অ্যাকোয়ারিয়ামের মলি মাছ থেকে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি বাঙালি গবেষকের
নিজস্ব প্রতিবেদন, ৩১ জুলাই, কলকাতা : ইঁদুর বা গিনিপিগ নয়, মাছ থেকে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি করলেন বাঙালি গবেষক। হুগলি জেলার এক গবেষক অ্যাকুরিয়ামের মলি মাছ ব্যবহার করে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি করেছেন। ডাঃ মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার ওষুধ তৈরিতে মলি মাছ ব্যবহার করে সাফল্য পেয়েছেন। পেটেন্ট জার্নালে তাদের অগ্রগতি প্রকাশিত হয়েছে। ডাঃ মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার হুগলি জেলার শ্রীরামপুর হাউজিং এস্টেটে থাকেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি পশু-পাখি পছন্দ করেন। বাড়িতে বিভিন্ন বিদেশী পাখি, অ্যাকোয়ারিয়ামও রয়েছে, যেখানে চলছে গবেষণা।
মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়, হরিণঘাটা থেকে ফার্মাকোলজিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর নেতাজি সুভাষ বোস ইনস্টিটিউট অফ ফার্মেসির অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কাজ করেন।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, একই কলেজের কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে প্রজনন ওষুধ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছরের গবেষণার পর সাফল্য এসেছে। এই গবেষণাটি এই বছরের ২৬ মে ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অ্যাক্ট ইন্ডিয়া জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল।
মলি মাছ নিয়ে হঠাৎ গবেষণা কেন?
ডাঃ মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার বলেন, "ইঁদুর, হ্যামস্টার বা গিনিপিগ এবং যে প্রাণীর ওপর গবেষণা করা হয় তার মডেল খুঁজে পাওয়া কঠিন। এক্ষেত্রে তার মৃত্যু অনিবার্য। এই সমস্ত প্রাণীর মডেল নিয়ে গবেষণা খুবই ব্যয়বহুল।”
তিনি বলেন, "মলি মাছের কোনও সমস্যা নেই। Poecilia spinufus বা মলি মাছ সহজেই পাওয়া যায়। এই মাছ নিয়ে গবেষণা করা সহজ। শুধু তাই নয়, অন্যান্য মডেলের তুলনায় মলি ফিশের দামও বেশ সাশ্রয়ী।"
গবেষক জানিয়েছেন, "অ্যাকোয়ারিয়ামে মিলনের পর পুরুষ ও স্ত্রী মলিকে আলাদা করে রাখা হয়। ১৯ দিন পর স্ত্রী মলি মাছকে খাবারের সঙ্গে ওষুধ মেশানো হয়।
ডাঃ মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার বলছেন, "এই গবেষণা থেকে যে ওষুধ বাজারে আসবে তার দাম অনেক কম হবে। খুলবে গবেষণার আরও অনেক দিক। এখন পর্যন্ত স্ট্যান্ডার্ড কী, অর্থাৎ যে প্রাণীর ওপর গবেষণা হবে। সে মরবে। এক্ষেত্রে তা নয়। এ কারণে এটি অন্যটির চেয়ে অনেক ভালো।"
মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার বলেন, "এই গবেষণা বিশ্বে প্রথম। এনএসবিআইএফের প্রিন্সিপাল ডঃ অর্ণব সামন্ত আমার গবেষণায় আমাকে সাহায্য করেছিলেন, যিনি এই গবেষণার পরিসংখ্যানগত নকশা তৈরি করেছিলেন। এ ছাড়া প্রদীপ রায়, সৌরভ রায়, নীলেন্দু শেখর রায় ও ঐন্দ্রিলা বৈশ্য আমাকে গবেষণায় সহায়তা করেছেন।"
No comments:
Post a Comment