এই শিবলিঙ্গের শেষ আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি
প্রেসকার্ড নিউজ লাইফ স্টাইল ডেস্ক,২৫ জুলাই : আমেঠির জামো থানা এলাকার দক্ষিণওয়াড়া গ্রামের একটি অতি প্রাচীন শিব মন্দির শ্রী বিল্বেশ্বর মহাদেব। এই মন্দিরের ইতিহাস হাজার হাজার বছরের পুরনো। এই শিব মন্দিরটি অতি প্রাচীন একটি মন্দির । এটি ১৬৬৯ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়েছিল। বলা হয় এই মন্দিরে আসলে সকল ইচ্ছা পূরণ হয়। প্রতি শ্রাবন মাসে এখানে মেলা বসে। এখানে ভোলেনাথের জলাভিষেক করতে আসে বহু লোক।
প্রাচীন এই মন্দিরের ইতিহাস হাজার হাজার বছরের পুরনো বলে জানা যায়। দক্ষিণওয়াড়া গ্রামের রাজপরিবারের বাবু গুরু প্রসাদ সিং- বলেছেন, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে শুনেছি যে এই মন্দিরটি আমাদের পূর্বপুরুষরা তৈরি করেছিলেন।
১৬৬৯ খ্রিস্টাব্দের দিকে, যখন সমস্ত মন্দির ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তখন আওরঙ্গজেবও এখানে আসেন, আওরঙ্গজেব এখানকার মন্দিরে বড় শিবলিঙ্গের চারপাশে ৪০ ফুট পর্যন্ত খনন করলেও শিবলিঙ্গের শেষ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই সময় আওরঙ্গজেব খবর পান যে তার বাড়িতে কেউ অসুস্থ। একথা শুনে তিনি শিবলিঙ্গে কয়েকবার আক্রমণ করলেও তা ধ্বংস করতে পারেননি। অবশেষে ক্লান্ত হয়ে এখান থেকে চলে যান।
এখানকার পুরোহিতরা জানান, আওরঙ্গজেব যখন হিন্দু মন্দির ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেই সময় আওরঙ্গজেব এই মন্দিরে এসেছিলেন। তিনি মন্দির ভাঙার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। এই মন্দিরগুলোতে আওরঙ্গজেবের নিষ্ঠুরতা দেখা যায়। তাঁর তলোয়ার দিয়ে শিবলিঙ্গে আক্রমণের চিহ্ন আজও রয়েছে। মন্দিরে বহু খণ্ডিত মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। বিশ্বাস করা হয় যে দ্বাপর যুগে পাণ্ডবরা নির্বাসনের সময় শিবলিঙ্গটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
মন্দিরের পিছনে প্রায় দু কিলোমিটার ব্যাসার্ধে নির্মিত ঢিবিটিতে রাজার দুর্গ ছিল। রাজারা এই শিবলিঙ্গের উপর একটি বিশাল বিশাল মন্দির তৈরি করেছিলেন। এরপর এখানে ক্ষত্রিয়রা আধিপত্য বিস্তার করে। আজও, একটি ছোট রাজ্যের ক্ষত্রিয় বংশধররা দক্ষিণওয়াড়ায় বাস করে। মুঘল রাজবংশের নিষ্ঠুর শাসক আওরঙ্গজেব দুর্গ আক্রমণ করলে তিনি প্রথমে মন্দিরটি লুট করেন এবং তারপর সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেন। মূর্তিগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার ধ্বংসাবশেষ এখনও মন্দির চত্বরে রয়েছে। মুঘল আমলের পর ব্রিটিশ শাসনামলে হিন্দুদের দ্বারা মন্দিরটি পুনঃনির্মাণ করা হয়,এবং যা আজও বিদ্যমান।
এই গ্রামের বাসিন্দা রাম কেওয়াল ত্রিপাঠী বলেন যে শ্রী বিল্বেশ্বর মহাদেব নামে বিখ্যাত এই ধামে প্রতি বছর শিবরাত্রি উপলক্ষে বিশাল মেলা বসে। শ্রাবন মাসে প্রতিদিন হাজারো ভক্তের ভিড় লেগেই থাকে। ভক্তরা সত্যিকারের হৃদয়ে যা ইচ্ছা নিয়ে আসে, তা পূরণ হতে সময় লাগে না।
No comments:
Post a Comment