঙ্গ দেখতে প্রতি বছর দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন অমরনাথ যাত্রায়।
No comments:
Post a Comment