ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রুপি টাকা চালু হওয়ায় খুশি দু’দেশের পর্যটক ব্যবসায়ীরা
নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা: ভারতের সাথে রুপির ব্যবহার শুরু করেছে বাংলাদেশ। ১১ জুলাই থেকে আনুষ্ঠানিকভাদে ভারতের সাথে রুপিতে বানিজ্য শুরু হয় ভারতের। ডলার বাদ দিয়ে রুপি ও টাকা চালু হওয়ায় খুশি পর্যটন থেকে আমদানি-রফতানি ব্যবসায়ীরা।
ভারতের সাথে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে রুপির ব্যবহার শুরু করেছে বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে ঢাকায় দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এতদিন ডলারে চলত আমদানি-রপ্তানির কাজ। এমনকি ভারত থেকে বাংলাদেশে বা বাংলাদেশ থেকে ভারতে ছলে টাকা কনভার্ট করা হতো ডলারের রেট অনুযায়ী। ফলে বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে ঘুরতে আসতেন বা প্রয়োজনে আসতেন এমনকি ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও টাকার পরিমাণ অনেকটাই কমে যেত। আর এতেই সমস্যায় পড়তে হতো বাংলাদেশ থেকে আগত মানুষদের। তবে এবার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহ দু'দেশে যাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে রুপিতে আমদানি-রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিল দু'দেশের সরকার।
ভারত-বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্ক আগের থেকে অনেকটাই ভালো হয়েছে আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বাংলাদেশ সরকার উভয় পক্ষের আলোচনায় স্থির হয় ডলারের পাশাপাশি এখন থেকে রুপিতেও চলবে আমদানি-রপ্তানি। আর সেক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ অংশে সোনালী ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড এবং ভারতের অংশে স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া এবং আইসিআইসিআই ব্যাংকের মাধ্যমে এই লেনদেন হবে বলে জানা যায়।
এই রুপির ব্যবহার চালু হওয়ায় সেক্ষেত্রে লাভবান হবেন দু'দেশের মানুষই। করোনা পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক বাজার মন্দা হয়ে পড়ায় বাংলাদেশেও আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। সেক্ষেত্রে ডলার ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তৈরি হয় সমস্যা। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। সেই জায়গা থেকে রুপিতে লেনদেন হলে অনেকটাই সুবিধা হবে বলে মনে করছেন দু'দেশের যাত্রীরা।
এদিন ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের পেট্রাপোলে বহু যাত্রী এই বিষয়টিকেই সাধুবাদ জানান। চিকিৎসা পরিষেবা থেকে শুরু করে পড়াশোনা, এমনকি ভ্রমণের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ থেকে ভারতে যেমন বহু মানুষকে আসতে হয়, তেমনই ভারত থেকেও বহু মানুষ ভ্রমণে বাংলাদেশ যান প্রতি বছর। সেক্ষেত্রে টাকা পরিবর্তনের যে সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো এতদিন, তা অনেকটাই লাঘব হবে বলে মনে করছেন দুদেশের মানুষই। আর এই পদ্ধতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার ও বিশেষভাবে লাভবান হবেন যা আর্থিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে অনেকটাই সাহায্য করবে বলেও মত এই দেশে আসা বাংলাদেশ নাগরিকদের।
তবে সে ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সমস্যার সম্মুখীন হবেন বিভিন্ন সীমান্তে টাকা পরিবর্তনের কাজ করা ব্যবসায়ীরা। এতদিন চড়া দামে ডলার রেট অনুযায়ী রূপান্তরিত করে টাকা ক্যাশ করা হতো। রুপির ব্যবহার পাকাপাকি ভাবে চালু হলে এক্ষেত্রে আর তেমনভাবে লাভের সুযোগ থাকল না তাদের। তবু রুপিতে ব্যবসায়িক লেনদেন হলে অনেকটাই সুবিধা হবে বলেও মেনে নিচ্ছেন তারা। ফলে আন্তর্জাতিক যাতায়াত সহ বাণিজ্যক্ষেত্রে এক নতুন দিশার সূচনা হল বলেই মনে করছেন দু'দেশের বাসিন্দারা।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট সম্পাদক (CNF) কাস্টম অফিসিয়াল কার্ত্তিক চক্রবর্তী এই পরিকল্পনাকে সাধুবাদ জানান এবং তিনি মনে করেন, এক্ষেত্রে রপ্তানিটা রুপিতে হলে ব্যবসা আরও বাড়বে। এতদিন বাংলাদেশের চাহিদা থাকলে মাল দিতে পারছিল না এইদেশের ব্যবসায়ীরা। তার কারণ বাংলাদেশ পেমেন্ট ঠিকমতো ছাড়তে পারতো না। ফলে ব্যবসায়ীরা ঠিকমতো রপ্তানিও করতে পারতেন না। কিন্ত রুপিতে লেনদেন হলে রপ্তানি দিগুণ হয়ে যাবে বলে কার্ত্তিক বাবু জানান।
No comments:
Post a Comment