র্যাপার হতে পড়াশোনা শিখতে থানায় এল কিশোর
নিজস্ব প্রতিবেদন: পড়াশোনার বেজায় ইচ্ছে, বড় হয়ে র্যাপার হতে চায় সে। কিন্তু পথের কাঁটা দারিদ্র্যতা। তাই নিজের মনের ইচ্ছের কথা জানায় সিভিক পুলিশকে। পরামর্শও যে মেলেনি তা নয় এবং সেই পরামর্শ অনুযায়ী সে এগিয়েও যায় সামনের দিকে। কিন্তু তারপরেই মেলে ভয়ঙ্কর পরামর্শ, কিছু ক্রাইম করে থানায় যেতে হবে। এই কাহিনী কোনও সিনেমার প্রেক্ষাপট নয়, সম্পূর্ণ বাস্তব। এই কিশোরের নাম লোকনাথ মজুমদার, সে উত্তর ২৪ পরগনার নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা।
লোকনাথ সংবাদমাধ্যমে জানায়, আধার কার্ডে তার নাম রয়েছে নীল মজুমদার। সে মাত্র দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে। কিন্তু পড়াশোনার খুব ইচ্ছে রয়েছে এবং বড় হয়ে র্যাপার হতে চায় সে। সে র্যাপ জানে, তবে পড়াশোনা ও লিখতে পারে না। লোকনাথের থেকে জানা যায়, পরিবারে তাঁর মা রয়েছেন, কিন্তু তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁকে দেখাশোনা করেন ট্রাফিক পুলিশেরা। লোকনাথ নিউ ব্যারাকপুরে তার দাদু-দিদার কাছে থাকে এবং রেস্তোরাঁয় বাসন মেজে দিনে ২০০ টাকা দিন প্রতি আয় করে ও এটা দিয়েই তার দিন কাটে।
লোকনাথের কথায়, "মা পাগল, তাই বাবা আরেকটা বিয়ে করে পালিয়ে গেছে। মাঝে মাঝে মায়ের জন্য বিরিয়ানি নিয়ে যাই কিন্তু মা বলে, 'আমার কোনও ছেলে নেই'। সে জানায়, তাঁর এক দাদা ও ভাই এবং এক দিদি রয়েছে; দাদা মহারাষ্ট্রে কাজ করে এবং দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে, ভাইও দিদির সঙ্গেই থাকে, অর্থাৎ একপ্রকার সে একা।
লোকনাথ বলে, "আমি পড়াশোনা করতে চাই। আমি একথা সিভিক পুলিশকে জানিয়েছি। ওরা আমাকে বলে বারাসতে কিশলয় হোমে যেতে। আমি সেখানে গেলে সেখানকার সিকিউরিটি গার্ড আমাকে বলে কোনও অপরাধ করে থানায় গেলে পুলিশই আমাকে এখানে ঢুকিয়ে দিয়ে যাবে। কিন্তু আমি তা করিনি এবং থানায়ও যাইনি। এরপর এই দাদা (এক পুলিশ আধিকারিক)-র সঙ্গে দেখা হয়। তিনি আমাকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।"
এদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে কয়েক লাইন র্যাপ গেয়েও শোনায় লোকনাথ। জানা গিয়েছে, ওই আধিকারিক তাকে একটি ফোন নম্বরও দিয়েছে যোগাযোগের জন্য। তবে, লোকনাথের মনে ইচ্ছে কতটা পূরণ হবে, আগামী দিনে সে কী একজন সফল র্যাপার হয়ে উঠতে পারবে? এই প্রশ্নের উত্তর কেবল সময়ের অপেক্ষা।
No comments:
Post a Comment