ফ্রিজ আবিষ্কারের ইতিহাস
প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ২৪ জুলাই: বর্তমানে আমরা আমাদের ইচ্ছে মতো ফ্রিজ খুলে ঠান্ডা পানীয় খেতে পারি, বা কোন খাবারকে বহুদিনের জন্য প্রিসার্ভ করে রাখতে পারি। এছাড়া এই ফ্রিজের জন্যই আমাদের প্রিয় আইসক্রিমের স্বাদ আমরা পাই। কিন্তু আজ থেকে কুড়ি বছর আগেও এই ছবিটা একেবারে অন্যরকম ছিল। তখনকার দিনে কৃত্রিম প্রক্রিয়াতে বরফ তৈরি করা যেত না। কিন্তু যখন থেকে ফ্রিজ আবিষ্কার হয়েছে এটা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটা অপরিহার্য বস্তু হয়ে উঠেছে। তবে আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন এই ফ্রিজ কে এবং কবে আবিষ্কার করেছিলেন? আর ফ্রিজ আবিষ্কারের আগে বরফ কোথা থেকে পাওয়া যেত জেনে নিন। আজ থেকে ২০০ বছর আগেও যখন ফ্রিজ আবিষ্কার হয়নি তখন গরমকালে ঠান্ডা পানীয় পাওয়া ছিল অনেকটা হাতে চাক পাওয়ার মতন বিষয়।
কারণ সেই সময় বরফ কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করা যেত না, বরফ নিয়ে আসা হতো ঠান্ডা এলাকা থেকে অনেক সময় এই বরফ আনা হতো উত্তর মেরু বা কোন পর্বত থেকে মাঝেমধ্যেই রাস্তায় প্রচণ্ড গরমের ফলে এই বরফ গলে যেত ঠান্ডা এলাকা থেকে বরফ নিয়ে আসা খুবই ব্যয়বহুল একটি প্রক্রিয়া ছিল।
যার কারণে সেই সময় সাধারণ মানুষের কাছে ঠান্ডা পানীয় বা খাবার একপ্রকার হাতে চাঁদ পাওয়ার মতোই ছিল তবে যখন থেকে বিদ্যুতের আবিষ্কার হয় এবং বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক সামগ্রী বাজারে আসতে থাকে তখন থেকে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক মিলে একটি এমন বস্তু আবিষ্কারের চেষ্টা করছিলেন যা দিয়ে বরফ তৈরি করা সম্ভব হবে, এখানে আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি এই বরফ তৈরির প্রক্রিয়া টি শুনতে যতটা সহজ মনে হচ্ছে অতটা সহজ নয়।
কারণ জল যেমন উঁচু জায়গা থেকে নিচু জায়গায় বয়ে যায় তেমনি তাপ অর্থাৎ উষ্ণতা গরম বস্তু থেকে ঠান্ডা বস্তুতে বয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে দুটো বস্তুর তাপমাত্রা সমান হয় এই কারণে একটি বরফের টুকরো কে খোলা বাতাসে রেখে দিলে এটা ঘরের থেকে তাপ নিয়ে গরম হয়ে গলে যায় এটাতো স্বাভাবিক ধর্ম।
ফ্রিজ আবিষ্কারের প্রথম চেষ্টা যখন শুরু হয়।
ফলে বিজ্ঞানীদের সামনে একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল যার সাহায্যে গরম বস্তু থেকে এত পরিমান তাপ বের করে দেওয়া যাবে যাতে বস্তুটি ঠান্ডা হয়ে যাবে আর এর জন্য দরকার ছিল একটি হিট পাম্প ১৭৪০ সালে একজন স্কটিশ বিজ্ঞানী যার নাম ছিল উইলিয়াম কুলেন।
তিনি প্রথম একটি সফল রেফ্রিজারেটর আবিষ্কার করেন।
তিনি একটি কম্প্রেসারের মাধ্যমে ফিজের মধ্যে থেকে গরম হাওয়া প্রবাহ করেন যার ফলে ওই গরম হাওয়া ফ্রিজের মতো থেকে তাপমাত্রা শুষে নেয় ফলে ফ্রিজ ঠান্ডা হয়ে যায় তবে সেই সময় উইলিয়াম এই আবিষ্কারে তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি কারণ এটার মাধ্যমে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যেত না।
ফ্রিজ আবিষ্কারের দ্বিতীয় প্রচেষ্টা।
১৮০৩ সালে একজন আমেরিকান ব্যবসায়ী যার নাম ছিল থমাস মুরে।
তিনি একটি আইস বক্স আবিষ্কার করেন যার সাহায্যে কৃত্রিম পদ্ধতিতে বরফ তৈরি করা সম্ভব হচ্ছিলো আর এরপর থেকে বহু বিজ্ঞানী এই রেফ্রিজারেটর উপরে কাজ করতে থাকেন ১৮৩৪ সালে প্রথম কার্যকর জলীয়বাষ্প কম্প্রেশন রেফ্রিজারেটর তৈরি করা হয় আর বাণিজ্যিকভাবে বর্তনী রেফ্রিজারেটর আবিষ্কার হয় ১৮৫৪ সালে।
বর্তমান ফ্রী যখন তৈরি করা হয়।
আমরা বর্তমানে বাড়িতে যে রেফ্রিজারেটর ব্যবহার করি তা প্রথম ১৯১৩ সালে তৈরি করা হয় ১৯২৩ সালের ফ্রিজিবিয়ার কোম্পানি প্রথম অটোমেটিক ফ্রিজ বানায় এবং এরপর থেকেই ফ্রিজের ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়ে যায় ফ্রিজে কিভাবে খাদ্যদ্রব্য সুরক্ষিত রাখা হয়।
যেকোনো খাদ্যদ্রব্য কয়েকদিনের মধ্যেই খারাপ হয়ে যায় আর এর কারণ হলো ব্যাকটেরিয়া যা ঘরে সাধারণ তাপমাত্রায় খুব সহজে খাদ্যদ্রব্য নষ্ট করে দেয় কিন্তু আমরা যখন কোন খাদ্যদ্রব্যকে রেফ্রিজারেটর এর মধ্যে রাখি তখন সে খাবারের তাপমাত্রা কমে যায় আর এই কম তাপমাত্রায় ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকতে পারে না ফলে রেফ্রিজারেটর এর মাধ্যমে বহুদিন খাদ্য সংগ্রহ করে রাখা যায়।
এমনকি আজকাল বিভিন্ন ফসল হিমঘরে রেখে দেওয়া হয় যার ফলে সারা বছর ফসলের যোগান বজায় রাখে,
ফ্রিজ কিভাবে কাজ করে?
বন্ধুরাই ফ্রিজের কার্যপ্রক্রিয়া একটু জটিল তো চলুন আপনাদেরকে এটা খুব সহজ ভাষায় বুঝিয়ে দেয় যখন আমরা কোনো সাইকেলে হাওয়া দেই তখন দেখা যায় সেই সাইকেলের টিউব এবং সেই হাওয়া দেওয়ার নলটি খুব গরম হয়ে যায় এর কারণ হলো হাওয়া কি খুব প্রেসার দিয়ে একটি ছোট জায়গার মধ্যে নিয়ে আসা হয় আর তাতে তৈরি হয় তাপ আবার হঠাৎ করে যখন সাইকেলের টিউব এর হাওয়া খুলে দেওয়া হয় তখন সাইকেলের টিউবটি ঠান্ডা হয়ে যায় এর কারণ হলো দ্রুতগতিতে হাওয়া বের হওয়ার সময় আশেপাশে থেকে সেই হাওয়া তাপ সংগ্রহ করে নেয় ফলে সাইকেলের টিউব ঠান্ডা হয়ে যায়
ফ্রিজের পিছনের পিকচার
ঠিক এই ধারণার উপর ভিত্তি করে ফ্রিজ কাজ করে আপনারা ফ্রিজের পেছনে কিছু এমন দৃশ্য দেখে থাকবেন এখানে একটি তামার কয়েল থাকে যার মধ্যে একটি বিশেষ প্রকার গ্যাস থাকে যাকে একটি কম্প্রেসরের মাধ্যমে খুব হাই প্রেসার দেওয়ার ফলে ওই গ্যাস টি খুব গরম হয়ে যায়
এরপর ওই গ্যাস কে কম্প্রেসর থেকে বের করে আবার অন্য একটি তামার পাইপ এ নিয়ে আসা হয় আর এই বাইকটা হয় পেঁচানো টাইপের আর পেঁচানো পাইপ এর মধ্য থেকে অতিরিক্ত গরম হওয়া যেতে যেতে একদম শেষমাথায় গিয়ে খুব ঠান্ডা হয়ে যায়।
কারণ তামার পাইপ এর সাহায্যে গ্যাসের তাপ ঘরের তাপমাত্রায় ঠান্ডা হয়ে যায় এবার এই ঠান্ডা গ্যাসের প্রেসার হঠাৎ করে কমিয়ে দেওয়া হয় হলে এই গ্যাস এতটাই ঠান্ডা হয়ে যায় যে গ্যাস তখন তরল হয়ে যায় আর এই ঠান্ডা তরল তখন একটি তামার পাইপ এর সাহায্যে ফ্রিজের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয় আর এটা ফ্রিজের মধ্য থেকে গরম তাপ সংগ্রহ করে নেয়।
No comments:
Post a Comment