নির্বাচনী সহিংসতা নিয়ে বিএসএফ ও রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব! আহতদের চিকিৎসার নির্দেশ হাইকোর্টের
নিজস্ব প্রতিবেদন, ১০ জুলাই, কলকাতা : পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক 'হিংসা' নিয়ে বিএসএফ আইজি এবং রাজ্য সরকারকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্ট বলেছে, "আহতদের ভালো চিকিৎসা সেবা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।" সোমবার রাজ্য কংগ্রেস সভাপতির দায়ের করা মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ আহতদের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্ট বলেছে, "প্রয়োজনে তাদের রাজ্যের বড় হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে চিকিৎসার জন্য। এছাড়া নিহতের শেষকৃত্যে সব ধরনের সহায়তা দিতে রাজ্যেকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।"
হাইকোর্টও ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফির নির্দেশ দিয়েছেন। হাইকোর্ট বলেছে, "ঘটনার তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে। প্রতিবেদন পাওয়ার পরই আদালত ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।"
অধীর একটি স্বাধীন সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত দাবী করেছেন
এই উপলক্ষে অধীর চৌধুরী বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে অনেক সন্ত্রাস ছিল। খুন, মারধর, ব্যালট লুট হয়েছে। এ রাজ্যে গণতন্ত্রকে উপহাস করা হয়েছে।" আদালতে অধীর চৌধুরী দাবী করেন, সরকার, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন ষড়যন্ত্র করে এই নির্বাচনে তাদের শক্তি দেখিয়েছে।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তিনি (রাজীব) আমাদের দেশে পঞ্চায়েত রাজ শুরু করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি সুবিধা পৌঁছে দেওয়া। এখানে গণতান্ত্রিক অধিকার নষ্ট করা হয়েছে। সমাজের সকল স্তর রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার। এমন সময় দেরি না করে আদালতের দ্বারস্থ হলাম।"
বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ আদালতকে অনুরোধ করেছিলেন পঞ্চায়েতে মৃত্যুর ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব একটি স্বাধীন সংস্থাকে দিতে। তিনি বলেন, 'নিরপেক্ষ সংস্থাকে তদন্তের নির্দেশ দিতে হবে। কেন আদালতের নির্দেশ মানা হয়নি, প্রায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে?'
আদালত আহতদের চিকিৎসার নির্দেশ দেন
অধীর চৌধুরীর প্রশ্ন শুনে প্রধান বিচারপতি তাঁকে বলেন, “আপনার আবেদন অনুযায়ী আমরা তিনটি পয়েন্ট পেয়েছি। হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করা, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা। আহতদের চিকিৎসায় গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি।"
অধীর চৌধুরী আদালতে অভিযোগ করে বলেন, “আহত দরিদ্র মানুষরা যথাযথ চিকিৎসা পাওয়ার অধিকারী।" হাজার হাজার বুথ লুট হয়েছে। মাত্র ৬৯৬টি বুথে পুনঃনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর রাজ্যপক্ষের আইনজীবীকে প্রধান বিচারপতি বলেন, "সরকারি হাসপাতালে যথাযথ সেবা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। কেন? মামলার সংখ্যা সম্পর্কে তথ্য দিন।"
প্রধান বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) বলেন, “আবেদনে অনেক কিছুই পরিষ্কার নয়। কোন ক্ষেত্রে চিকিৎসা হচ্ছে না তাও বলা হয়নি।"
No comments:
Post a Comment