বৃষ্টির ঘাটতি! ক্ষতির মুখে ধান ও পাট চাষ, চিন্তায় চাষীরা - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday 27 July 2023

বৃষ্টির ঘাটতি! ক্ষতির মুখে ধান ও পাট চাষ, চিন্তায় চাষীরা


বৃষ্টির ঘাটতি! ক্ষতির মুখে ধান ও পাট চাষ, চিন্তায় চাষীরা



নিজস্ব সংবাদদাতা, দক্ষিণ দিনাজপুর, ২৬ জুলাই: কৃষি ওপর নির্ভরশীল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে জেলার কৃষিকাজ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জলের অভাবে চাষীরা যেমন ধান লাগাতে পারছেন না, তেমনই অপরদিকে জল না থাকায় পাটও পচাতে পারছেন না। সমগ্র দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় কম বেশি একই চিত্র ধরা পড়েছে। 


 জুলাই মাস ধান লাগানোর আদর্শ সময় কিন্তু বৃষ্টির অভাবে সারা জেলাতে চাষীরা ধান লাগাতে পারছেন না। কৃষি দফতর সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে। বালুঘাট ব্লকের কৃষক গুপিন মূর্মু বলেন, 'জলের এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে ধান ও পাট চাষ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বেশিরভাগ কৃষকেরা জমিতে ধান লাগাতে পারেননি এবং পাট পচানো যাচ্ছে না। যদি বৃষ্টি না হয়, তাহলে আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হব।'


বালুরঘাট ব্লকের আরেকজন কৃষক শিবু মুর্মু বলেন, 'বৃষ্টির জন্য পাট কাটতে পারিনি। কাটা হলেও কোথায় জাগ দেওয়া হবে সেটা একটা বিরাট সমস্যা। উপায় না দেখে নদীতে পাট ভিজাতে নিয়ে যাচ্ছি।' ধান চাষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'বৃষ্টির অভাবে বাধ্য হয়ে জল সেচের মাধ্যমে ধান চাষ করতে হচ্ছে কিন্তু এতে আমাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি জটিল। যদি বৃষ্টি না হয়, তাহলে আমরা ভীষণভাবে বিপদে পড়ব। 


উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক প্রফেসর জ্যোতির্ময় কারফার্মা বলেন, 'জুলাই মাসে দক্ষিণ দিনাজপুরে সাধারণত ৩৩০ মিলিলিটারের মত বৃষ্টি হয় কিন্তু এবছর জুলাই মাসে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ২৪০ মিলিলিটারের মত। অতএব বৃষ্টির ঘাটতি প্রায় ৪০ পার্সেন্টের মত। তিনি বলেন, 'জুন মাসে ২৫০ মিলিলিটারের মতো বৃষ্টি হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টি হয়েছে ১৫০ মিলিলিটার। কাজেই বৃষ্টির ঘাটতিতে ধান লাগানো ব্যাহত হচ্ছে। কৃষি দফতরের পক্ষ থেকে কৃষকদের জল সেচের মাধ্যমে ধান লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।'



তিনি বলেন, জেলায় যেহেতু বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে সেজন্য জলসেচ ছাড়া কোনও উপায় নেই। দক্ষিণ দিনাজপুরে ১ লক্ষ ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে প্রতি বছর ধান চাষ হয়। এ বছরে ৩০ শতাংশের মতো জমিতে ধান লাগানো এখনও পর্যন্ত সম্ভব হয়েছে।' তিনি জানান, হয়তো পরবর্তীতে বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিক হলে বাকি জমিতে ধান লাগানো সম্ভব হবে।


পাট ভেজানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এটা একটা বড় সমস্যা। এই সমস্যা থেকে বের হতে গেলে জলসেচ করে জল মজুত করতে হবে। সেখানে পাট ভিজিয়ে তন্তু বের করতে হবে।' তিনি বলেন, পরিস্থিতি অস্বাভাবিক। পূর্বে দক্ষিণ দিনাজপুরে এরকম বৃষ্টির ঘাটতি দেখা যায়নি। হতে পারে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্য উদ্ভূত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির সমবন্টন না হলে কৃষি ক্ষেত্রে তার প্রভাব নেতিবাচক হবে। এমনকি দেখা যাচ্ছে পুকুরে মাছ চাষের ক্ষেত্রেও জলের অভাবে পাম্পের সাহায্যে জল মজুত করে সেখানে মাছ চাষ হচ্ছে।'


তিনি আশা প্রকাশ করেন হয়তো জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে বৃষ্টি স্বাভাবিক হলে বাকি জমিগুলিতে ধান লাগানো যাবে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad