ঘড়ি আবিষ্কারের কিছু আশ্চর্য ইতিহাস
প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ২৪ জুলাই: আজকের দিনে যদি আমাদের কাছে সাধারণ ঘড়ি না থাকতো, তাহলে এই আধুনিক যুগেও আমাদের জীবন অনেক মুশকিল কাটতো। শুধু এই নয় এই জেনারেশনে যেসব সিস্টেম এক এক সেকেন্ডে হিসেবে চলছে, যেমন রেলগাড়ি এরোপ্লেন ইত্যাদি। যদি আমাদের কাছে ঘড়ি না থাকতো তাহলে এইসব সিস্টেমে কি হতো, সব মিলিয়ে ঘড়ি ছাড়া আজকের আধুনিক জীবন অসম্পূর্ণ থাকতো। কিন্তু আপনি কি জানেন এই গুরুত্বপূর্ণ ঘড়ি আবিষ্কার কে, কবে আর কোথায় করেছিল?
ঘড়ি একদিনে আবিষ্কার হয়নি। কেউ প্রথম বানিয়েছিল মিনিটের কাটা আবার কেউ বানিয়েছিল ঘন্টার কাটা এভাবে আস্তে আস্তে আবিষ্কার হয়েছে ঘড়ি। বর্তমান যুগে ঘড়ি আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস কারণ সেই ঘড়ির কাটার সাথে তাল মিলিয়ে আমরা আমাদের জীবনযাপন চালাচ্ছি। যেমন অফিস যাবা স্কুল যাবা খাওয়া-দাওয়া করা এমনকি ঘুমোতে যাওয়ার আগেও ঘড়ি গুরুত্বপূর্ণভাবেই কাজ করে। এখন প্রশ্ন হল যেই সময় ঘড়ি ছিল না সেই সময়কার লোকজনের জীবন-যাপন কেমন ছিল। আমরা ঘড়ির সাহায্যে দিনে এক একটা সেকেন্ডের হিসাব রাখতে পারি। প্রশ্ন হল ঘড়ি আবিষ্কারের আগে মানুষ কি করে সম্মান হিসেব রাখত? তখন মানুষ সূর্য অস্ত এবং সূর্য উদয়ের হিসেবে সময়ের অনুমান করত। প্রাচীনকালে মানুষ এইভাবে তাদের কাজ চালাতো। তারা তখন প্রহরে প্রহরে সময়কে অনুমান করতো কিন্তু যখন তাদের বুদ্ধির উন্নতি হয় তখন তাদের সময়কে অনুমান করার আগ্রহটা বাড়তে থাকে। তাই তারা সূর্যের আলো ছায়া দেখে সময়কে উন্নয়ন করতে শুরু করে তখন তারা আবিষ্কার করে সূর্য ঘড়ি।তারা প্রথমে একটি কাঠি মাটিতে পুঁতে রাখতেন এবং তার চার পাশে বিভিন্ন শব্দ লিখতেন। যার মাধ্যমে কঠির ছায়া এবং লেখা দেখা তারা সময়ের অনুমান করতে পারতেন। কিন্তু যখন মেঘ হতো আকাশের সূর্য না ওঠার কারণে তারা সময় জানতে পারত না। কিন্তু সূর্য ঘড়ি প্রথম ছিল মানুষের আবিষ্কারের প্রথম ঘড়ি।
এরপরে আবিষ্কার করে জল ঘড়ি এই ঘড়ি ভারতীয় এবং চীনা মিলে আবিষ্কার করেছিল। ভারতে তখন এই ঘড়িকে ঘটিকা যন্ত্র বলা হত। এই ঘড়ি ব্যবহার আরও দেশে ছড়িয়ে পড়ে। জল ঘড়িতে দুটো পাত্র ব্যবহার করা হতো। একটি ছোট নলের মাধ্যমে জল এক পাত্র থেকে অন্য পাত্রে প্রবাহিত করানো হতো । এই প্রবাহিত জলের পরিমাণের উপর নির্ভর করে সময় গণনা করা হতো । বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রচীনকালে সূর্যঘড়ির পাশাপাশি প্রচলন ছিল জলঘড়ির। বিশেষজ্ঞদের ধারণা করা হয় প্রায় ৫০০০ বছর আগে চীনদেশে জলঘড়ির প্রচলন ছিল ।
প্রাচীন ইরানে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বছরের বড় দিন ও ছোট দিন নির্ণয়ে সমর্থ হয়েছিল জলঘড়ির মাধ্যমে । এই জলঘড়ির মাধ্যমেই বছরকে বিভিন্ন ঋতুতে বিভক্ত করা হয়েছিল পারস্য শাসন আমলে । পৃথিবীর বহুদেশে এই জলঘড়ি জনপ্রিয়তা পায় । এটিতে সূর্যঘড়ির মত অসুবিধা ছিল না, ফলে এটি দিনে-রাতে ব্যবহার করা যেত ও যেকোন স্থানে বহন করা যেত। স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতে এই ঘড়ি ব্যবহার করা হতো । তবে জলঘড়িরও কিছু অসুবিধা ছিল । এই ঘড়ি জাহাজে ব্যবহার করা সম্ভব ছিল না । এছাড়া শীতপ্রধান দেশগুলোতে এ ঘড়ি ছিল মোটামোটি অচল । কারণ, এ ঘড়ির জল জমে বরফে পরিণত হলেই ঘড়ি বন্ধ হয়ে যেত । ফলে মানুষ এই জলঘড়ির বিকল্প খোঁজা শুরু করে ।
এরপর আবিষ্কার হল মোমবাতি ঘড়ি
মোমবাতি আবিষ্কারের পর থেকে চিনে সময় নির্ণয়ে মোমবাতির ব্যবহার শুরু হয় । মোমবাতি ঘড়িতে সমান সাইজের (১২ ইঞ্চি লম্বা ) ৬টি মোমবাতি পাশাপাশি রাখা হতো । আবার প্রত্যেকটি মোমবাতি সমান পুরুত্বের হত । মোমবাতিগুলোর গায়ে প্রতি ১ ইঞ্চি অন্তর অন্তর দাগ কাটা থাকতো । প্রতিটি মোমবাতি চার ঘন্টা জাবত জ্বলত। তাই মমবাতির গায়ে কাটা প্রতিটি দাগ ২০ মিনিট সময় প্রদর্শন করত । একটি নির্দিষ্ট আকৃতির মোমবাতি পুড়ে শেষ হতে কত সময় লাগছে তা থেকে সময় নির্ণয় করা হতো । মোমবাতির গায়ে বিভিন্ন রঙের মাধ্যমে সময় নির্দেশক দাগ দেওয়া হতো । পৃথিবীর বহু দেশে এই ধরণের ঘড়ির ব্যাপক প্রচলন ছিল ।
No comments:
Post a Comment