বিদ্যালয়ে শিক্ষকের অভাবে পড়াশোনায় ব্যাঘাত! চরম সমস্যায় পড়ুয়ারা
নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁকুড়া, ১৯ আগস্ট: একজন মাত্র স্থায়ী শিক্ষিকা দিয়ে চলছে স্কুল, চরম সমস্যায় ছাত্রীরা উদাসীন প্রশাসন , দ্রুত শিক্ষিকা নিয়োগ করা হোক শুক্রবার এমনই দাবী তুললেন অভিভাবক এবং স্কুল পড়ুয়ারা। ঘটনা শান্তাশ্রম গার্লস জুনিয়ার হাইস্কুলের।
এ রাজ্যে একের পর এক শিক্ষাক্ষেত্রে যে দুর্নীতি সামনে এসেছে তাতে চক্ষু চড়কগাছ রাজ্যবাসীর। ইতিমধ্যেই শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির দায়ে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী সহ শিক্ষা দপ্তরের একাধিক আধিকারিককে জেলে যেতে হয়েছে । শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সদর্থক ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে রাজ্যের ব্যর্থতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলগুলি ।
আবারও শিক্ষা ক্ষেত্রে উদাসীনতার ছবি উঠে এল সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়। বাঁকুড়ার ইন্দাস ব্লকের শান্তাশ্রম গার্লস জুনিয়ার হাইস্কুল, এই স্কুলে মোট ৩২০ জন ছাত্রী রয়েছে আর স্কুলে রয়েছে একজন মাত্র স্থায়ী শিক্ষিকা ও একজন অতিথি শিক্ষক এবং তাদেরই গোটা বিদ্যালয় সামলাতে হচ্ছে । পঞ্চম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রীদের সঠিক পঠন-পাঠন না হওয়াতে চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে । বিদ্যালয়ের এই চরম সমস্যা দেখে স্থানীয় শিক্ষিত কয়েকজন যুবতী মাঝেমধ্যে বিদ্যালয়ে এসে ছাত্রীদের শিক্ষা প্রদান করেন।
এই বিদ্যালয়ে মোট তিনজন শিক্ষিকা ছিলেন ২০২১ সালে দুজন শিক্ষিকা ট্রান্সফার নিয়ে অন্যত্র চলে যান, ফলে এই মুহূর্তে বিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের একজন স্থায়ী শিক্ষিকা রয়েছেন এবং অপর একজন অতিথি শিক্ষক। স্বাভাবিকভাবেই সমস্ত বিষয়ে তাদের পক্ষে ভালোভাবে ক্লাস নেওয়া সম্ভব নয়। ফলস্বরূপ শিক্ষার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে বিদ্যালয়ে আসা ছাত্রীদের। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস এই সমস্যার কথা জেলা শিক্ষা দপ্তরকে জানিয়েও সমাধান হয়নি বলেই অভিযোগ।
আর এখানেই শিক্ষা দপ্তরের সদর্থক ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিদ্যালয়ের অফিসিয়ালি কাজ, মিড ডে মিল সহ অন্যান্য সমস্ত বিষয়ের ওপর নজর রেখে কীভাবে সঠিক সময়ে ক্লাস নেওয়া সম্ভব বা আদৌ সম্ভব হয় কিনা সেটাই প্রশ্নচিহ্নের মুখে। এখন কবে এই সমস্যার সমাধান হয় সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন বিদ্যালয়ের পড়ুয়া সহ অভিভাবকরা ।
শ্যামদাস পাল ও প্রদ্যুৎ পাল নামের অভিভাবকরা জানান , এই পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ে সিলেবাস শেষ হচ্ছে না। ফলে পরীক্ষার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পড়ুয়াদের। তাই দ্রুত সরকার এই সমস্যার সমাধান করুক ।
স্নেহা পাল নামে এক ছাত্রীর কথায়, 'প্রতিদিন একটি থেকে দুটি ক্লাস হয় বাকি সময়টা বিদ্যালয়ে বসেই কাটাতে হয়। সিলেবাস শেষ হয় না, আমরা কিছু বুঝতে পারি না। ফলে পরীক্ষায় লিখতে সমস্যা হয়। তাই দ্রুত বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা নিয়োগ করা হলে ভালো হয়।'
শান্তাশ্রম গার্লস জুনিয়ার হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা শতাব্দী রায় বলেন, 'বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা নেই, ক্লাস বন্ধ থাকে। স্থানীয় শিক্ষিত যুবতীদের দিয়ে মাঝে মাঝে বিদ্যালয়ে ক্লাস করাতে হয়। এমনকি আমার বিদ্যালয়ের গ্রুপ ডির কর্মীকে পর্যন্ত ক্লাস নিতে হয়। এই সমস্যার কথা বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে কিন্তু এখনও সেই সমস্যার সমাধান হয়নি তাই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হলে ভালো হয়।'
বাঁকুড়া জেলার ডিআই সেকেন্ডারি পীযূষ কান্তি বেরা জানান, এই বিদ্যালয়ে তিনটি অনুমোদিত পদ রয়েছে। জুনিয়র হাই স্কুলে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে দ্রুত এই সমস্যা মিটে যাবে বলে জানান তিনি।
No comments:
Post a Comment