স্বামীর ওপর হামলার পর ভোটকেন্দ্রে স্ত্রী, বললেন- "কাউকে ভোট দিতে দেব না"
নিজস্ব প্রতিবেদন, ০৮ জুলাই, কলকাতা : রাজ্যে অব্যাহত ভোট সন্ত্রাস। এ খবর লেখা পর্যন্ত সকাল থেকে নির্বাচনী সহিংসতায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। বারাসতের কদমবাগাছিতে এক নির্দল সমর্থককে হামলা করে আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। খবরে বলা হয়েছে, সকাল থেকে ওই এলাকায় কোনও পুলিশ বা কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই। এদিকে সকাল থেকেই বুথের গেটের বাইরে বসে ছিলেন এক মহিলা। কী হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার স্বামীকে তৃণমূলের লোকজন মেরেছে। রাতে হামলা হয়েছে। কাউকে ভোট দিতে দেব না।"
রাতে কিছু দুর্বৃত্ত স্বতন্ত্র সমর্থকদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তাকে বাজেভাবে মারধর করা হয়। এতে আব্দুল্লাহ আলী নামে এক স্বতন্ত্র সমর্থক গুরুতর আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এরপর শনিবার সকাল থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় দাবী করেছেন, গুরুতর জখম হওয়ায় আবদুল্লাহ আলিকে আরজিকার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন বারাসতের এসডিপিও। স্থানীয়দের দাবী, পুলিশও বুথে ঢুকে গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। ভোটারদের একাংশের অভিযোগ, "সকালে আমরা ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কি হলো বুঝলাম না, ভোটের লাইনে আমাকে মারধর করা হয়েছে। স্বতন্ত্ররা মার খেয়েছে।"
স্বতন্ত্র সমর্থকদের দাবী, তারা কোনও অবস্থাতেই ভোট দেবেন না। একদিকে যেখানে বুথের গেটে তালা লাগানোর অভিযোগ পুলিশের কাছে, অন্যদিকে এক বৃদ্ধ মহিলাকেও বাইরে থেকে তালা ঝুলাতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, ওই নারীও স্বতন্ত্র দলের সমর্থক। এদিকে এ ঘটনার আলো পড়ে টাকি রোডে। রাস্তা অবরুদ্ধ। আব্দুল্লাহ ভাই রাস্তায় শুয়ে পড়লেন। অন্যদিকে একদল টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এ প্রসঙ্গে একজন স্বতন্ত্র সমর্থক বলেন, “মানুষ বাড়িঘর ভেঙ্গে চলে যাচ্ছে। গ্রামের মানুষ তৃণমূল প্রার্থী চায় না, স্বতন্ত্র প্রার্থী চায়।”
এবার ভোট দেওয়ার সময় মৃত্যু হয়েছে এক ভোটারের। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। বর্তমানে মৃতদেহ ছাপড়া পল্লী হাসপাতালে রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে আহতদের চিকিৎসাও চলছে। নিহতের নাম হামজার আলী আল সোনা।
ভোটের দিন সকাল থেকেই চাপড়ার বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সকাল থেকেই ওই এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দেখা যায়নি। ফলে বিরোধীদের অভিযোগ, শাসক দলের কর্মীরা বিরোধীদের বিভিন্ন বুথে ঢুকতে দেয়নি।
কিছু জায়গায় ব্যালট বন্ধ থাকা সত্ত্বেও বিক্ষোভ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চাপড়ার একটি বুথে তৃণমূল কর্মী ও বাম কংগ্রেস সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। উত্তেজনা ছিল মূলত ভোটের লাইনে দাঁড়ানোর কারণে।
এ কারণে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে কিছু মানুষ প্রতিবাদ করেন। এতে বিষয়টি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ভোটের লাইন ঘিরে উত্তেজনা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বুথের সামনে অস্ত্র নিয়ে তুমুল লড়াই হয়। জনতার ওপর গুলি চালানো হয়। এতে এক ভোটারের মৃত্যু হয়েছে।
No comments:
Post a Comment