সহিংসতার মধ্যে ভোটকেন্দ্রে ভোটকর্মীরা! ৭৪ হাজার আসনে ভোটগ্রহণ
নিজস্ব প্রতিবেদন, ০৭ জুলাই, কলকাতা : আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা। এর পর রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হবে। রাজ্যের সমস্ত জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটকর্মীরা পৌঁছেছেন। ব্যালট বাক্স নিয়ে একে একে ভোট কেন্দ্রে পৌঁছে যাচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত জেলার সব জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছাতে পারেনি। ফলে ভোট কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন এবং সহিংসতা ও অস্থিরতা নিয়ে শঙ্কিত।
শনিবার, রাজ্য জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৭৪০০০টি আসনে ভোট হবে। প্রায় ৫.৬৭ কোটি ভোটার এতে ভোট দেওয়ার যোগ্য। লোকসভা নির্বাচনের আগে পঞ্চায়েত নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
অনেক ক্ষেত্রে ভোটকর্মীরা রাজ্য পুলিশের সঙ্গে ভোট কেন্দ্রে যাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রেই ভোটকেন্দ্রে সশস্ত্র নারী পুলিশ সদস্যদের পাঠানো হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন স্থানে কাজ করতে আসা ভোটকর্মীরা বেশ আতঙ্কে রয়েছেন। বোমা বিস্ফোরণ ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় খুনের ঘটনাও ঘটছে।
ভোট কর্মী ও তাদের পরিবার সহিংসতায় আতঙ্কিত
তিনি বলেন, "সংবাদ মাধ্যমে অশান্তির খবর দেখে ভোটগ্রহণ কর্মীদের পরিবার ইতিমধ্যেই উদ্বিগ্ন। সে কারণেই এখন কোনও না কোনওভাবে ভোট মিটিয়ে বাড়ি ফিরতে চান তারা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভোটগ্রহণ কর্মীদের মুখ থেকে এবং সেইসাথে উত্তর ২৫ পরগনা জেলার অশোকনগর বয়েজ সেকেন্ডারি স্কুল ডিসিআরসি-তে যারা এসেছিলেন তাদের মুখ থেকে এই ভয়ের কথা শোনা গিয়েছিল।"
বিভিন্ন ডিসিআরসি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ কর্মীদের খাবারের ব্যবস্থা দেখা গেছে। সেখানে ভোটগ্রহণ কর্মীরা নিজ নিজ গন্তব্যে যাচ্ছেন। অনেক পোলিং কর্মীও স্লিপ প্রস্তুত করা থেকে ভোট দেওয়ার বিভিন্ন সূক্ষ্ম কাজ করছেন।
তবে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী না আসায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু এবার কি ২০১৮ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হবে? তবে রাজ্যের অনেক স্পর্শকাতর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে চারজন কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্মী মোতায়েন করা হবে।
এদিকে, সকাল থেকেই বসিরহাট ডিসিআরসি গণনা হলের ভোটগ্রহণ আধিকারিক ও ভোটকর্মীরা ব্যালট বাক্স নিয়ে সীমান্ত থেকে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকার ভোটকেন্দ্রে পৌঁছতে শুরু করেছেন। এদিকে বাদুড়িয়ায় নিরাপত্তার দাবী তুলেছেন এক ভোটকর্মী, অন্যদিকে ঘোড়া থেকে ব্যালট বাক্স নিয়ে দার্জিলিংয়ে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছেছেন ভোটকর্মীরা।
তিনি বলেন, “সশস্ত্র পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আমরা এখনও পাইনি। নিরাপত্তাহীনতার সাথে লড়াই করছে। নিরাপত্তা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা ভোটকেন্দ্রে যাব না। বাদুড়িয়া চয়নিকা হলে ডিসিআরসি-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ।"
এদিকে বর্ষাকালে বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে সাপের প্রকোপ বেড়ে যায়। এবার ভোটগ্রহণ কর্মীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ভোটগ্রহণের অন্যান্য উপকরণের সঙ্গে কার্বলিক অ্যাসিডও সরবরাহ করা হচ্ছে।
কোতুলপুর ডিসিআরসি কেন্দ্রে পৌঁছে দেখা যায়, ইতিমধ্যেই নির্ধারিত ভোটকেন্দ্রের দিকে যেতে শুরু করেছেন ভোটকর্মীরা। ভোটকর্মী কেদার নাথ দে বলেন, 'আমি ২০১৪ সাল থেকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করছি। এই প্রথম কার্বলিক অ্যাসিড সরবরাহ করা হয়েছে।'
No comments:
Post a Comment