কী এই হালাল চা? প্যাকেজিং দেখেই ট্রেনে তোলপাড় যাত্রীর
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ২৪ জুলাই: ট্রেনের ভেতরে ‘হালাল চা’ পরিবেশন করায় ব্যাপক হাঙ্গামা করেন এক যাত্রী, যার ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিওটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের। 'হালাল চা' পরিবেশন করা হলে তিনি তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন। যাত্রীর এই প্রতিক্রিয়ায় রেলের আধিকারিকরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু যাত্রী বলেন, 'এটা তো শ্রাবন মাস। এটি হিন্দুদের পবিত্র মাস। এই সময় হালাল খাবার খাওয়া ঠিক নয়। এটা অপবিত্র মনে করা হয়।'
ভিডিওতে, যাত্রীকে ভারতীয় রেলওয়ের এক আধিকারিকের সাথে কথা বলতে দেখা যায় যিনি তাকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন যে চা-টি নিরামিষ। কিন্তু ওই যাত্রী এই উত্তরে সন্তুষ্ট নয়। তিনি বারবার জিজ্ঞাসা করেন কেন চায়ের নাম 'হালাল চা' রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ট্রেনে রেল কর্মচারীদের তরফে চা পরিবেশন করা হয়েছিল, যা ছিল হালাল সার্টিফায়েড। ভিডিওতে দেখা যায়, যাত্রী রেলের কর্মচারীকে বলছেন যে, শ্রাবণ মাস চলছে এবং ট্রেন আমাকে হালাল-প্রমাণিত চা পান করাচ্ছে। আমার পূজা করতে হবে। রেলের কর্মীরা এই চা ১০০ শতাংশ নিরামিষ বলে দাবী করা হলে যাত্রী আরও ক্ষুব্ধ হন। তিনি বলেন, 'আমাকে বুঝিয়ে বলুন হালাল সার্টিফায়েড মানে কি?'
রেলের কর্মী যাত্রীকে বুঝিয়ে বলেন যে, 'এটি মাসালা চায় প্রিমিক্স'। আমি আপনাকে বুঝিয়ে বলছি। এটি ১০০ শতাংশ নিরামিষ।' এতে যাত্রী প্রশ্ন করেন তাহলে এই হালাল সার্টিফায়েড কী? যাত্রার পর পরে পুজো করতে হবে। এরপর রেলের কর্মচারী জিজ্ঞেস করেন, 'আপনি ভিডিও করছেন? আমরা আপনাকে বলছি যে এটি ১০০ শতাংশ নিরামিষ। চা শুধু ভেজই হয় স্যার।'
যাত্রী বলেন, আমার কোনও ধার্মিক সার্টিফিকেট চাই না। আপনারা অনুভূতির খেয়াল রাখুন। এরকম কিছু থাকলে স্বস্তিক প্রমাণপত্র লাগান। কর্মী উত্তর দেন যে, ঠিক আছে, আমরা এটি মনে রাখব।' সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমশ ভাইরাল হচ্ছে এই ভিডিও। অনেক নেটাগরিকরা প্রশ্ন তুলছেন যে চায়ের প্রিমিক্সের জন্য হালাল সার্টিফিকেটের প্রয়োজন কী? পাশাপাশি রেল কর্তার ধৈর্যের প্রশংসা করছেন কয়েকজন।
এখন এই বিষয়ে আইআরসিটিসির স্পষ্টীকরণ এসেছে। আইআরসিটিসির একটি ট্যুইট বার্তায় বলা হয়েছে, 'উৎপাদনকারী সংস্থা এই পণ্যটি অন্যান্য দেশেও রপ্তানি করে, যেখানে এই জাতীয় পণ্যগুলির জন্য হালাল শংসাপত্র প্রয়োজন।' এছাড়াও, আইআরসিটিসি বলেছে যে এই ব্র্যান্ডের চা FSSAI সার্টিফিকেশন পেয়েছে এবং এই পণ্যটি ১০০ শতাংশ নিরামিষ। আইআরসিটিসি-র স্পষ্টীকরণের পর, এখন হালাল সার্টিফায়েড চা নিয়ে বিভ্রান্তি দূর হবে বলে ধরে নেওয়া যায়।
হালাল সার্টিফিকেশন কী?
হালাল প্রমাণিত- সূত্রপাত হয়েছিল ১৯৭৪ সালে। ১৯৯৩ সালে এটি শুধুমাত্র আমিষভোজী পণ্যের জন্য অনুমোদিত ছিল। কিন্তু পরে এটি অন্যান্য খাবার, ওষুধ এবং প্রসাধনী প্রমাণের অনুমোদন করে। ২০২২ সালে, হালালের সার্টিফিকেশন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার দাবী তোলা হয়।
No comments:
Post a Comment