তৃণমূলের মাস্টার স্ট্রোক! পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী দণ্ডিকাণ্ডের নির্যাতিতা

 তৃণমূলের মাস্টার স্ট্রোক! পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী দণ্ডিকাণ্ডের নির্যাতিতা

 

 নিজস্ব সংবাদদাতা, ১৮ জুন, দক্ষিণ দিনাজপুর : তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার 'অপরাধে' তিনজন আদিবাসী মহিলাকে দণ্ডি কাটানোর অভিযোগ আনা হয়েছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে। ওই তিন আদিবাসী মহিলার মধ্যে একজনকে গ্রাম পঞ্চায়েতে মনোনয়ন দিয়ে 'মাস্টার স্ট্রোক' দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।  রাজনৈতিক মহল বলছে, এই শাস্তি দিয়ে অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে গেছে ক্ষমতাসীনরা।  এবার ক্ষমতাসীন দল প্রার্থী দিয়েছে।

 দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকের গোফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের চকবলরামের শিউলি মার্ডিকে গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।  শনিবার বিকেল থেকে নিজ নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা শুরু করেন শিউলি।  দেয়াল লিখন তিনি নিজেই করতেন।

 ওই ঘটনার পর বিজেপি-সহ বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, দণ্ডি কাটার শাস্তি দেওয়ার পর আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ তৃণমূল থেকে দূরে সরে গিয়েছে।  তবে, শিউলি মার্ডি বলেছেন, "কোনও আদিবাসী যাননি, বরং তাদের তৃণমূলে বেশি বিশ্বাস রয়েছে।"

 

 তিনি বলেন, “যেখানে দিদি উন্নয়ন করেছেন, সেখানে আদিবাসীসহ সাধারণ মানুষ তৃণমূলের ওপর আস্থা রেখেছেন।  অন্যদিকে, জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবী, শাস্তির পর শিউলির ওপর আস্থা প্রকাশ করেছে দল।  এ কারণে তাকে দলীয় টিকিট দেওয়া হয়েছে।  আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতবে তৃণমূল কংগ্রেস।

 কয়েক মাস আগে জেলা ও রাজ্যের রাজনীতিতে তোলপাড় হয়েছিল।  ভিডিওতে শিউলি মার্ডি নামে একজনকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার অপরাধে দণ্ডি কাটার শাস্তি দিতে দেখা গেছে।  এই ঘটনায় বালুরঘাট পুরসভার সহ-সভাপতি সুদীপ্ত চক্রবর্তীর জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

 পরে তাকে দলীয় পদের পাশাপাশি প্রশাসনিক পদ থেকেও অপসারণ করা হয়।  এরপরই ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করেন জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব।  সূত্রের খবর, তখন থেকেই শাসক শিবির পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে, যাতে আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক কোনওভাবেই নষ্ট না হয়।

 গোফানগর এলাকা ছিল বামপন্থীদের শক্ত ঘাঁটি। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে, তৃণমূল বামদের শক্ত ঘাঁটি দখল করেছিল। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল জিতেছে।

 গত বিধানসভা নির্বাচনে এই অঞ্চল থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস।  এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস জিতে পঞ্চায়েত দখল করবে বলে আশাবাদী তৃণমূল প্রার্থী শিউলির।

 তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।  বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার বলেন, "আদিবাসীরা তৃণমূলের সঙ্গে নেই।" তিনি আরও বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস এইভাবে আদিবাসীদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছে।  কিন্তু তা করে কোনও লাভ হবে না।  আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা তৃণমূল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।