ফের হোস্টেল থেকে ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, র্যাগিংয়ের পর খুনের সন্দেহ
নিজস্ব প্রতিবেদন, ২৫ আগস্ট, কলকাতা : যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের মৃত্যুর পর এখনও তোলপাড় থামেনি। এরইমধ্যে বৃহস্পতিবার বিকেলে দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানার অন্তর্গত বিসি রায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের হোস্টেলে বি.টেক কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ডিজাইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সৌরভ কুমারের ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়। মৃত্যুর পর নিহত ছাত্রের বাবা কলেজের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, তার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে কেউ মেরে ফেলেছে। তিনি তার ছেলের মৃত্যুর তদন্ত দাবী করে দোষীদের শাস্তির দাবী জানান।
নিহত ছাত্রর বাবার অভিযোগ, দেহ সংগ্রহ করতে দুর্গাপুরে আসার আগে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে মৃত ছেলের মুখ দেখতে দেয়নি। দুর্গাপুর বিভাগীয় হাসপাতালে এ অভিযোগ করেন নিহত ছাত্রের বাবা।
পুলিশ জানায়, দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানা এলাকার অন্তর্গত বিসি রায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের হোস্টেলে বি.টেক কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ডিজাইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সৌরভ কুমারের মৃতদেহ ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায়।
কলেজের সত্যেন বোস বয়েজ হোস্টেলের ৪র্থ তলায় ৩১৬ নম্বর কক্ষের দরজা খোলা হলে ওই কক্ষের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ছাত্রের মরদেহ পাওয়া যায়। ঝুলন্ত ছাত্র সৌরভকে চিনতে পেরেছে অন্য শিক্ষার্থীরা।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২২ আগস্ট বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিলেন সৌরভ কুমার। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা পরের দিনই সৌরভের বাড়িতে খবর পাঠিয়েছে। খবর পেয়ে সৌরভের বাবা সুরিন্দর রায় ও তার আত্মীয়রা দুর্গাপুরে আসেন।
সৌরভের কোনও খোঁজ না পেয়ে ২৫ আগস্ট নিউটাউনশিপ থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্রের মৃত্যুর কথা জানায়।
তবে সৌরভের বাবার অভিযোগ, দুর্গাপুরে থাকা সত্ত্বেও কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেনি। সৌরভের বাবা সুরিন্দর রায়ের অভিযোগ, তার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারেনা।
একই বছর, সৌরভ কলেজে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ডিজাইনের দ্বিতীয় বর্ষে ভর্তি হয়েছিল। কলেজের আধিকারিকরা বলছেন, তিনি কাজের কথা বলতেন।
কিন্তু হোস্টেলের তৃতীয় তলায় তার নির্ধারিত কক্ষ থেকে চতুর্থ তলার খালি তালাবদ্ধ ঘরে কীভাবে তিনি এলেন? এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। একইভাবে দেহ পাওয়া যাওয়ার সময় ঘরটি বাইরে থেকে তালা দেওয়া থাকলে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দিয়েছে কে?
কলেজ সূত্রে খবর, চতুর্থ তলার প্রতিটি কক্ষই তালাবদ্ধ। চাবিকাঠি রয়ে গেছে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে সুষ্ঠু তদন্তের দাবী জানিয়েছেন সৌরভের বাবা ও পরিবার। শুক্রবার মৃতদেহ দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গ থেকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
No comments:
Post a Comment