শিবের মাথায় জল ঢালা আর হল না! স্নান করতে গিয়ে নদীতে ডুবে তিন যুবকের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদন, ২৪ জুলাই, কলকাতা : স্বপ্ন ছিল শ্রাবণ মাসে ভগবান শিবকে জল নিবেদন করার, কিন্তু তা পূরণ হয়নি। কাজু ঘোষ সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ভগবান শিবের জলাভিষেকের আগে নদীতে জল ও স্নান করতে গিয়ে তিন যুবকের ডুবে মৃত্যু হয়েছে। প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোলে, দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে। আসানসোলে ডুবে এক যুবক, মুর্শিদাবাদে নদীতে ডুবে দুই যুবকের মৃত্যু।
আসানসোলের ছাত্রের শিবের জলাভিষেক করার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু তা বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই আসানসোলের তার দুঃখজনক পরিণতি হল। জামুরিয়ায় অজয় নদীতে ডুবে বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে জামুরিয়ার বাহাদুরপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম কাজু ঘোষ। ছাত্রের বয়স ছিল ১৯ বছর। স্থানীয় বাসিন্দা যদুপতি পাল, কৃষ্ণচন্দ্র মুহুরিরা জানান, শ্রাবণ মাসের সোমবার এলাকার বহু মানুষ শিবকে জল দিতে গিয়েছিল।
ভগবান শিবকে জল নিবেদনের স্বপ্ন পূরণ হয়নি
তিনি জানান, অজয় নদী, সিদ্ধপুর বাগদিহা নদীর ঘাটে সবাই স্নান সেরেছেন। সেখান থেকে জল নিয়ে স্থানীয় মন্দিরে শিবলিঙ্গের মাথায় নিবেদন করুন। ওই দিন কলেজ ছাত্র কাজু ঘোষ ও তার কয়েকজন বন্ধু সকাল ৬টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে নদীতে স্নান করতে যায়। বর্ষাকালে অজয় নদী জলে পূর্ণ থাকে।
এসময় কাজু ঘোষ স্নান করতে নেমে কোনওমতে নদীতে পড়ে যান। স্থানীয় লোকজন তা দেখে তৎক্ষণাৎ তাকে জেলেদের কাছ থেকে টেনে বের করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কাজু ঘোষকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
তার বন্ধুরা সবাই সুস্থ আছে। একসঙ্গে স্নান করতে গিয়ে বন্ধুকে এভাবে হারিয়ে হতবাক হয়ে যান তারা। প্রশ্ন হলো, কাজু কেন সাঁতার না জানলে এভাবে ডুবে গেল? কাজুর পরিবার শোকাহত। প্রতিবেশীর ছেলের এমন ভাগ্যে ব্যথিত স্থানীয় বাসিন্দারাও।
দ্বিতীয় ঘটনাটি মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থানার অধীনে নিয়ালিস পাদা ফেরি ঘাট, ঘাটপোর্ট, সায়দাবাদে ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ভোর সাড়ে তিনটার দিকে ব্যসপুর মন্দিরে শিবের মাথায় জল দিতে যাওয়ার কথা বলে ভাগীরথী নদীতে স্নান করতে আসে পাঁচ বন্ধু।
এরই মধ্যে হঠাৎ জলে ডুবে দুই বন্ধুর মৃত্যু হয়। একজন সাঁতার কাটতে পারতেন না। তাই বাকি সবাই সেই বন্ধুকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। তাকে বাঁচানো সম্ভব হলেও দুই বন্ধু প্রথম বর্ষের ছাত্র প্রীতম সিং ও তৃতীয় বর্ষের ছাত্র অনিন্দ মণ্ডল নদীতে ডুবে যায়।
ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বহরমপুর প্রশাসন প্রথমে স্থানীয় ডুবুরিদের নামিয়েছিল, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাদের কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে তাকে খুঁজে বের করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
No comments:
Post a Comment