বিজেপিতে নির্দল কাঁটা
নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ০১ জুলাই: বিজেপির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে দলত্যাগী নেতা নিতাই মণ্ডল পুরাতন মালদা ব্লকের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক আসনে নির্দল প্রার্থী দেওয়ায় তুমুল শোরগোল জেলার রাজনৈতিক মহলে। এক সময়ের পুরাতন মালদার পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতার পদে ছিলেন নিতাই মণ্ডল দল বিরোধী কাজের অভিযোগে তাঁকে গত দুই বছর আগে বহিষ্কার করে বিজেপি নেতৃত্ব। এরপর ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে একাধিক আসনে প্রার্থী দেওয়াতেই বিপাকে পড়েছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। এমনকি বিজেপির জেলার সহ-সভাপতি তাপস গুপ্ত এই নির্দল প্রার্থীর জন্য দলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনার কথাও এক বাক্যে স্বীকার করেছেন। পুরো বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক বলেও জানিয়েছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব।
উল্লেখ্য , পুরাতন মালদা বিধানসভা কেন্দ্রটি বিজেপির দখলে। বিধায়ক রয়েছেন গোপালচন্দ্র সাহা। পুরাতন মালদার অন্তর্গত সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপির গড় হিসাবে পরিচিত। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি এই গ্রাম পঞ্চায়েতটি দখল করেছিল। এক বছর আগে অনাস্থার মাধ্যমে সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতটি তৃণমূলের দখলে চলে যায়। এছাড়াও পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের আসনও রয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকায়। এবারের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজের স্ত্রী রুমা সরকার মণ্ডলকে নির্দল প্রার্থী করেছেন দলত্যাগী বিজেপি নেতা নিতাই মণ্ডল। তিনি নিজেও পঞ্চায়েত সমিতির নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। এছাড়াও সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মোট ৩০ টি আসনের মধ্যে ১৬ টি আসনে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়েছেন তিনি। আর এটাই এখন বিজেপির মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এবারে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির পথের কাঁটা যে এই নির্দল প্রার্থীরাই, তা অবশ্য সংশ্লিষ্ট এলাকার দলের একাংশ নেতৃত্ব স্বীকার করছেন। একসময় বিজেপির প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন নিতাই মণ্ডল। গত বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে দল বিরোধী কাজের জন্য তাকে বহিষ্কৃত করা হয়। তারপর থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে একাই লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন নিতাই।
তিনি বলেন, "যারা ভালো কর্মী এবং যারা বিজেপিতে দীর্ঘদিন থেকে ভালো কাজ করে গিয়েছেন, তাদের কোনও জায়গা দেওয়া হয় নি। অন্যায় ভাবে তাকে একসময় দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। অথচ বিজেপির বিধায়ক ধান্দাবাজ বলে অভিযোগ তুলেছেন বহিষ্কৃত বিজেপি নেতা নিতাই মনণ্ডল। তাঁর অভিযোগ, এখন উপযুক্ত সময় এসেছে বিজেপিকে বুঝিয়ে দেওয়ার, তাদের ক্ষমতা কতটা। কারণ, বিগত দিনে সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতৃত্ব ভুল বুঝিয়ে তাদের কাজে লাগিয়ে ভোট করিয়েছে। কিন্তু দলে থেকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া হয়নি। তাই বিজেপির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে মূলত নির্দল প্রার্থী দাঁড় করানো হয়েছে।
No comments:
Post a Comment