কেউ জলের গভীরে উড়ে বেড়ায়, কেউ বা শিকার করে বায়ু ত্যাগ করে! জেনে নিন পাখিদের নিয়ে মজার সব তথ্য - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday 16 August 2023

কেউ জলের গভীরে উড়ে বেড়ায়, কেউ বা শিকার করে বায়ু ত্যাগ করে! জেনে নিন পাখিদের নিয়ে মজার সব তথ্য


কেউ জলের গভীরে উড়ে বেড়ায়, কেউ বা শিকার করে বায়ু ত্যাগ করে! জেনে নিন পাখিদের নিয়ে মজার সব তথ্য 




প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ১৬ আগস্ট: পাখিরা গাছের ফল খায় আর আকাশে উড়ে বেড়ায় আমরা সাধারণত এটাই জানি, কিন্তু এমন পাখিও আছে যারা জলের ভেতরেও উঠতে পারে। কোনও কোনও পাখি তো পড়াশোনাও শিখতে পারে। পাখিরা ঈশ্বরের কত সুন্দর সৃষ্টি কিন্তু এমন পাখিও আছে যাদের শরীরে থাকে বিষাক্ত বিষ। কিছু পাখি তো এমন বড় বড় বাসা বানায় আবার কেউ ১০০ বছরেরও বেশি বাঁচে। আমাদের চারপাশে রোজ কত রকমের পাখি উড়ে বেড়ায় আমরা তাদের নামটুকুও জানি না। কিন্তু তাদের মধ্যে রয়েছে অদ্ভুত কিছু ক্ষমতা যা জানার পর আপনার মুখ থেকে শুধু একটা শব্দ বের হবে, বাহ! তবে চলুন প্রবেশ করা যাক পাখিদের সেই মায়াবী রাজ্যে-


পাফিন হল এমন এক পাখি যে জলের মধ্যেও সাঁতার কাটতে পারে এবং তা দেখে মনে হয় তারা যেন জলের মধ্যে উড়ে বেড়াচ্ছে। আটলান্টিক পাফিনের দেখা মেলে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে। এরা তাদের জীবনের বেশিরভাগটাই পার করে সমুদ্রে। যখন সাঁতার কাটে না তখন জলের ঢেউয়ে ভেসে থাকে। তবে এরা ভালো সাঁতারু। জলের নিচে ২০০ ফুট গভীরে যেতে পারে। যদিও জলের নিচে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ডের বেশি থাকতে পারে না।


সোসেবেল উইভার পাখিরা গাছের মধ্যে এরকম বড় এবং জটিল বাসা তৈরি করে। এই বাসাগুলি কোনও পাখির দ্বারা নির্মিত বৃহত্তম এবং সম্ভবত সবচেয়ে দর্শনীয় কাঠামো। এই বাসা বিভিন্ন ধরনের শাখা, ডাল, পাতা, পশম এবং তুলো দিয়ে তৈরি করা হয়। এই কাঠামোর দায়িত্ব এবং দীর্ঘায়ু নিশ্চিত করতে এই পাখিরা ক্রমাগত নতুন উপাদান যুক্ত করতে থাকে। এই কলোনিতে ৩০০ জোড়া পাখি থাকতে পারে, প্রতি জুরি বাসার ভেতরে একটি গোলাকার চেম্বার দখল করে। এই বাসা পাখিদের ঠান্ডা, তাপ এবং শিকারিদের থেকে রক্ষা করে।


বাসিয়ান ত্রিশরা বায়ু নির্গমন করতে করতে তাহাদের খাদ্য গ্রহণ করে। সোজা কথায় এরা পাদ দিতে দিতে খাবার খোঁজে। জানি এটা খুবই অদ্ভুত শোনাচ্ছে। আসলে পাতার গাঁদা থেকে শিকার করার জন্য এরা গ্যাস ছেড়ে পাতাগুলো সরিয়ে দেয়।


বিষাক্ত পাখি উডেন পিটুই নামে এই পাখিটি পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত পাখি। এই পাখি সাপের মতো বেশ প্রয়োগ করে না বরং শরীরে বিষ ধারণ করে। এদের দেহে বিষের উৎপত্তি হয় মূলত খাদ্য থেকে। এরা এক ধরনের গুবরে পোকা খায়, যা বিষাক্ত। সেখান থেকেই এদের শরীরে বিষের উৎপত্তি হয়। এই পাখি খেলে বা ধরলে বিষে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।


কিউই নামের পাখিটি অন্ধ হয়। তাই তারা গন্ধের দ্বারা শিকার করে। অন্ধ কিউই পাখির গন্ধ, শ্রবণ এবং স্পর্শের মতো ইন্দ্রিয়গুলি ব্যবহার করে বেঁচে থাকে।



আপনি কি জানেন যেসব পাখির লম্বা লেজ থাকে তারা মাটিতে নেমে চরে বেড়ায় না। এরা অনেকটা মনের দুঃখেই মাটিতে চলাফেরা করে না। কারণ নামলেই তো লেজ মাটিতে লুটিয়ে যাবে। ফিঙে, কোকিল ইত্যাদি পাখিরা এই জন্য কেবলের তারে ও গাছে বসে থাকে। দেখে মনে হয় অহংকারে এরা বুঝি মাটিতে নামে না। কিন্তু তা নয়, গাছে গাছে এরা খাবারের সন্ধান করে এবং কখনও কখনও উড়ন্ত পোকা ধরে খায়। 


ক্যালিফোর্নিয়া কন্ডর নামের এই পাখিটি ডানা এতটাই বড় যে ওড়ার সময় এদের বিমান বলে ভুল হয়।


সবচেয়ে বেশিদিন বাঁচে কোন পাখি এটা হচ্ছে তোতা পাখি। প্যারট বা তোতা জাতীয় পাখির গড় আয়ু হয় আশি থেকে ১০০ বছর। কিছু বড় তোতার প্রজাতির বড় কাকাতুয়া এবং ম্যাকাও ১০০ বছরেরও বেশি বয়সের রেকর্ড করেছে। কিন্তু ছোট্ট তোতাগুলি যেমন লাভ বার্ডস, এদের জীবনকাল পনেরো থেকে কুড়ি বছর হয়ে থাকে।


ককি ভ্যানেট নামের এই পাখিটি ১৯১৬ সালের ১২০ বছর বয়সে পৌঁছে ছিল। ককি ভ্যানেট ছিল এক কিংবন্দি পাখি এবং বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীনতম পাখি হিসেবে পরিচিত।

হামিং বার্ড পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট পাখি কিন্তু এটা জানেন কি, বি হামিং বার্ডের ওজন ২ টাকার কয়েনের চেয়েও কম হয়ে থাকে। এদের ওজন ১.৬ থেকে দুই গ্রাম হয়ে থাকে। আর সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম পাখির ডিমের রেকর্ড ও এই হামিংবার্ডেরই। এই ডিমের আকার অনেকটা মটর দানার মত হয়ে থাকে। বাসা তৈরি করার ক্ষেত্রেও পাখিদের মধ্যে এরা সবচেয়ে ছোট পাখির বাসা তৈরি করে থাকে, যা তিন থেকে চার ইঞ্চি হয়ে থাকে।


পেঁচা চোখ ঘোরাতে পারে না আশেপাশে দেখার জন্য এরা মাথাটাকে পুরোপুরি ঘুরিয়ে দেয়। এছাড়াও প্যাঁচা হল একমাত্র পাখি যে, নীল রঙ দেখতে পায়। প্যাঁচাদের একটি দলকে বলা হয় পার্লামেন্ট।


একদল কাককে বলা হয় মার্ডার। আমাদের মধ্যে মানুষ যেমন ভুতের ভয় পায়, তাই তারা রাতে ঘরের বাইরে বেরোয় না। মরা কাকের ডানা ও শরীরকেও কাকেরা ঠিক ভূতের মতই ভয় পায়। কোন জায়গায় একটা কাকের ডানা ঝুলিয়ে রাখলে কাকেরা ভয়ে তার ত্রিসীমানাতেও আসে না।


পেঙ্গুইন হল এমন একমাত্র পাখি, যে সাঁতার কাটতে পারে, কিন্তু উড়তে পারে না। আবার এটি একমাত্র পাখি যে সোজা হয়ে হাঁটে।


 মানুষের দ্বারা গৃহপালিত প্রথম পাখি ছিল হংস বা হাঁস।


পাখির পালকের ওজন তাদের কঙ্কালের চেয়েও বেশি হয়ে থাকে তবে সেটা সব পাখির ক্ষেত্রে নয়।


সবচেয়ে দ্রুততম উড়ন্ত পাখি হল প্যারেড্রিন ফেলকন, এদের গড় গতি ১৮০ কিমি প্রতি ঘন্টা।


সবচেয়ে ধীর গতি সম্পন্ন পাখি হল আমেরিকান উডকক এটি চার ঘন্টায় মাত্র ৫ মাইল যেতে পারে।



বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজনক পাখি হলো কেশওয়ারি, এদের একটি লাথিতে শত্রুর মৃত্যুও হতে পারে।


সাথীকে আকর্ষণ করার জন্য এই পুরুষ ফ্রী গেট পাখি তার গলায় লাল থলিটি ফুলিয়ে দেয়। এই থলিটি কোন ব্যক্তির মাথার মতো বড় হতে পারে।


বর্তমানে বিলুপ্ত মাদাগাস্কারের এলিফ্যান্ট বার্ডটি বারো কেজি ওজনের ডিম দিত।


পাখা ঝাপটানোর দিক থেকে সবচেয়ে ধীরতম হল শকুন। প্রতি সেকেন্ডে একবার আর হামিং ওয়ার্ড সবচেয়ে দ্রুততম, প্রতি সেকেন্ডে ৯০ বার।


এই পৃথিবীতে আসল ফ্লেমিঙ্গোর চেয়ে নকল ফ্লেমিঙ্গো বেশি আছে।


একটি সবুজ কাঠঠোকরা প্রতিদিন দু হাজার পিঁপড়ে খেতে পারে।


বসন্ত বাউরী পাখির আরও একটা নাম আছে। সেটা হল গয়লা বুড়ি কেন। কেন এই নাম সেটা জানি না, কিন্তু এদের চেহারা গয়লা বুড়ির মত একেবারে নয়।


ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের মতে কাকেরা বিভিন্ন টুলস ব্যবহার করতে পারে এবং যুক্তির দ্বারা ধাধার সমাধান করতে পারে। বিজ্ঞানীরা এও বিশ্বাস করেন, কাকেরা তাদের কাজগুলি আগের থেকে পরিকল্পনা করে করতে পারে।


পরজীবী জাজারসরা অন্যান্য পাখিদের মুখ থেকে খাবার চুরি করে খায়। বিশেষত সমুদ্রের দিকে এই পাখিগুলির অন্য পাখিদের তাড়ায় করে এবং তারা নিজেদের জন্য যেই খাবার খেয়েছে, তা ফেলে দেওয়ার জন্য হয়রানি করে।


ল্যামাগায়ের নামের এই শকুনির খাদ্যে ৭০% থেকে ৯০% থাকে হাড়। এরা হারগুলো নিয়ে অনেক উঁচুতে উড়ে যায়। তারপর পাথরের মধ্যে ফেলে সেগুলি চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয় এবং তারপর মজ্জা ও হাড়ের টুকরো খায়।  


পাখিদের ওজন হালকা করার জন্য বেশিরভাগ পাখিদের মূত্র থলি থাকে না।


সর্বাধিক পলকযুক্ত পাখি হলো, উইস্লিম স্মাঙ্গ। এদের ২৫ হাজার পর্যন্ত পালক থাকে।


অন্যদিকে হামিংবার্ড এত ছোট হওয়া সত্ত্বেও এদের ১০০০ পালক থাকে।


ফ্লেমিঙ্গোকে দেখলে মনে হয় এরা হাঁটু উল্টো দিকে মুড়ে আসলে, যেটা উল্টোদিকে ঘুরছে সেটা ওর গোঁড়ালি আর গোড়ালিটির নিচে একটি দীর্ঘ পায়ের হাড় থাকে, যা পায়ের আঙ্গুলের দিকে যায়। এই পাখির আসল হাঁটু সাধারণত পালক দিয়ে লুকানো থাকে।


পায়রা মানুষের মুখ চিনতে পারে। শুধু তাই নয় তারা টাচ স্ক্রিন ও ব্যবহার করতে পারে, এমনকি পড়তেও শিখতে পারে। ন্যাশনাল একাডেমি অফ সাইন্সে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে বিজ্ঞানীরা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যে, পায়রারা প্রায় ৫০ টি শব্দ চিনতেও শিখতে পারে এবং গুরুত্বপূর্ণভাবে তারা শব্দকে অশব্দ থেকে পৃথক করতে পারে।


ইংরেজিতে টুনটুনি পাখিকে টেলর বার্ড বা দর্জি পাখি বলা হয়। কেন তা আপনারা বোধ হয় জানেন। এরা গাছের পাতা ঠোঙ্গার মত মুড়ে তার পাশে সুতো বা গাছের আঁশ দিয়ে সুন্দর করে সেলাই করে এবং সেই ঠোঙার মধ্যে পালক বা তুলো বিছিয়ে ডিম পাড়ে। কাপড় সেলাইয়ের জন্য আমরা যেমন সুঁচ ব্যবহার করি টুনটুনির সেসব কিছুই জোগাড় করতে হয় না এদের ঠোঁটটি সুঁচের কাজ করে। এই পাখিরা কিভাবে যে এমন সেলাই বিদ্যা শিখলো তা ভাবলে অবাক হতে হয়।


বাবুই পাখিয়া গাছের ডালে কলসের মতো বাসা বাঁধে। বাবুই পাখির বাসা বড় মজার জিনিস, তাই তাল ও খেজুর গাছের ডালে এরা বাসা বাঁধে। জাহাজ যখন খালি থাকে, তখন আপ ঢেউয়ে তা দুলতে থাকে। এজন্য মোল্লারা জাহাজের খোলে বস্তা বস্তা বালি ও অন্যান্য ভারী জিনিস দিয়ে বোঝায় রাখে। বাবুইদের বাসাও খুব হালকা। হালকা বাসাগুলি যাতে সামান্য বাতাসে নড়াচড়া না করে, তার জন্য এরা বাসায় খানিকটা করে কাঁদা রাখে।


ফ্লিল্ডফেয়ার পাখিদের তাদের শত্রু পাখির আক্রমণ করার একটি বিশেষ উপায় রয়েছে, এরা শত্রুদের ওপর গিয়ে পায়খানা করে দেয়।


পাখিরা ঘুমোনোর সময় ডাল থেকে পড়ে যায় না। কারণ যে ডালটির ওপর তারা দাঁড়িয়ে থাকে, তাদের আঙ্গুল গুলি অটোমেটিক্যালি সেই ডালটিকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে থাকে এবং এই কাজটি পেশিগুলির পরিবর্তে রগ দ্বারা হয়ে থাকে। ফলে পাখিগুলি পড়ার আশঙ্কা ছাড়াই ঘুমোতে পারে।


পাখিদের মধ্যে ঈগল সবচেয়ে বড় বাসা তৈরি করে। প্রায় সাড়ে ৯ ফুট জুড়ে। এখনও পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে বড় বাসাটি প্রায় ১০ ফুট প্রশস্ত এবং ওজন তিন টনের কাছাকাছি ছিল।


ফ্লেমিঙ্গোর গোলাপী রংটি তাদের খাদ্য থেকে আসে। ফ্লেমিঙ্গোর জুটি আজীবন থাকে, কেউ কেউ ৫০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে তার সাথীর সঙ্গে থাকে।


পাখির প্রতিটি ডান হাতে তিনটি আঙ্গুল থাকে; প্রথম আঙ্গুলটি ডানার একটি ছোট অংশকে সাহায্য করে, যাকে বলে আলুলা, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় আঙ্গুলগুলি মূলত ওড়ার পালকগুলিকে সাহায্য করে।


প্রাচীন গ্রিসে পায়রারা অলিম্পিক গেমের ফলাফল সরবরাহ করত। পায়রা ছিল বিশ্বযুদ্ধের রেডিও। উভয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিন লক্ষেরও বেশি পায়রা ব্যবহার করা হয়েছিল এবং ৩২ টিকে দ্যা ডিকিন মেডেল দেওয়া হয়েছিল, যা কিনা প্রাণী জগতের ভিক্টোরিয়া ক্রস।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad