দুর্নীতির টাকা গেল রাশিয়ান বান্ধবীর অ্যাকাউন্টে, ইডি-র রাডারে এই প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা
নিজস্ব প্রতিবেদন, ৩১ জুলাই, কলকাতা : রাজ্যে গরু পাচার, কয়লা চোরাচালান থেকে শুরু করে শিক্ষক নিয়োগ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি দুর্নীতির মামলা তদন্ত করছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সূত্রে খবর,কয়লা দুর্নীতির টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে প্রভাবশালী প্রেমিকার অ্যাকাউন্টে পৌঁছেছে। ইডি সূত্রেরও দাবী, তাঁদের হাতে প্রাসঙ্গিক নথিও রয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই বিদেশি প্রেমিকার জন্ম প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি দেশে। এখন রাশিয়ার নাগরিক।
এই নারী পেশায় একজন 'মডেল' এবং লন্ডনে থাকেন। ইডি সূত্রে খবর, প্রাথমিক তথ্য তাঁরা পেয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, দুর্নীতির টাকা প্রথমে পশ্চিম এশিয়ার একটি দেশে হাওয়ালার মাধ্যমে পাঠানো হয়। কিছু ভুয়ো কোম্পানিতে টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এ জন্য সে দেশে একটি ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে।
ইডি সূত্রে খবর, ভুয়ো কোম্পানির টাকার একটা অংশ গিয়েছে রাশিয়ান মডেলের অ্যাকাউন্টে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শুধু ওই মহিলাই নয়, তার কয়েকজন সহযোগীও দুর্নীতির টাকা পেয়েছেন। তদন্তকারীদের প্রাথমিক মতামত অনুযায়ী, মোট আনুমানিক পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার কাছাকাছি।
ইডি সূত্রের মতে, ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত, এই প্রভাবশালী নেতা, একজন হিসাবরক্ষক এবং কয়লা চোরাচালানের মামলার অন্যতম অভিযুক্ত এবং পলাতক বিনয় মিশ্র দুবাই, লন্ডন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঘন ঘন ভ্রমণ করেছেন। ইডির দাবী, তখনই ওই মহিলার সঙ্গে দেখা হয়েছিল তাঁর।
প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর গঠিত বিভিন্ন দেশের অনেক তরুণী অর্থ উপার্জনের জন্য অনেক শহরে বসতি স্থাপন করেছে। এমন মেয়ের সংখ্যা দুবাইতেও কম নয়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, রাশিয়ান মহিলাকে বিশেষভাবে সনাক্ত করা হয়েছে এবং তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেনের বিবরণ চাওয়া হচ্ছে। তদন্তকারীদের দাবী, ওই মহিলা এখনও 'প্রভাবশালী' ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন।
তদন্তকারী অফিসাররা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের 'বান্ধবী' অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে টাকার পাহাড় পেয়েছিল। রাজ্যে দুর্নীতির মামলায় একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের তদন্তকারী ইডি-সিবিআই অফিসারদের একটি অংশ অবৈধ অর্থ লুকিয়ে বা নিষ্পত্তি করার জন্য 'বিশ্বস্ত গার্লফ্রেন্ড'-এর সাহায্য নিয়েছে।
তদন্তকারী সূত্রে জানা গেছে, কয়লা পাচারের প্রধান অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালার বয়ান অনুযায়ী দুই হাজার কোটি টাকার কালো টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা চলে গেছে প্রভাবশালীদের কাছে।
তদন্তকারী সূত্রের দাবী, হংকং, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের হোটেল ব্যবসার পাশাপাশি এ দেশের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, নির্মাণ ও হোটেল ব্যবসায় কয়লা পাচারের শত শত কোটি টাকার কালো টাকা জমা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment