গজকেশরী যোগে চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণ! জেনে নিন এর গুরুত্ব
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ২৩ আগস্ট: জ্যোতিষশাস্ত্রে যে চাঁদকে মনের কারক হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং যার উদাহরণ প্রায়শই কারও সৌন্দর্য বর্ণনা করার জন্য দেওয়া হয়, আজ ভারতের চন্দ্রযান সফলভাবে সেই চাঁদে অবতরণ করেছে। এই চন্দ্রযান মিশন, যা ভারতীয় বিজ্ঞানীদের কঠোর পরিশ্রম এবং কোটি কোটি ভারতীয়দের প্রার্থনার কারণে সফল হয়েছে, জ্যোতিষশাস্ত্রের আয়নায় এত গুরুত্বপূর্ণ। আসুন দেশের সুপরিচিত জ্যোতিষীদের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক, চন্দ্রযান যখন চাঁদের মাটি স্পর্শ করেছিল তখন এই মিশনের সাফল্য এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে সে সময়ের গ্রহ এবং নক্ষত্রগুলি কী বলে-
সুপরিচিত জ্যোতিষী আংশু পারেকের মতে, চন্দ্রযান-৩ আজ যখন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে, তখন চাঁদ তার মিত্র রাশিতে বিশাখা নক্ষত্রে সঞ্চারণ করে দশম ঘরে বিরাজমান ছিল। ভারতের কুণ্ডলী হল বৃষ লগ্ন এবং কর্কট রাশি। দুই-ই চাঁদ দ্বারা প্রভাবিত। বৃষ রাশি হল চাঁদের উচ্চ চিহ্ন, যা ভারতের লগ্ন এবং কর্কট হল চাঁদের স্বরাশি। ভারতের কুন্ডলীতে, চন্দ্র তার স্বরাশি রাশির হয়ে পরাক্রম ভাবে পুষ্য নক্ষত্রে বসে আছে, তাও সূর্য, শনি, বুধ এবং শুক্রের সাথে।
আজকের পরিস্থিতি (যখন চন্দ্রযান 3 চাঁদে অবতরণ করে) দেখলে চাঁদ তুলা রাশিতে এবং বৃহস্পতি মেষ রাশিতে থাকায় পূর্ণ গজকেশরী যোগ গঠিত হয়। ভারতের লগনা কুণ্ডলির লগ্নেশ স্বামী শুক্রের সঙ্গে কেন্দ্রের সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে। রাশিফল অনুসারে, আজকের দিনটি ভারতের জন্য সুখ, সমৃদ্ধি এবং সাফল্য পাওয়ার দিন ছিল, কারণ ভারতের কর্কট রাশি থেকে চন্দ্র তার চতুর্থ ঘরে, তুলা রাশিতে সঞ্চরণ করছে। গজকেশরী যোগ এবং শুক্রের সাথে কেন্দ্রের সংযোগ হওয়ায় আজকের এই দিনটি বিশেষ হয়ে উঠেছে।
দেশের রাজধানী দিল্লীর জ্যোতিষী পন্ডিত রাকেশ চতুর্বেদীর মতে, আজ যে মুহূর্তে চন্দ্রযান-৩ চাঁদে অবতরণ করেছে, তার শুভ সময়টি খুবই বিশেষ। জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে উদয়া তিথিতে স্বাতী নক্ষত্রের মিলন, রাহু নক্ষত্রে রহস্য বিদ্যায় পাওয়া সাফল্য, সেইসাথে সূর্যোদয় কালের লগ্ন কুন্ডলীর কথা বলা হলে, তখন সূর্য ও বুধ, সিংহ রাশিতে এবং লগ্নও উদয় কালের সিংহ-ই ছিল, যা স্থির লগ্ন এবং সাফল্যের কারক মানা হয়।
পণ্ডিত রাকেশ চতুর্বেদীর মতে, গুপ্তবিদ্যার করক গ্রহ কেতুও চন্দ্রের সঙ্গে তুলায় বসে আছে, যা এই মিশনের সাফল্যকে আরও বাড়িয়ে দেয়। সূর্যোদয়ের লগ্ন কুণ্ডলীতে পরাক্রম ভাবে চন্দ্র, কেতু এবং কুটুম্ব ভাবে মঙ্গল-বুধের সাথে যৌথ সাফল্য এবং খ্যাতির কারক হয়ে উঠেছে। জ্যোতিষশাস্ত্রে নক্ষত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ, নক্ষত্রের কথা যদি বলি তাহলে উদয় কালে স্বাতীর মিলন এবং সকাল ৮টার পরেই বিশাখার সূচনা অর্থাৎ রহস্য থেকে শুরু করে গুরুর নক্ষত্রে অবতরণের সাফল্য সম্পূর্ণভাবে নক্ষত্রের দ্বারাই হয়েছে।
পণ্ডিত রাকেশ চতুর্বেদীর মতে, চন্দ্রযানের সফল অবতরণ সূর্যের হোরা এবং বৃহস্পতির প্রধান নক্ষত্রে হয়েছিল এবং সূর্য-বুধ আদিত্য যোগ তৈরি করছে। আজকের উদয় লগ্ন তিথিতে, চন্দ্রযান ৩- এর মিশন সম্পূর্ণ সফল। এটি দেশ ও দেশের মানুষকে আশ্চর্যজনক শক্তি প্রদানের একটি ফ্যাক্টর হয়ে উঠবে। চাঁদকে জল এবং মাতৃত্ব ভাবের কারক মানা হয় এবং আজকের তিথিতে, শুক্র চন্দ্রের রাশিতে বসে আছে এবং চন্দ্র কেতু শুক্র রাশিতে রয়েছে, এটি যশ ও বৈভবের প্রাপ্তি করাবে এবং বিশ্বস্তরে ভারতের শক্তি বৃদ্ধি করবে। কেতুকে গুপ্তবিদ্যা, জ্যোতিষশাস্ত্র এবং বিজ্ঞান ও গবেষণার কারক গ্রহ মানা হয়, এই কারণে আজকের এই সাফল্য আগামী দিনে জ্যোতিষ ও বিজ্ঞান উভয়ের জন্যই আশীর্বাদ হিসাবে প্রমাণিত হবে।
No comments:
Post a Comment