বিজেপি সাংসদকে গঙ্গায় ডোবানোর হুঁশিয়ারি তৃণমূল বিধায়কের - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday 9 August 2023

বিজেপি সাংসদকে গঙ্গায় ডোবানোর হুঁশিয়ারি তৃণমূল বিধায়কের

 


বিজেপি সাংসদকে গঙ্গায় ডোবানোর হুঁশিয়ারি তৃণমূল বিধায়কের 




নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ০৯ আগস্ট: বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মকে গঙ্গায় ডোবানোর হুঁশিয়ারি রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়ের। মঙ্গলবার বিকেলে রতুয়ার মহানন্দটোলা এলাকায় নদী ভাঙ্গন পরিদর্শনে গিয়ে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুকে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। পাল্টা তৃণমূল বিধায়ককেই গঙ্গায় ফেলতে হবে, বলে আক্রমণ বিজেপি সাংসদের। 

      

উত্তর ভারতে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে ক্রমেই বাড়ছে মালদায় গঙ্গা নদীর জল। আর জল বাড়ার সাথে সাথে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গঙ্গায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে বিঘার পর বিঘা জমি। আতঙ্কে প্রহর গুনছেন এলাকার বাসিন্দারা। এদিন ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। বিধায়ককে কাছে পেয়ে হাতজোড় করে, পা ধরে নিজেদের শেষ সম্বল টুকু বাঁচানোর আর্জি জানান এলাকার মহিলারা। আর এর পরই মেজাজ হারান বিধায়ক। 


গঙ্গা ভাঙনের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, 'বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং বাংলা সরকার মিলিতভাবে কেন্দ্রের কাছে ভাঙন প্রতিরোধের জন্য আর্জি জানিয়েছে। ভোটের সময় খগেন মুর্মু রতুয়া এসে বলে গেছিলেন তিনি বাঁধ বাঁধাবেন। কিন্তু তার দেখা নেই। তাই তিনি এলে তাকেই গঙ্গায় ডোবাবেন।'      


এই বিষয়ে সময় মুখোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'রাজনৈতিকভাবে বিজেপি বাংলাকে ভাগ করার চেষ্টা করছে। এর পাশাপাশি গঙ্গা দিয়ে বাংলা থেকে উত্তরবঙ্গকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে। রাজ্যের সীমিত ক্ষমতা দিয়ে এই কাজ করা সম্ভব নয়। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের তরফে স্কিম পাঠানো হয়েছে। কিন্তু যেভাবে কেন্দ্র সরকার ১০০ দিনের টাকা, আবাস যোজনার টাকা দিচ্ছে না, সেই ভাবেই ভাঙন রোধের টাকাও দেবে না। কেন্দ্র সরকারের বিমাতৃসুলভ আচরণের জন্য আমরা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চলেছি। এরপর ফারাক্কা ব্যারেজ এবং ন্যাশনাল হাইওয়ে আমরা অবরোধ করব।'


সংসদকে জলে নিক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'উনি এখানে আসবেন না। এলে কাটাহা দিয়ারার মানুষ তাকে জলে নিক্ষেপ করবে। কারণ মানুষ জলে যাবেন আর উনি উপরে থাকবেন সেটা হতে দেবে না।'         


এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিজেপিও। মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, আমি বারবার সংসদে এই বিষয়টি তুলেছি। চিঠি লিখেছি। উত্তরে আমাকে জানানো হয়েছে রাজ্য সরকার পরিকল্পনা করে স্কিম কেন্দ্রের কাছে পাঠাবে। কেন্দ্র এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে, আর্থিক সাহায্যও দেবে। এই বিষয়গুলি রাজ্য সরকারকে আমরা জানিয়েছি কিন্তু এখনও পর্যন্ত রাজ্যের তরফে কোন উত্তর দেওয়া হয়নি। 


বিধায়কের জলে নিক্ষেপের হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমি চ্যালেঞ্জ করছি সমর মুখার্জীকে, গঙ্গার জলে যদি ফেলতে হয় সমর মুখার্জীকে ফেলতে হবে, তৃণমূলকে ফেলতে হবে, রাজ্য সরকারকে ফেলতে হবে। কারণ এর জন্য তারাই দায়ী।'                          


নদী ভাঙনের এই সমস্যা ফি বছর আসে। নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায় চাষের জমি, ঘরবাড়ি। ভাঙন রোধের দায় নিয়ে চলে রাজনৈতিক চাপানোতর। এবারেও তার অন্যথা হল না। আর এই রাজনৈতিক চাপানোতরের মাঝে পড়ে কার্যত অসহায় এলাকার সাধারণ মানুষ। ভিটেমাটি বাঁচানোর জন্য কাতর আর্জি তাদের। 


সুলতা মণ্ডল নামে এক গ্রামবাসী বলেন, 'ঋণ নিয়ে বাড়িঘর তৈরি করেছি। এখন আর জমি জায়গা বাঁচানোর কথা বলি না, কারণ জমি জায়গা সব গঙ্গা গিলে খেয়েছে। বাড়িটুকু আছে ওইটুকুই বাঁচানোর আর্জি জানাচ্ছি।' গ্রামের অপর এক বাসিন্দা দীনেশ মণ্ডল বলেন, 'এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বাড়ি হারা হব। ভাঙন রোধের জন্য কোনও কাজ হচ্ছে না। এইরকম ভাঙন চললে একের পর এক গ্রাম গঙ্গায় তলিয়ে যাবে।'

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad