নেপথ্যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা? রাস্তা সারাইয়ের কাজে হাত লাগালেন গ্ৰামবাসীরাই

নেপথ্যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা? রাস্তা সারাইয়ের কাজে হাত লাগালেন গ্ৰামবাসীরাই

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁকুড়া, ২২ জুলাই: রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় এলাকায় রাস্তা হয়নি, এমনই অভিযোগ। বাধ্য হয়ে ঝুড়ি কোদাল হাতে রাস্তার কাজ করছেন গ্রামবাসীরাই। ঘটনা বাঁকুড়ার ইন্দাসের। 

বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস ব্লকের আমরুল গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাগ্রাম পালপাড়ায় রয়েছে ৩০ থেকে ৩৫টি পরিবার। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এলাকায় বিজেপির প্রভাব রয়েছে বলে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত তাদের গ্রামের এই রাস্তাটি তৈরি করে দেয়নি। স্বাভাবিকভাবেই রাস্তা নিয়ে চরম যন্ত্রণার শিকার হচ্ছে গ্রামের মানুষজন। 

বর্ষা এলেই গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়ে। এক হাঁটু কাঁদা। গ্রামে স্কুল-কলেজের পড়ুয়া থেকে শুরু করে মুমূর্ষ রোগীদের নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এমনকি এলাকা কৃষি প্রধান, তাই কৃষকরা তাদের উৎপাদিত দ্রব্য এই রাস্তা দিয়েই শান্তাশ্রম বাজার, ইন্দাস সহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। গ্রামের মানুষ বারংবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তাদের এই একমাত্র রাস্তাটি যাতে কংক্রিটের করে দেওয়ার আবেদন নিয়ে, কিন্তু তাদের কথায় কর্ণপাত করেনি প্রশাসন, এমনই অভিযোগ। ফলত ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামের মানুষজন। 

আর এবার প্রশাসনের সাহায্যের তোয়াক্কা না করেই একজোট হয়ে গ্রামের মানুষ ঝুড়ি-কোদাল হাতে রাস্তা সারাই করতে লেগে পড়েছেন, এমনকি নিজেরা চাঁদা তুলে, ট্রাক্টর ভাড়া করে রাস্তায় বালি ফেলছেন রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের যোগ্য করে তোলার জন্য।

এবারের গ্রাম পঞ্চায়েত ভোটে এলাকায় পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি ভোট হয়নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল প্রার্থী তবে জেলা পরিষদের ভোট হয়েছে কলাগ্রাম বুথে, এগিয়ে বিজেপি। তবে কি সত্যিই রাজনীতির প্রতি হিংসায় উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত কলাগ্রামের পালপাড়া? উঠছে প্রশ্ন।

আর অন্যদিকে এলাকার উন্নয়ন নিয়ে শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী তরজা। একে অপরের বিরুদ্ধে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করতেই ব্যস্ত তারা। বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, 'মানুষ বুঝতে পেরেছে এরা কাজ করবে না, নিজেদের জন্য রাস্তায় নেমে গেছে মানুষ। নিজেরাই রাস্তা সারাই করছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় এটাই যে, গ্রামবাসীরা রাস্তা সারাই করছে, এই রাস্তার বিল করে তৃণমূল টাকা খেয়ে নেবে।

অপরদিকে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি দিব্যেন্দু ব্যানার্জি বলেন, 'রাজ্য জুড়েই উন্নয়ন চলছে, হয়তো যে এলাকাগুলোতে এখনও কাজ হয়নি, আগামী দিনে সেগুলোতেও কাজ হয়ে যাবে। সরকারের এই ধরণের কোনও মানসিকতা নেই। সারা রাজ্য জুড়েই উন্নয়ন হচ্ছে, কোথায় বিজেপি লিড পেয়েছে, কোথায় অন্য দল লিড পেয়েছে- এই মানসিকতা নিয়ে আমাদের নেত্রী কাজ করেন না।'