চীনের 'ঘৃন্য' রূপ! বেইজিংকে বাঁচাতে ৬ লক্ষ মানুষকে ডুবিয়ে দিচ্ছে 'ড্রাগন'
প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ০৫ আগস্ট: চীন এমন একটি দেশ, যে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তার নাগরিকদের বলি দিতেও দ্বিধা করে না। এরকম অনেক উদাহরণ আছে, যেখানে তার নাগরিকদের উপর অত্যাচার করেছে চীন। তিয়ানানমেন চক হত্যাকাণ্ডের কথা সবার মনে আছে, যখন চীন নিরস্ত্র মানুষের ওপর গুলি চালায়। আবারও ঠিক একই কাজ করা হচ্ছে, কিন্তু এবার বুলেট নয়, জল দিয়ে।
রাজধানী বেইজিংকে বাঁচাতে ৬ লাখের বেশি মানুষকে জলে ডোবানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি নিজেই এর ইঙ্গিত দিয়েছে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একজন আধিকারিক বলেছেন যে, বেইজিংকে বন্যার হাত থেকে বাঁচাতে ঝুওঝুও শহর সহ অন্যান্য বন্যাকবলিত এলাকাগুলিকে রাজধানীর জন্য 'খাদ' হিসাবে ব্যবহার করা উচিৎ, যেখানে জল ভর্তি করা যায়।
এই 'খাদ' সম্পর্কে যিনি বিবৃতি দিয়েছেন, তিনি হলেন হেবেই প্রদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সেক্রেটারি নী ইউইফেং। হেবেই প্রদেশের তিন দিকে রাজধানী বেইজিং- এর সীমান্ত রয়েছে। এই প্রদেশের ঝুওঝোর মতো অনেক শহর বেইজিং সংলগ্ন। নী বলেন, "বেইজিংকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে 'ফ্লাড স্টোরেজ' এবং 'ডিটেনশন এরিয়া' ব্যবহার করা হবে, যা খাদের মতো হবে এবং সেখানে জল ছেড়ে দেওয়া হবে।"
এই ধরনের স্থানগুলিকে 'ফ্লাড ডিটেনশন বেসিন' বলা হয়, যেগুলি বন্যার জল সঞ্চয় করতে ব্যবহৃত হয়। এখানে ধীরে ধীরে জল ছেড়ে দেওয়া হয়, যাতে একটি শহরকে ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচানো যায়। ঝুওঝুও শহর সহ আশেপাশের অনেক শহরকে 'ফ্লাড ডিটেনশন বেসিন' বানানোর প্রস্তুতি চলছে, যাতে রাজধানী বেইজিং এবং এর নিকটবর্তী বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলিকে জলমগ্ন হওয়া থেকে রক্ষা করা যায়।
সম্প্রতি ডক্সুরি ঝড়ের কারণে উত্তর-পূর্ব চীনে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হাজার হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং লাখ লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হয়েছে। ঝুওঝুওর জনসংখ্যা ছয় লাখ এবং এর আশেপাশের এলাকায়ও লাখ লাখ মানুষ বাস করে। টানা বর্ষণে এখানে বন্যার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার কারণে প্রায় দেড় লাখ মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যার কারণে অনেক সেতু ভেঙে পড়েছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট জলে ভরে গেছে। হেবেই প্রদেশে ১২ লক্ষ মানুষকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। যে এলাকাগুলিকে 'ফ্লাড স্টোরেজ' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সেখান থেকে ৮.৫ লক্ষ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। চীনে রাজধানী ছাড়াও তিয়ানজিনের মতো বড় শহরকে বন্যার হাত থেকে বাঁচাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে এবং ঝুওঝুওর মতো ছোট শহরে জল ছাড়া হচ্ছে।
চীনের জলসম্পদ মন্ত্রী লি গুইং বলেছেন, বেইজিংয়ের ড্যাক্সিং বিমানবন্দর ও শংইয়াং শহরকে বাঁচাতে কাজ করা উচিৎ। শংইয়ং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের স্বপ্নের প্রকল্প। এই শহরটি একটি নতুন অর্থনৈতিক হাব হিসেবে গড়ে উঠছে। বেইজিং-এর ১৪০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে, যার কারণে বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
সরকারের পরিকল্পনাকে সমর্থন করার জন্য জনগণকে অনুরোধ করা হচ্ছে। চীনের মুখপত্র গ্লোবাল টাইমসের প্রাক্তন সম্পাদক হু শিজিন চীনের ট্যুইটার নামে পরিচিত একটি প্ল্যাটফর্ম ওয়েইবোতে লিখেছেন, 'বেইজিং সংলগ্ন এলাকায় জল ছাড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে রাজধানী নিরাপদ করা যায়। এটা হলে দেশ চালানো সহজ হবে। জনগণের উচিৎ সরকারের পরিকল্পনাকে সমর্থন করা।'
No comments:
Post a Comment