প্রথমবার আলু কোথায় পাওয়া যায়
প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২৪ জুলাই: দক্ষিণ আমেরিকার একটি বিখ্যাত পর্বতমালা হল আন্দেজ। মানুষ সভ্যতার শুরুর থেকে যে কয়টি স্থানে মানুষের বসতি করে উঠেছিল তাদের মধ্যে একটি হলো দক্ষিণ আমেরিকা।
ঐতিহাসিকরা দক্ষিণ আমেরিকাতে বেশ কিছু অঞ্চলে খোদাই কাজ করতেন তার থেকে তারা বুঝতে পারেন যে পৃথিবী সর্বপ্রথম আলু এখানে চাষ করা হয়েছিল। তাদের ধারণা এখানে প্রায় দশ হাজার বছর আগে থেকে আলু চাষ করা হতো এখানে মানুষেরা পাহাড়ের ঢালে খাচ কেটে আলু চাষ করত। তবে ঐতিহাসিক রাজ্যের আলু চাষের নমুনা পেয়েছে সেগুলি আড়াই হাজার পুরনো তারা মনে করে এর আগে আলু সংরক্ষণ করার কোন ভালো পদ্ধতি ছিল না এর কারণে দশ হাজার পুরনো আলু সংরক্ষণ করার কোন নমুনা পাননি। এমনকি অনেক জায়গায় মাটি খুঁড়ে কিছু পাত্র পাওয়া গেছে যেখানে আলুর চিত্র আঁকা রয়েছে তাই ওতে সেটা মনে করতেন এখানকার লোকজনের কাছে আলু একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, আলুকে তারা বিরয়ের প্রতীক মনে করতেন, তবে ইন্ডিয়ান উপজাতিদের জন্য এই আলু ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তারা আলু কে গামাটা বা বাটাটা বলতো আর এই নাম থেকে আপনারা বুঝতে পারবেন আলুর ইংরেজি নাম পটেটো এসেছে।
ইন্ডিয়ান্সরা এই আলু দিয়ে এক ধরনের পানীয় বানিয়ে খেত যা অনেকটা বিয়ারের মতো খেতে হতো। এরাই প্রথম আলু দিয়ে বিভিন্ন তরকারি বানাতে শিখেছিল এরাই প্রথম আলুকে বাণিজ্যিক ফসল হিসেবে উদ্বোধন করতো এভাবেই এক সময় আলু এত জনপ্রিয়তা লাভ করে এই জনপ্রিয়তার কারণে একসময় চাষিরা ভুট্টা চাষ ছেড়ে আলু চাষ করতে শুরু করেছিল।
১৫৩২ সালে স্পেনের নাবিকরা দক্ষিণ আমেরিকায় তাদের নিজস্ব আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেন ওই সময় প্রথমবার আলু দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ইউরোপে এসে পৌঁছায়। কিন্তু ওখানকার লোকজন তারা আলুকে সহজে মেনে নিতে পারেননি তারা ভাবত কালো চামড়া মানুষদের খাবার তবে আস্তে আস্তে আলু সবার কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করে কারণ তারা সমুদ্রে মাছ ধরতে যেত তখন তাদের এমন একটা সব্জির প্রয়োজন যা সহজে সেদ্ধ হয়ে যায় এবং এটি সহজে নষ্ট হয় না এবং এটি খেলে অনেক্ষন পেট ভর্তি থাকে।
ইউরোপে দীর্ঘ একটা সময় আলু কেবল পশু প্রাণীদের খাদ্য ছিলো। খাদ্য হিসেবে প্রাণীদের এটা বেশ পছন্দের ছিল।
অল্প জায়গায় অধিক ফলনের ফলে বিশেষ করে ১৮ ও ১৯ শতকে কোটি মানুষকে ক্ষুধা থেকে মুক্তি দিয়েছে আলু। আর সময় বাড়ার সাথে সাথে আলু হয়ে উঠেছে মানুষের রন্ধনপ্রণালীর একটি প্রধান উপাদান।
আলু প্রতি একরে ১৪ মিলিয়ন ক্যালরি দেয় যেখানে গম দেয় ৪ মিলিয়ন ক্যালোরি। ক্যালোরি ছাড়াও, তাদের প্রচুর প্রোটিন, ফাইবার এবং এমনকি ভিটামিন সি রয়েছে।
দেহকে শক্তিশালী করতে বিশেষ করে প্লীহা আর পাকস্থলীর কর্মক্ষমতা বাড়াতে আলু বিশেষ কার্যকর। এছাড়াও বৃক্কের কার্যক্ষমতায় ঘাটতির সমস্যায় এই উদ্ভিদ কাজে লাগে। রাতকানা রোগের ক্ষেত্রেও এর উপকারিতা লক্ষ করা যায়। সে ক্ষেত্রে রোগীকে প্রাণীর, বিশেষ করে খাসির কলিজার সাথে মিষ্টি আলু খাওয়াতে হয়। গ্রামে, এমন কি শহরেও আগুনে পুড়িয়ে কিছুটা পোড়া পোড়া করে মিষ্টি আলু খাওয়ার প্রচলন আছে। এই পদ্ধতি সাধারণ সর্দি-কাশির উপশমে কার্যকর। কিন্তু এত কিছু পরেও তখন আলু জনপ্রিয়তা আজকের মতন লাভ করে উঠতে পারেননি। কিন্তু তখন ইউরোপে এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল যার ফলে আলুর চাহিদা আকাশ ছোঁয়া হয়ে গিয়েছিল ১৭৭০ সালে ইউরোপের ঠান্ডা পরে সেই ঠান্ডার কবলে পড়ে অনেক ফসল নষ্ট হয়ে গেলেও আলু কিন্তু নষ্ট হয়নি এখান থেকে ইউরোপে আলোর প্রচলন বাড়তেই থাকে।
এবার প্রশ্ন হল আলু কিভাবে ভারতে এসেছিল?
ভাস্কোদাগামা যখন ইউরোপে থেকে ভারতে আসার রাস্তা খুঁজে বের করেছিলেন তখনই ইউরোপ থেকে অনেকজন ভারতে আসতে শুরু করেছিলেন আর তারা তখন সাথে করে নিয়ে আসত আলু কারণ একটাই আলু সহজে নষ্ট হতো না, এইভাবেই আস্তে আস্তে ভারত পাকিস্তান বাংলাদেশ সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে আলু আজকের দিনে আলু সব দেশেই গুরুত্বপূর্ণ।
No comments:
Post a Comment