বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিস্ময়কর অবস্থা! ভোট গণনার আগে খোলা ব্যালট বাক্স
নিজস্ব প্রতিবেদন, ১০ জুলাই, কলকাতা : রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে সহিংসতার বিষয়ে ক্রমাগত শিরোনাম হয়েছে, তবে এখন ব্যালট বাক্স পরিবর্তনের অভিযোগ রয়েছে। গণনা কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে ব্যালট বাক্স। কিন্তু ব্যালট বাক্সের মুখ, যেটিতে সিল লাগাতে হবে, সেটি খোলা রয়েছে। এ নিয়ে তদন্তের মুখে পড়েছেন সেখানে কর্মরত সরকারি কর্মচারীরা। এই ঘটনার একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করে নি প্রেসকার্ড নিউজ।
সেই ভিডিও পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, “লোকেরা সিঙ্গুর ডিসিআরসি-তে প্রতিবাদ করছে। এখনও ডাকাতি হয়নি। সিল করা ব্যালট বাক্স খুলতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন।"
তিনি বলেন, "ভোটগ্রহণ আধিকারিকের কাছে কোনও উত্তর নেই। নিয়ম বই মেনে চলতে বলা হয়েছে। নির্বাচন আধিকারিকরা শুধু কালীঘাটের নির্দেশ পালন করছেন।"
মহম্মদ সেলিমের পোস্ট করা ভিডিওতে সিঙ্গুরের বাইনচিপোতা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে কালিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ছবি দেখা যাচ্ছে। সেখানে রাখা ব্যালট বাক্সের কাপড়ের আবরণ খোলা রয়েছে। আর তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। বাক্সের কাপড় কেন খোলা ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সেখানে কর্মরত সরকারি কর্মীরা।
সিপিআইএম হুগলি জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমি গতকাল রাত ১১টা নাগাদ ডিসিআরসি-তে ছিলাম। তখনই ৫৮ নম্বর ব্যালট বাক্স কালিয়ারা কাউন্টারে আসলেও আমরা দেখতে পাই এই ব্যালট বাক্সের উপরের কাপড়ের সিল কাটা। আমরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করলে তা আবার সিলগালা করা হয়।"
সিপিএম নেতা আরও বলেন, “আমরা শুরু থেকেই নির্বাচনী জালিয়াতির কথা বলে আসছি। ভোটের পরেও সেই চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে আমরা সজাগ দৃষ্টি রাখছি। সিপিএমের এই অভিযোগকে সমর্থন করেছিল স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বও।" সিঙ্গুর বিধানসভার বিজেপি আহ্বায়ক সুকান্ত বর্মণও ঘটনার তদন্তের দাবী জানিয়েছেন।
ব্যালট বাক্স টেম্পারিং
যদিও সিঙ্গুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সভাপতি গোবিন্দ ধারা সিপিএম ও বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, "সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিও সম্পর্কে আমি জানি না।'
তিনি বলেন, “কিছু ভুল হলে কোনও রাজনৈতিক দল দায়ী নয়। এটাই ভোট কর্মীদের ব্যাপার। সিঙ্গুরে ভোট সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। কোনও ত্রুটি ঘটে নি। নির্বাচনে মানুষ সিপিএম, বিজেপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই তাদের পায়ের তলায় মাটি নেই। এ কারণে তারা এমন অভিযোগ করছেন।"
এ বিষয়ে সিঙ্গার ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাউন্টারে ভোটগ্রহণকর্মীদের কাছ থেকে ব্যালট বাক্স নেওয়ার সময় ব্যালট বাক্সে মোড়ানো কাপড় খুলে দেওয়া হয়। বাক্সের সিল কোনওভাবেই খোলা হয়নি বলে জানা গেছে।
No comments:
Post a Comment