জানেন কি এরা সবচেয়ে খাটো জাতি? - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday 27 July 2023

জানেন কি এরা সবচেয়ে খাটো জাতি?

 


জানেন কি এরা সবচেয়ে খাটো জাতি? 




প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২৭ জুলাই: আজব দুনিয়ায়, আজব সব জাতির বসবাস। আদিবাসী, গোত্র বা ক্ষুদ্র নীর গোষ্ঠী বলতে এমন এক ধরণের জাতিকে বোঝায় যারা কোনও রাষ্ট্র গঠন করতে পারে নি, কিন্তু রয়েছে তাদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃত, আচার, রীতি ইত্যাদি। সমগ্ৰ পৃথিবী জুড়েই বিভিন্ন দেশে মহাদেশে ছড়িয়ে রয়েছে এরকম অসংখ্য গোত্র বা জনগোষ্ঠী। নিজেদের সংস্কৃতি আর রীতিনীতি দিয়ে এরা একটা দেশের সমাজ ব্যবস্থাকে গড়ে তোলে আরও বৈচিত্র্যময়। এরকম কিছু জনগোষ্ঠীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পিগমি জনগোষ্ঠী। চলুন পিগমি জনগোষ্ঠীর সম্পর্কে কিছু জেনে নেওয়া যাক। 


যে কোনও খাটো বা ক্ষুদ্র জিনিসকে বোঝাতে পিগমি শব্দটি ব্যবহার করা হয়। যেমন পিগমি সার্ক, পিগমি জলহস্তী ইত্যাদি। তবে পিগমি বলতে মূলত আফ্রিকার একটি আদিবাসী জনগোষ্ঠী বোঝায়। এরা মধ্য আফ্রিকায় বসবাস করেন, এদের আফ্রিকার সবচেয়ে প্রাচীন জনগোষ্ঠী হিসাবে গণ্য করা হয়। সারা বিশ্ব মিলিয়ে পিগমিদের সংখ্যা বর্তমানে ১ লক্ষের বেশি হবে না। পূর্ণ বয়স্ক পিগমিদের গড় উচ্চতা ৪ ফিট ১১ ইঞ্চি হয়ে থাকে। 


অনেক গবেষক মনে করেন, পিগমিদের শরীরে গ্রোথ হরমোন কম হয়ে থাকে। এ কারণে ১৩ বছর বয়সের পর তারা আর লম্বায় বেড়ে ওঠেন না। আবার, অনেকে মনে করেন, যেহেতু তারা শুরু থেকেই বনে-জঙ্গলে বাস করছে নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার তাগিদে তাদের শারীরিক আকৃতি ছোট হয়ে থাকে। কেননা এতে জঙ্গলে খাপ খাইয়ে নেওয়া সহজ হয়। 


স্থান নির্বিশেষে পিগমিদের বৈশিষ্ট্য হল তারা যাযাবর, শিকারী এবং শান্তপ্রিয়। সঙ্গীত বা সুর তাদের জীবনের বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে। তাদের গানের এবং উৎসবে আছে আদিম অনন্য একরো। যেহেতু পিগমি বলতে অনেক ধরণের আদিবাসীদের বোঝায়, তাই তাদের সাধারণ ভাষা নেই। সমাজ ও স্থান ভেদে পিগমিদের ভাষা ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন বাকা পিগমিরা বাকা ভাষায় কথা বলেন। সংস্কৃতি ভেদে কিছু পিগমি আদিবাসীদের কথা জেনে নেওয়া যাক। 


সব ধরনের পিগমি আদিবাসীর বাস বনের সবুজে। পাতা দিয়ে তৈরি তাবুর মত ঘরের নাম মঙ্গলু। এরকম তাবুর মত ঘর তারা বানায় বিভিন্ন গাছের পাতা এবং ডালের সমন্বয়ে। তাদের মাঝে বিয়ের প্রচলন অতটা নেই। বাকারা আফ্রিকান বেশির ভাগ আদিবাসীদের মতোই যাযাবর জীবন যাপন করেন। তাদের আসল কাজ শিকার করা। এছাড়া নারীদের মাঝে মাছ ধরার প্রচলন আছে। বেশির ভাগ সময় ওরা বনের মধ্যে কাটায় এবং আশেপাশের অঞ্চলের মানুষের সাথে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলে না। 


বুটি সম্প্রদায়ের লোকেরা পারস্পরিক সহযোগিতায় বিশ্বাস করেন। তারা পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষের সাথে মিলে মিশে বাস করেন। যেহেতু বেশির ভাগ সময় বনে বাস করা হয়, তাই তারা বনের ভেতর থেকে পাশের গ্রামের মানুষকে সাহায্য করেন। তাদের জন্য মধু সংগ্রহ করে বা মাংস দিয়ে তারা বিনিময়ে নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেয়। 


১৯০০ সালেও বেলজিয়ামে পিগমিদের ধরে নিয়ে প্রদর্শনীতে দেওয়া হত। নারী পিগমিদের যৌন দাসী রাখার ইতিহাসও বেশ প্রচলিত এবং পুরোনো। রোয়ান্ডা গন হত্যার সময় এক তৃতীয়াংশ পিগমিদের হত্যা করা হয় বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। পিগমিরা পৃথিবীর আদিম অস্থিত্ব। কিন্তু আজ তাদের অস্থিত্ব বিপন্ন-প্রায়। শান্তিপ্রিয় পিগমিরা এখন বনের মাঝে নিজেদের নির্ঝঞ্ঝাট বনেই থাকতে চায়। কিন্তু বাঝিক সমস্যা তাদের জীবনযাপনে ব্যাঘাত ঘটাছে । বনের শান্তিপ্রিয় ওই আদিবাসী গোষ্ঠী প্রতিনিয়ত অন্যায়, জুলুম, অনাচারের শিকার। এই মূহুর্তে যদি তাদের অধিকার সংরক্ষণের ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে না দেওয়া হয়, তবে অতি সত্ত্বর হয় তো বিলুপ্ত হয়ে যাবে পৃথিবীর আদিমতম একটি গোষ্ঠী।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad