পণের দাবী! অন্তঃসত্ত্বা বধূকে জীবন্ত পুড়িয়ে খুন
নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ০৮ আগস্ট: পণের জন্য তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা বধূকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। নির্মম এই ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের পুখুরিয়া থানার কুমাগঞ্জের আজিমগঞ্জ গ্রামের। প্রায় এক সপ্তাহ চিকিত্সাধীন থাকার পর সোমবার মালদা মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয়েছে ওই অন্তঃসত্ত্বার। মৃতার বাপের বাড়ির তরফে পুখুরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অন্য দিকে, ঘটনার পর থেকেই পলাতক মৃতার স্বামী এবং পরিবারের অন্যান্য লোকজন।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার নাম প্রিয়াঙ্কা রবিদাস, বয়স ২৩ বছর। তাঁর স্বামী আকালু রবিদাস পেশায় একজন শ্রমিক। পুখুরিয়া থানার আজিমগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা তাঁরা। দু'জনের বিয়ে হয়েছিল তিন বছর আগে। প্রিয়াঙ্কার বাপের বাড়ির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই ৫ লক্ষ টাকা পণের দাবীতে তাঁদের মেয়ের ওপর অত্যাচার করত শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। প্রিয়াঙ্কা মা হতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাতেও তার ওপর অত্যাচারের মাত্রা কমেনি। ওই অবস্থাতেও তাঁকে দিনের পর দিন শারীরিক এবং মানসিক ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে।
মৃতের বাবা রাজকুমার রবিদাস বলেন, 'টাকা দাবী করে আমার মেয়েকে নির্যাতন করত। তারা আমার মেয়েকে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। আমার মেয়ে প্রিয়াঙ্কা রবিদাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এখন চাই আমার মেয়ে প্রিয়াঙ্কা যেন ন্যায় পায়।'
অভিযোগ, গত ১ আগস্ট গভীর রাতে প্রিয়াঙ্কার ওপর ভয়ানক অত্যাচার করেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এমনকি মারধরের পর তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বধূর চিত্কারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে, সেখানেই এদিন মৃত্যু হয় তাঁর।
এ নিয়ে মালদহ জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, ''ঘটনার অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।'' তিনি বলেন, 'পুলিশ স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। তার পরিবারের লোকজনদেরঝ জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, যাতে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা যায়।'
অন্যদিকে, মালদায় এই ঘটনার পর যৌতুক হেনস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সমাজে আধুনিকতা ও উন্নয়নের পরও যৌতুকের দাবীতে খুন যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে সমাজের মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন আজও হয়নি।
No comments:
Post a Comment