সরকারি প্রকল্পের টাকা ফেরত চেয়ে নোটিশ বিডিওর! বিপাকে ৭০০ মহিলা
নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ৩১ আগস্ট: বিধবাভাতা, বার্দ্ধক্যভাতা, মানবিকভাতা সহ রাজ্যের একাধিক প্রকল্প গ্রামের দুঃস্থ মহিলাদের বেঁচে থাকার একমাত্র ভরসা। সেই ভাতার টাকা ফেরত চাওয়ার অভিযোগ। নোটিশ দিয়ে সেই টাকা ফেরত চেয়েছেন মালদা জেলার কালিয়াচক ১নং ব্লকের বিডিও। একজন বা দুই নয়, একসঙ্গে ৭০০ জন দুঃস্থ মহিলারা হাতে এমনই চিঠি পেলেন। আর তাতেই চক্ষুচড়ক গাছ তাদের।
সরকারি নিয়ম বর্হিভূতভাবে সরকারি প্রকল্পের টাকা দুঃস্থ মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকে গেছে বলে ব্লক প্রশাসনিক আধিকারিক দফতর থেকে জানানো হয়েছে। নোটিশে জানানো হয়েছে, সাতদিনের মধ্যে টাকা ফেরত না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমন চিঠি হাতে পেয়ে দুঃশ্চিন্তার প্রহর গুনছেন ৭০-৭৫বছরের বৃদ্ধা বিধবা মহিলারা। কোনও বৃদ্ধা দুঃস্থ মহিলাকে ১৯হাজার, আবার কাউকে ২৫ হাজার টাকা ফেরৎ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ব্লক প্রশাসনিক আধিকারিক থেকে জেলাশাসক মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তবে, প্রশাসনিক দফতর সূত্রে জানা গেছে, লকডাউনের সময় গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি থেকে ঢালাও নাম পাঠানো হয়েছিল। নথিপত্র, বয়স-সহ কোনও তথ্য যাচাই করা হয়নি। একই উপভোক্তার নামে বিধবা ভাতা, বার্ধক্যভাতা, মানবিক ভাতা দেওয়া হয়েছে, যা সরকারি আইন মেনে করা হয়নি। এতে গোটা ব্লকে সামাজিক ভাতা প্রকল্পের প্রায় দু'কোটি টাকা গড়মিল হয়েছে। এখন সেই টাকা ফেরত পেতে মরিয়া চেষ্টা শুরু করেছেন কালিয়াচকের বিডিও।
এই ব্লকের মোজমপুর, গয়েশবাড়ি, যদুপুর, সিলামপুর, আলিপুর, সুজাপুর, জালুয়াবাধাল, জালালপুর-সহ ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৭০০ জন উপভোক্তার বাড়িতে নোটিশ পাঠিয়ে টাকা ফেরত চেয়েছেন বিডিও।
মঞ্জুলা বেওয়া, মানোয়ারা বিবি, শানোয়ার বেওয়াদে্য কথায়, 'এই টাকা দিয়ে তাদের জীবনের নানা ব্যাধির চিকিৎসা করতাম, ঔষধ কিনতাম। এখন শরীরে জোর নেই, কাজ করতে পারি না। কি করে এই টাকা ফেরত দেব জানি না। আমরা অতিরিক্ত টাকা পাইনি। তাই দুঃশ্চিন্তা ও আতঙ্কে রয়েছি। এই টাকা ফেরত দিতে পারব না, সামর্থ্য নেই।'
কালিয়াচক ১নং ব্লকের গয়েশবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের স্বামী কামাল হোসেন বলেন, 'এমন চিঠির ফলে গ্রামের দুঃস্থ মহিলারা দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন। তাদের সামর্থ্য নেই টাকা ফেরত দেওয়ার। সম্প্রতি পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন হয়েছে। ফলে তাদের কাছেও তথ্য সঠিক নেই। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের দৃষ্টি আর্কষণ করার উদ্যোগ নেব।'
No comments:
Post a Comment