'প্রাণে মেরে ফেলব', বিজেপি প্রার্থীকে হুমকি তৃণমূল নেতার
নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, ১৮ জুন: বিরোধীরা নমিনেশন দিলে বিধায়ক দিচ্ছেন গোলাপ ফুল আর কর্মীরা হুমকি দিচ্ছেন বাড়িতে গিয়ে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে এমনই ছবি ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বিজেপির আদিবাসী মহিলা প্রার্থীর বাড়িতে গিয়ে তৃণমূল নেতার হুমকি। অভিযোগ, প্রার্থী পদ প্রত্যাহার না করলে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হবে, এমনকি দেওয়া হয় প্রাণনাশের হুমকিও। ভয়ে আতঙ্কে থানার দ্বারস্থ গৃহবধূ। অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূলের।
প্রার্থীপদ প্রত্যাহার না করলে যাবে প্রাণ, জ্বলবে ঘরবাড়ি, এমনই হুমকির অভিযোগ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর বিধানসভার ভুরকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৪ নম্বর বুথ এলাকায়। জানা যায়, শনিবার ভুরকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৪ নম্বর বুথে বিজেপির মনোনীত প্রার্থী আদিবাসী গৃহবধূ অর্চনা সিং মুন্ডার বাড়িতে যান স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূলের ঐ বুথের বুথ সভাপতি বিপ্লব পাল। অভিযোগ, প্রথমে ওই তৃণমূল নেতা অর্চনা দেবীকে বলেন, কেন তিনি বিজেপির পার্টি থেকে ভোটে দাঁড়ালেন? এর পরে তিনি ওই বিজেপি প্রার্থীকে বলেন, 'প্রার্থী পদ প্রত্যাহার করুন অনেক সুযোগ সুবিধা পাবেন! আর যদি প্রার্থী পদ প্রত্যাহার না করেন তাহলে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেব, প্রাণে মেরে ফেলব।'
এই ঘটনার পরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গৃহবধূ, জানানো হয় স্থানীয় বিজেপির নেতৃত্বদের। এরপরে শনিবার রাতে দল বেঁধে গৃহবধূকে সঙ্গে নিয়ে অশোকনগর থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। অর্চনা দেবী জানিয়েছেন, তিনি এবং তার পরিবার আতঙ্কে আছেন।
অশোকনগর পৌর মন্ডলের মন্ডল সভাপতি শ্যামলেন্দু দে বলেন, 'থানায় অভিযোগ দায়ের করলাম। অভিযুক্তকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।' পাশাপাশি বিজেপি নেতার বক্তব্য, 'পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে আমরাই প্রতিরোধ গড়ে তুলব।'
এদিকে শাসক দলের পক্ষ থেকে তৃণমূলের যুবনেতা প্রদীপ সিং জানিয়েছেন, পুরোটাই বিজেপির মিথ্যা অভিযোগ। হেরে যাওয়ার ভয় থেকেই বিজেপি এই নাটক করছে। পাশাপশি তৃণমূল নেতা বলেন, 'আমরাই বরং বিরোধীরা যাতে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারেন সেই বিষয়ে সহযোগিতা করেছি।'
তবে পঞ্চায়েত ভোটে অশোকনগরে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার পর্ব শান্তিপূর্ণ ভাবে কাটলেও শাসকদলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের হুমকির ঘটনা সামনে আসতেই পঞ্চায়েত ভোটের মুখে অশোকনগরের মাটিতে একটু হলেও রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়েছে বলাই যায়। গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে অশোকনগর থানার পুলিশ প্রশাসন।
No comments:
Post a Comment