একই আসনে তৃণমূলের জোড়া প্রার্থীর মনোনয়ন, ক্ষোভ
নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, ১৮ জুন: একই আসনে জোড়া প্রার্থীর মনোনয়ন জমাকে ঘিরে চাঞ্চল্য। ঘটনা উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার। দেগঙ্গা ব্লকের ৪১ নম্বর জেলা পরিষদের আসনে তৃণমূলের জোড়া প্রার্থীর মনোনায়ন জমা দেওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে জট। একই আসনে তৃণমূলের দুজনের মনোনয়ন জমা দেওয়ায় ক্ষোভের আঁচ এসে পড়েছে বারাসত ১ নম্বর ব্লকের কোটরা গ্রাম পঞ্চায়েতে। ঘটনায় ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় নেতৃত্বরা।
এই আসনে দলের নির্দেশেই মনোনায়ন জমা দিয়েছেন বারাসত ১ নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী পূর্তের কর্মাধ্যক্ষ ইছা হক সরদার। তিনি কোটরা পঞ্চায়েত এলাকার রাজনীতি করেন। ওই একই আসনে আবার শাসক দলের প্রার্থী হয়েছেন হাড়োয়ার বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম। একই আসনে শাসক দলের জোড়া প্রার্থীর মনোনায়নের প্রতিবাদে কোটরা পঞ্চায়েতের ইছা হক সরদারের ঘনিষ্ঠ ২৮ জন পঞ্চায়েত এবং তিনজন পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী মনোনায়ন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শনিবার কোটরা এলাকায় তৃণমূলের কার্যলয়ে বসে অঞ্চল সভাপতির নেতৃত্বে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে।
ওই আসন থেকে দলের নির্দেশে ইছা হক সরদার মনোনায়ন প্রত্যাহার করলে পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি মিলিয়ে ৩১ জন প্রার্থী মনোনায়ন প্রত্যাহার করব। এদিন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কোটরা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মহম্মদ রহিদ মোল্লা বলেন, "তৃণমূল জন্ম থেকে ১৯৯৮ সালে পশ্চিমবাংলার মধ্যে কোনও পঞ্চায়েত যদি একক ভাবে পায় তাহলে সেটা কোটরা পঞ্চায়েত। এখানে ২৮ টা আসন বর্তমানে। সেই পঞ্চায়েতকে দেখতে পাচ্ছি, উপর নেতৃত্ব যারা আছেন ইছা সাহেবকে নিয়ে খেলাচ্ছে।'
তিনি বলেন, "উনি ভদ্রলোক এবং রাজনীতি করতে গিয়ে সবথেকে বলি হয়েছেন ইছা সাহেব। সিপিএম আমলে ১৯৭৮ সালে ওনার বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। ইছা সাহেবকে মেরে, মরে গিয়েছে বলে ফেলে রেখে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও ইছা সাহেব দলটা ছাড়েনি। দল টিকিট দিয়েছে। আমাদের জেলা নেতৃত্বদের কথানুযায়ী নমিনেশনও করেছেন উনি। দল নমিনেশন দেওয়ার পরেও সেখানে অন্য একটা সিদ্ধান্ত কি করে হল, এই হল আমাদের ক্ষোভ।"
তাঁর কথায়, "আমরা বার্তা দিচ্ছি, ইচ্ছা সাহেব যখন নমিনেশন দিয়েছেন, টিকিটটা তাঁকেই দেওয়া হোক। নাহলে আমরা আমাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেব।" তিনি জানান, নাহলে ২০ তারিখের ভেতর সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবেন তারা।
কোটরা অঞ্চলের যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মোর্তজা হোসেন বলেন, 'আমাদের কোটরা পঞ্চায়েতের অভিভাবক ইছা সাহেবকে মনোনয়ন পেশের জন্য জেলার থেকে বলে। উনি নমিনেশন ফাইল করেন। তারপর আমরা শুনছি ঐ একই আসনে দল আরেকজনকে নমিনেশন ফাইল করতে দিয়েছে। তার কারণে আমরা কোটরা অঞ্চলে যতগুলো প্রার্থী আছে ২৮ গ্ৰাম পঞ্চায়েত ও ৩ জন পঞ্চায়েত সমিতি- দলের অঞ্চল সভাপতি এবং আমরা যারা নেতৃত্ব আছে, সকলে সিদ্ধান্ত নিই আমরা আমাদের প্রার্থী পদ প্রত্যাহার করে নেব।"
তিনি বলেন, "১৯৯৮ সালে প্রথম তৃণমূল এই কোটরা পঞ্চায়েত দখল করে। তারপরেও আমাদের প্রতি এত অবিচার।"
No comments:
Post a Comment