ভারতের চাঁদকে ছুঁতে যাওয়ার মিশনের অংশ নীলাদ্রি, গর্বিত মছলন্দপুর
নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, ১৫ জুলাই: সারা দেশের পাশাপাশি চন্দ্রযান-৩ কে ঘিরে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি গর্ব অনুভব করছে উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুর। চাঁদের মাটি স্পর্শ করার থেকে আর সামান্য কিছু দূরে ভারত। শ্রীহরিকোটা থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে চন্দ্রযান-৩। ইতিমধ্যেই তা সফলভাবে পৃথিবীর কক্ষপথ ত্যাগ করেছে। ২০ ঘন্টারও বেশি সময় কেটে গেলেও, এখনও ঠিক পথে সম্পূর্ণ পরিকল্পনা মাফিক এগোচ্ছে চন্দ্রযান-৩।
এর আগে ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ উৎক্ষেপণ করা হলেও, তা শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। তাই এবার অতীতের করা ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েই নতুন করে তৈরি করা হয়েছে চন্দ্রযান-৩। আর তার জন্যই দীর্ঘ সময় ধরে চলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, পরিকল্পনা সহ একাধিক কাজ। আর জানা গিয়েছে, ভারতের চাঁদকে ছুঁতে যাওয়ার এই মিশনের অংশ হিসেবে যুক্ত রয়েছেন উত্তর চব্বিশ পরগনার মছলন্দপুরের নকপুল এলাকার বাসিন্দা বছর ৩১-এর যুবক নীলাদ্রি মৈত্র। রাজবল্লভপুর হাই স্কুলের ছাত্র নীলাদ্রি এখন যেন মছলন্দপুরের গর্ব হয়ে উঠেছেন, ভারতের চাঁদের মাটি স্পর্শ করার অভিযান ঘিরে। তবে জানা গিয়েছে, গোবরডাঙ্গার বাসিন্দা আরও এক সিনিয়র বৈজ্ঞানিক সঞ্জয় সাহাও রয়েছেন এই মিশনে।
কর্মসূত্রে যদিও বাবা-মার সঙ্গে এখন কর্মস্থলেই রয়েছেন নীলাদ্রি। বছর চারেক আগে শেষ এসেছিলেন মছলন্দপুরে। তারপর থেকেই চন্দ্রযান-৩-এর কাজের সুবাদে ব্যস্ত হয়ে পড়েন মেধাবী এই যুবক। চন্দ্রযানটির নাম জিএসএলভি মার্ক থ্রি বলে ছেলের কাছ থেকেই জানতে পারেন নীলাদ্রি মৈত্রর মা কৃষ্ণা মৈত্র।
ছেলে নীলাদ্রি এয়ার স্পেস কাম সাইনটিস্ট পদে চাকরি করছেন গত ১০ বছর ধরে। মছলন্দপুরের রাজবল্লভপুর স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর খড়গপুর আইআইটিতে ভর্তি হয় এবং পরবর্তীতে বিটেক পড়তেই দক্ষিণের কেরালায় পারি। চন্দ্রযান অভিযানের জন্য টানা ১১ দিন ছেলের মুখ দেখতে পাননি মা-বাবা কেউই। চন্দ্রযান-৩-এর সফল উৎক্ষেপণ হতেই মা-বাবাকে ফোন করে সাফল্যের কথা জানান ছেলে, বললেন নীলাদ্রির বাবা নির্মল মৈত্র। ছেলের সাফল্যে আজ তারাও যেন গর্বিত।
২০০৯ এ উচ্চ মাধ্যমিক দেওয়া প্রাক্তন এই ছাত্রের সাফল্যে আজ খুশি রাজবল্লভপুর হাইস্কুলের শিক্ষকরাও। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন নীলাদ্রি। ফিজিক্সে বিশেষ আগ্রহ ছিল বলেও জানালেন তার স্কুল শিক্ষক নিমাই খাড়া। মিশন সম্পূর্ণ হতে প্রায় ৪০ দিন মত সময় নেবে চন্দ্রযান-৩। সেক্ষেত্রে সফল হলে, ভারত মহাকাশ গবেষণায় যেমন মাইলস্টোন স্থাপন করবে, পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনার এই যুবকদের হাত ধরে দেশের সাফল্যের ইতিহাসেও স্মরণীয় হয়ে থাকবে তাদের ভূমিকা।
No comments:
Post a Comment