বিজেপির দালাল! রাজ্যপাল বোসকে বেনজির আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রী মমতার
ঝাড়গ্ৰাড়, ০৯ আগস্ট: রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত যেন আরও চরমে। এতদিন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে বিজেপির দালাল বলে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের ছোট-বড় নেতারা। এবারে খোদ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে বিজেপির দালাল বলে আক্রমণ করলেন। বুধবার ঝাড়গ্রামে আদিবাসী দিবসের মঞ্চ থেকে রাজ্যপালকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বেশ কিছুদিন ধরেই রাজ্যপালের সঙ্গে উচ্চশিক্ষার প্রশ্নে সংঘাত চলছে রাজ্য সরকারের। রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোন পরামর্শ ছাড়াই একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পছন্দের লোককে উপাচার্য পদে বসাচ্ছেন রাজ্যপাল। এই নিয়েও একাধিক অভিযোগ রয়েছে রাজ্যের। পাশাপাশি রাজ্যে সাম্প্রতিক দুর্নীতি ও হিংসা নিয়েও রাজ্যপাল উদ্বেগ প্রকাশ করেন বারবার। মঙ্গলবারেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে উদ্ধৃত করে রাজ্যপাল বলেন, চিত্ত যেথা ভয় শূণ্য, উচ্চ সেথা শির। কিন্তু এই বাংলা সেই বাংলা নয় বাংলার অবস্থা দেখে মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে লজ্জায়।' এর পাল্টা জবাব দিতে মোটেই দেরি করেননি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, 'দেখবেন মাথা বেশি হেঁট করবেন না, সানগ্লাস চোখ থেকে খুলে যাবে।'
এদিন ঝাড়গ্ৰামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, 'আমাদের গভর্নর মহাশয় এখন কালো চশমা পরে জ্ঞান দিয়ে বেড়াচ্ছেন। উপাচার্য পদে যাকে-তাকে বসিয়ে দিচ্ছেন, আমরা নাম পাঠালেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। কেরলের লোক এনে নিজের ইচ্ছে মত বসিয়ে দিচ্ছেন। এমন একজনকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করেছেন, যিনি কেরলের আইপিএস অফিসার ছিলেন, যার শিক্ষার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই।'
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এখানে ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছে, কিন্তু না আছে ভিসি না রেজিস্ট্রার। আমরা নাম পাঠালেও উনি হয়তো বিজেপির লোককে নিজের পছন্দ মতো বসিয়ে দেবেন। মুখ্যসচিবকে আমি বলছি, আজই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি ও রেজিস্ট্রার করে দেব।'
তোপ দেগে মমতা বলেন, আমি ইউনিভার্সিটি করে দিচ্ছি আর উনি বিজেপির দালালি করে সবকিছু আটকে দিচ্ছেন, আমরা এটা মানব না। সৎসাহস যদি থাকে, তাহলে আচার্য বিলে এখনই সই করুন রাজ্যপাল।'
এখানেই থামেননি মমতা। তিনি বলেন, 'ছাত্র-ছাত্রীদের ডেকে রাজ্যপাল বলছেন, দুর্নীতি কাকে বলে? দাঙ্গা কাকে বলে?- এটা রাজ্যপালের কাজ! রাজ্যপাল পদটি সংবিধানিক। তাঁর কাজ সংবিধানের সীমাবদ্ধ করা আছে। গায়ের জোরে রাজ্যটাকে কিনতে পারেন না তিনি। আপনি দল তৈরি করে নির্বাচনে জিতে আসুন না হলে বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়ান, তারপর যদি জিততে পারেন। তবে, কোনও দিন তা হবে না। কারণ বিজেপি দলটাই উঠে যাবে ততদিনে।'
No comments:
Post a Comment