প্রতিবেশীর গোবর গ্যাসের ট্যাঙ্কে উদ্ধার বধূর নলিকাটা দেহ! গ্রেফতার শ্বশুর-শাশুড়ি, নজরে স্বামীও - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday 19 August 2023

প্রতিবেশীর গোবর গ্যাসের ট্যাঙ্কে উদ্ধার বধূর নলিকাটা দেহ! গ্রেফতার শ্বশুর-শাশুড়ি, নজরে স্বামীও


প্রতিবেশীর গোবর গ্যাসের ট্যাঙ্কে উদ্ধার বধূর নলিকাটা দেহ! গ্রেফতার শ্বশুর-শাশুড়ি, নজরে স্বামীও

 



নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁকুড়া, ১৯ আগস্ট: নিজের ঘরেই পুত্রবধূর গলার নলি কেটে খুন এবং প্রমাণ লোপাট করতে প্রতিবেশীর গোবর গ্যাসের ট্যাঙ্কে দেহ ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে। বধূর নাম মোনালিসা ঘটক। ঘটনায় প্রত্যক্ষ যোগসাজসের অভিযোগ উঠেছে বধূর স্বামীর বিরুদ্ধেও। নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার শালতোড়া থানার ঢেকিয়া গ্রামে। পুলিশ ওই গোবর গ্যাসের ট্যাঙ্ক থেকে গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি শ্বশুর শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে। আটক করা হয়েছে স্বামীকেও। 


ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। ওই দিন আচমকাই শালতোড়া থানার ঢেকিয়া গ্রামে নিজের শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান মোনালিসা ঘটক নামের গৃহবধূ। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর শুক্রবার মোনালিসার স্বামী কাজু ঘটক মোনালিসার বাবা ও মা কে সঙ্গে নিয়ে শালতোড়া থানায় হাজির হয়ে অভিযোগ জানান তাঁর স্ত্রীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। স্ত্রী নিখোঁজ হওয়ার সাথে সাথে নিজের বাবা সুজিত ঘটক ও মা ইতু ঘটকও নিখোঁজ হয়ে গেছে বলে পুলিশকে জানায় কাজু। 


সেই সময়ই মোনালিসার বাপের বাড়ির লোকজন পুলিশকে জানায় পণের দাবীতে দীর্ঘদিন ধরেই শ্বশুর-শাশুড়ি মেয়ের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছিল। তার সাথে এই নিখোঁজের সম্পর্ক থাকতে পারে এমন তথ্যও পুলিশের হাতে তুলে দেন মোনালিসার বাবা-মা। ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথমেই মোনালিসার শ্বশুর-শাশুড়ির খোঁজ শুরু করে পুলিশ। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় মোনালিসার স্বামী কাজু ঘটককেও। শেষ পর্যন্ত বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ জানতে পারে বধূর শ্বশুর-শাশুড়ি বিষ্ণুপুর থানার হিংজুড়ি গ্রামে তাঁদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করে আছেন। সেখানে হানা দিয়ে নিখোঁজ বধূর শ্বশুর-শাশুড়িকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে নিখোঁজ বধূর শ্বশুর-শাশুড়ি ভেঙে পড়ে। 


এরপরই পুলিশ ঢেকিয়া গ্রামে হানা দিয়ে প্রতিবেশীর গোবর গ্যাসের একটি ট্যাঙ্ক থেকে দেহ উদ্ধার করে। আজ‌ শনিবার দেহটি ময়না তদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পাঠানোর পাশাপাশি ধৃত শ্বশুর সুজিত ঘটক ও শাশুড়ি ইতু ঘটককে বাঁকুড়া জেলা আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃতা মোনালিসা আজ থেকে বছর ছয়েক আগে শালতোড়ার বিশজোড় গ্রামের এক যুবককে ভালোবেসে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী ঢেকিয়া গ্রামের কাজু ঘটকের সাথে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে তাঁকে বিয়ে করে ঢেকিয়া গ্রামে কাজু ঘটকের বাড়িতেই থাকতে শুরু করেন। খুনের উদ্দেশ্য জানার চেষ্টা চালানোর পাশাপাশি এই খুনের পিছনে বধূর স্বামীর কী ভূমিকা ছিল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। 


মৃতার বাপের বাড়ির অভিযোগ, স্বামী কাজু ঘটকের প্রত্যক্ষ মদত ও যোগসাজসেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে শ্বশুর-শাশুড়ি। গোটা ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবী জানিয়েছে মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad