বাটা মাছের চাষ পদ্ধতি
রিয়া ঘোষ, ০২ জুলাই : বাটা মাছ অতীতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক জলাশয়ে যেমন নদী, খাল-বিল, বন্যার সমভূমি, ধানক্ষেতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত। বাজারে এ মাছের চাহিদা অনেক বেশি। তাই কৃত্রিম প্রজনন, পোনা উৎপাদন ও লালন-পালন ও বাটা মাছ চাষের কৌশল উদ্ভাবনে সফলতা এসেছে।
বাটা মাছের প্রজনন
এই মাছটি দেখতে অনেকটা রুই মাছের মতো। রুই মাছের পাশাপাশি বাটা মাছের চাষ করা হয়। মাছের আকার ৬-৮ ইঞ্চি। বর্তমানে বেশ কয়েকটি কার্প হ্যাচারিতে এই প্রজাতির মাছ উৎপাদন করা হচ্ছে। এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাটা মাছের প্রজনন হয়। দুই বছর বয়সী স্ত্রী ও পুরুষ মাছ প্রজননের জন্য নির্বাচন করতে হবে। দুই মাছ পরিপক্ক হতে হবে। পরিপক্ক স্ত্রী ও পুরুষ মাছকে প্রজননের আগে আলাদা ট্যাঙ্কে রাখতে হবে। ট্যাঙ্কে ৬-৭ ঘন্টা রাখার পর হরমোন ইনজেকশন দিতে হবে। কৃত্রিম গর্ভধারণের জন্য পিজি হরমোন সবচেয়ে ভালো ব্যবহার করা হয়।
বাটা মাছ চাষ পদ্ধতি
একই পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সঙ্গে বাটা মাছও পাওয়া যায়। মিশ্র চাষে পুকুরের বিভিন্ন স্তরের খাদ্যের পূর্ণ ব্যবহার করে মাছের উৎপাদন বাড়ানো যায়। রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প, কার্পিও এবং গ্রাসকার্পের মতো মাছের সাথে বাটা মাছ চাষ করা হয়।
মিশ্র চাষের জন্য, অপেক্ষাকৃত বড় পুকুরে কমপক্ষে ৮-১০ মাস জল থাকলে ভাল। পুকুরের আয়তন ২০ শতাংশের বেশি এবং জলের গড় গভীরতা ৫-৬ ফুট হতে হবে। পুকুরের পাড়ে লম্বা গাছ না লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।
ব্যবস্থাপনা
পুকুর সবসময় আগাছা মুক্ত রাখতে হবে। পুকুরের জল দ্রুত কমে গেলে অন্য উৎস থেকে বিশুদ্ধ জল সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।
জলের বিশুদ্ধতা ৮ সেন্টিমিটার। সার ও খাবার কম হলে বন্ধ করতে হবে। জলে অক্সিজেনের অভাব হলে মাছগুলো জলের ওপরে ভাসতে শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে, বিশুদ্ধ জলের সরবরাহ বা অক্সিজেন-বর্ধক ওষুধ ব্যবহার করা উচিৎ। সময়ে সময়ে পুকুরের নিচ থেকে জল টেনে বিষাক্ত গ্যাস অপসারণের ব্যবস্থা করতে হবে।
No comments:
Post a Comment