বিয়েতে বরকে উল্টো ঝুলিয়ে জুতো-লাঠি দিয়ে মারধরই এখানকার রীতি
প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ২৯ জুলাই: আমাদের দেশের অনেক জায়গায় বিয়ের সময় বরের জুতো চুরি করার রীতি পালন করা হয়। এটি করে থাকেন কনের বোনরা। তারপর বর কিছু টাকা দেওয়ার পর তার জুতো ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তবে, এই বিয়ে ঘিরে ভিন্ন ভিন্ন রীতি লক্ষ্য করা যায় স্থান বা দেশ ভেদে। যেমন- কোথাও কোনও কোনও স্থানে আগুনের পরিবর্তে জলের চারপাশে সাত পাকে ঘোরা হয়। কোথাও বরের বদলে তার বোন তার কনেকে নিয়ে সাত পাক ঘোরে। কোথাও আবার বর-কনেকে এক বছর গোপন জায়গায় একসঙ্গে থাকতে হয়। এরপর বড়রা বিয়েকে বৈধ বলে ঘোষণা করেন। তারপর বিয়ের অনুষ্ঠান পালিত হয়। আজকের এই প্রতিবেদনে বিয়ের এমন একটি আচার সম্পর্কে উল্লেখ করা হল যাচ্ছি, যা জানলে চোখ কপালে উঠবে। ভাবছেন তো কী এমন সেই আচার বা রীতি!
সেই আজব রীতি হল, বিয়ের সময় বরকে উল্টো ঝুলিয়ে মারধর করা হয়। এই রীতির চল রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। প্রথমত, বরের বন্ধুরা তার পায়ে একটি লাঠি বেঁধে তাকে উল্টে ঝুলিয়ে দেয়। এরপর তাকে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। কেউ কেউ বরকে জুতো ও চপ্পল দিয়েও মারধর করে। শুধু তাই নয়, কেউ কেউ বরকে হলুদ করভিনা মাছ দিয়ে মারধরও করেন।
এই মারধরের বিশেষ বিষয় হল লাঠি, জুতো, চপ্পল বা মাছ দিয়ে শুধু বরের পায়ের তলায় পিটানো হয় এবং এই সময় বরের পা থেকে জুতোও খুলে ফেলা হয়। এককথায় বিয়ে করার পর আপ্যায়নের পরিবর্তে প্রথমে বরকে অনেক মারধর করা হয়। তবে, মেয়ে পক্ষের কোনও সদস্যই বরকে মারধরের সঙ্গে জড়িত থাকেন না। এই মারধর শুধুমাত্র বরের বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়রাই করে থাকেন।
দক্ষিণ কোরিয়াতে, এই অদ্ভুত ঐতিহ্য আজও কোন দ্বিধা বা বাধা ছাড়াই অনুসরণ করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ানরা পূর্ণ উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে বিবাহের এই আচারটি পালন করে। ভাবুন তো একবার, যদি ভারতে এই রীতি পালিত হয়, তাহলে কেমন ঝগড়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে! কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার লোকেরা বিশ্বাস করেন যে, বর যদি এই আচারে পাস করে যায়, তবে তার বিবাহিত জীবনে খুব কম সমস্যা হয়। আর হ্যাঁ, এই মারধরের সময় তাকে অনবরত প্রশ্নও করা হয়।
বিয়েতে এই আচার পালনের একটি বড় কারণ রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার লোকেরা বিশ্বাস করেন যে, এভাবে বর কনের সামনে বিনা দ্বিধায় মারধর খেয়ে তার পুরুষত্ব প্রমাণ করে। এর পাশাপাশি, এটি তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করে না, কারণ বর আগে মার খেয়ে জীবনের জন্য শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
হলুদ করভিনা মাছ দিয়ে মারার পেছনেও কারণ রয়েছে। লোকে বলে এই মাছ দিয়ে মারলে তা অনেক বেশি জোরে লাগে। এই মাছ দিয়ে মারার পর বর আজীবন শক্ত হয়ে যায়। তবে, এখন এই আচারটি শক্তি পরীক্ষার চেয়ে বিনোদনের জন্য বেশি করা হয়।
No comments:
Post a Comment