মণিপুরে শান্তির আবেদন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বার্তা! স্বাধীনতা দিবসে আর কী বললেন প্রধানমন্ত্রী মোদী
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ১৫ আগস্ট: স্বাধীনতা দিবসের ৭৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ১৫ই আগস্ট লাল কেল্লায় তেরঙ্গা উত্তোলন করেন। এই উপলক্ষে, লাল কেল্লার প্রাচীর থেকে দেশবাসীকে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদ ও যোদ্ধাদের অভিবাদন জানান। তাঁর ভাষণে হিংসার আগুনে পুড়তে থাকা মণিপুরে শান্তির আবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। হাজার বছরের দাসত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি পরবর্তী ১০০০ বছরের জন্য একটি নীলনকশা আঁকেন। আসুন জেনে নিই প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভাষণের বড় কথা।
ভাষণ শুরু করে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, "বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র এবং এখন জনসংখ্যার দিক থেকেও শীর্ষস্থানীয় দেশ। এত বড় দেশ, আমার পরিবারের ১৪০ কোটি সদস্য আজ স্বাধীনতা উদযাপন করছে। যারা বিশ্বে ভারতকে ভালোবাসেন এবং সম্মান করেন এবং যারা এই মহান উৎসবকে সম্মান করেন, তাদের আমি এই মহান উৎসবের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।"
স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, "আমি সেই সমস্ত বীরদের শ্রদ্ধা জানাই যারা এই দেশের স্বাধীনতায় অবদান রেখেছেন।"
মণিপুরের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "গত কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তর-পূর্বে সহিংসতা চলছে, বিশেষ করে মণিপুরে, বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। মা-মেয়েদের সম্ভ্রম নিয়ে খেলা হলেও গত কয়েকদিন ধরে শান্তির খবর পাওয়া যাচ্ছে। দেশ মণিপুরের মানুষের পাশে আছে। মণিপুরের মানুষ গত কয়েকদিন ধরে শান্তি বজায় রেখেছে, সেই শান্তির উৎসব এগিয়ে যাক। একমাত্র শান্তি দিয়েই সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া যাবে।"
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আমরা ভাগ্যবান যে আমরা অমৃতকালে প্রবেশ করছি। আমরা যে কাজ করি, আমরা যে পদক্ষেপগুলি করি, আমরা যে ত্যাগ স্বীকার করি, এই সময়ে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিই, আগামী এক হাজার বছরের দেশের সোনালি ইতিহাস তা থেকে অঙ্কুরিত হতে চলেছে। এই সময়ের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলি এক হাজার বছর পর্যন্ত প্রভাব তৈরি করতে চলেছে।"
নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আজ মা ভারতী জাগ্ৰত হয়েছে। সারা বিশ্বে ভারতের জন্য একটি নতুন আশা, একটি নতুন বিশ্বাস জেগেছে। তিনটি 'ডি' উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের কাছে ডেমোগ্ৰাফি, ডেমোক্রেসি এবং ডায়ভারসিটির ত্রিবেণী রয়েছে, যা ভারতকে অনেক দূর নিয়ে যাবে।"
তিনি বলেন, "ভারতের অগ্রগতি আজ শুধুমাত্র বড় শহরগুলিতে সীমাবদ্ধ নয়, টিয়ার-২ এবং টিয়ার-৩ ক্যাটাগরির শহরগুলিও ভালো করছে। আজ আমি আমাদের দেশের তরুণদের বলতে চাই, সুযোগের কোনও অভাব নেই, যতো সুযোগ তোমরা চাও, আকাশের চেয়েও বেশি সুযোগ দেওয়ার ক্ষমতা এই দেশের আছে। আজ দেশে এমন একটি সরকার রয়েছে, যা সকলের কল্যাণ ও সকলের সুখের জন্য নিবেদিত। আজ ভারত পুরোনো চিন্তাকে পেছনে ফেলে নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করে সেই লক্ষ্যগুলো অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।"
এটি একটি নতুন ভারত, এটি একটি আত্মবিশ্বাসে পূর্ণ ভারত, এটি এমন একটি ভারত, যা তার সিদ্ধান্তগুলিকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। তাই এই ভারত থামে না, ক্লান্ত হয় না, হাঁপায় না, আর এই ভারত হারে না। আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে কোভিডের পরে একটি নতুন বৈশ্বিক ব্যবস্থা, একটি নতুন ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ, খুব দ্রুত এগিয়ে চলেছে। আজ পরিবর্তিত বিশ্ব গঠনে আমার ১৪০ কোটি দেশবাসীর সম্ভাবনা দৃশ্যমান", বলেন প্রধানমন্ত্রী।
"আমাদের দেশে ২৫ বছর ধরে আলোচনা চলছিল যে একটি নতুন সংসদ গঠন করা উচিৎ, কিন্তু এই মোদী... তিনি সময়ের আগেই একটি নতুন সংসদ তৈরি করেছেন। এটি একটি কর্মক্ষম সরকার, একটি সরকার নির্ধারিত লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। আমাদের যদি আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে হয় এবং আমাদের সংকল্পগুলি অতিক্রম করতে হয়, তবে আমাদের তিনটি খারাপের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। প্রথম লড়াই দুর্নীতির বিরুদ্ধে, দ্বিতীয় লড়াই স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে, তৃতীয় লড়াই তুষ্টির বিরুদ্ধে", সংযোজন প্রধানমন্ত্রী মোদীর।
তিনি বলেন, "দুর্নীতি আমাদের দেশকে ঘুনপোকার মতো খেয়ে ফেলেছে, কিন্তু এটা মোদীর জীবনের অঙ্গীকার যে, আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব। দ্বিতীয়ত, স্বজনপ্রীতি আমাদের দেশ দখল করেছে, এই পরিবারতন্ত্র যেভাবে দেশকে শক্ত করে ধরে রেখেছে, মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তৃতীয় মন্দ হল তুষ্টি। এই তুষ্টি দেশের মৌলিক চিন্তাধারা, আমাদের জাতীয় চরিত্রকে কলঙ্কিত করেছে। ধ্বংস করে দিয়েছে। সেজন্য আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে লড়তে হবে এইসব অপশক্তি, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও তুষ্টির সঙ্গে।"
No comments:
Post a Comment