হাতির তাণ্ডব, ভাঙল তিনটে ঘর
নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ২৪ জুন: হাতির হানায় ভাঙল ঘর। আতঙ্কিত এলাকাবাসী। ঘটনা জলপাইগুড়ি জেলার মেটেলি ব্লকের উত্তর ধূপঝোড়ার। শুক্রবার রাতে হামলা চালিয়ে তিনটি ঘর ভেঙ্গে দেয় হাতি। সাবার করে দেয় ঘরে মজুদ যাবতীয় খাদ্যদ্রব্য। ঘর থেকে পালিয়ে কোনও ক্রমে প্রাণে বাঁচলেন কয়েকজন। লাগাতার এলাকায় হাতির হানায় রীতিমতো আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা।
জানা যায়, শুক্রবার রাত প্রায় আড়াইটা নাগাদ সংলগ্ন গরুমারা জঙ্গল থেকে একটি হাতি বের হয়ে মূর্তি নদী পেরিয়ে চলে আসে উত্তর ধূপঝোড়া এলাকায়। উত্তর ধূপঝোড়া ফরেস্ট লাইনের নখিন রায়, বাসুপাড়ার কাজল রায় ও গোলাবাড়ি এলাকার অতুল রায়ের ঘর গুঁড়িয়ে দেয়। কিছুদিন আগেও অতুল রায়ের বাড়িতে হামলা চালায় হাতি। ভোর রাত নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দাদের চিৎকারে হাতিটি ফের জঙ্গলে চলে যায়।
লাগাতার এলাকায় হাতির হানায় বনদপ্তরের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাসিন্দারা। রাতে এলাকায় বন কর্মীদের টহলদারী সহ যাবতীয় ক্ষতিপূরণ দাবী করেছেন জনগণ। বন দফতরের তরফে নির্দিষ্ট ফর্মে আবেদন করলে সরকারি নিয়মে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
ডুয়ার্সের জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় হাতির হানা যেন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কখনও ঘরে ঢুকে জিনিসপত্র তছনছ, কখনও ভাংচুর, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত দেখতে হয়। হাতির তাণ্ডবে প্রাণ ওষ্ঠাগত এলাকাবাসীর। সবসময় ভয়ে তটস্থ তারা। গত মঙ্গলবারও হাতির হানায় এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়, মাল ব্লকের মীনগ্লাস চা বাগানের ভুট্টা বাড়ি ডিভিশন এলাকায়। মৃতের নাম বীরসা মুন্ডা, বয়স ৭২ বছর। ঐদিন সকালে ঘর থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। আর ঘরে ফেরেন নি। কিছুটা সময় পেরিয়ে গেলে পরিবার খবর পায় বাড়ির অদূরে বীরসার মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। ঘটনাস্থল জুড়ে হাতির পায়ের ছাপ। পরিবারের দাবী, বুনো হাতির আক্রমণেই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে গরুবাথান এলাকার নেওড়া রেঞ্জের আধিকারিক এবং কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। নেওড়া রেঞ্জের আধিকারিক বিকাশ সুনদাস বলেন, 'আমরা এলাকায় গিয়ে সার্বিক বিষয়ে খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছি। প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, বন বিভাগকে পঞ্চায়েত ভোটের পূর্বে বাড়তি নজরদারি রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment