ভয়ঙ্কর সেই রাতে কী ঘটেছিল! মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে গোটা গ্ৰাম, মানুষ তো দূর মাছিও প্রাণে বাঁচেনি
প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২৩ আগস্ট: আমরা শ্বাস গ্ৰহণের সময় অক্সিজেন নেই এবং কার্বন ডাই অক্সাইড ছেড়ে দিই- একথা তো আমরা সকলেই জানি। কিন্তু এই 'কার্বন ডাই অক্সাইড' গ্যাস যে কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, তা জানলে শিউরে উঠবেন। আফ্রিকার একটি গ্রামে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর ঘটনা চমকে দেবে যে কাউকে। 'কার্বন ডাই অক্সাইড' গ্যাস 'নীরব ঘাতকের' মতো কাজ করে পুরো গ্রামকে মেরে ফেলেছে। মানুষ, পশুপাখি এমনকি মাছিদেরও দম বন্ধ হয়ে যায়। এই ঘটনাটি 'নিওস ডিজাস্টার লেক' নামে পরিচিত। এতে মোট ১৭৪৬ জন মানুষ এবং প্রায় ৩,৫০০ পশুও মারা যায়।
ডেইলিস্টারের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ২১ আগস্ট, ১৯৮৬, পশ্চিম আফ্রিকার একটি গ্রাম নিওসে রাত ৯ টার দিকে, লোকেরা একটি বিকট শব্দ শুনতে পায়। পরের দিন সকালে গ্রামবাসীদের একজন, এফ্রাইম চে ঘুম থেকে উঠে দেখেন যে তার পরিচিত প্রায় সবাই মারা গেছেন। পুরো গ্রামে তখন ভয়ানক নীরবতা। এসব দেখে এফ্রাইম হুঁশ হারিয়ে ফেলেন। তখনই তিনি এক মহিলার কান্না শুনতে পান। এরপর তিনি ওই মহিলার দিকে এগিয়ে যান। সেখানে পৌঁছে তিনি জানতে পারলেন যে মহিলাটি হালিমা, যাকে তিনি চিনতেন।
ইফ্রাইম জানান, শোকে হালিমা তার কাপড় ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। ওই ছেঁড়া কাপড়গুলো ছিল তার সন্তানদের মৃতদেহ, যারা আর বেঁচে ছিলেন না। হালিমা তার সন্তানদের মৃত্যুতে কাঁদছিলেন। এরপর, ইফ্রাইম তার পরিবারের আরও ৩০ জনেরও বেশি সদস্য এবং তাদের ৪০০টি প্রাণীকে দেখেছিল। ইফ্রাইম মনে করে বলেন, 'সেদিন মৃতদের ওপর কোনও মাছিও ছিল না। এমনকি পোকামাকড়গুলোকেও কোনও অদৃশ্য হত্যাকারীর মেরে ফেলেছিল।' 'নিওস ডিজাস্টার লেক' থেকে বেঁচে যাওয়া ইফ্রাইম এবং হালিমার কথা শুনলে কেঁপে উঠবে হৃদয়।
নিওস হ্রদ বিপর্যয়ের মূল কারণ হ্রদের গভীর স্তরে দ্রবীভূত কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস জমে যাওয়া। বিস্ফোরণটি নিওস হ্রদের গভীরতা থেকে প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নির্গত করেছিল, যা নিওস গ্রামের প্রায় প্রতিটি জীবন্ত প্রাণীর দম বন্ধ করে দিয়েছিল এবং তারপরে হাজার হাজার মানুষ ও প্রাণী প্রাণ হারায়। কিছু জীবিত ব্যক্তি হ্রদ থেকে একটি বারুদ বা পচা ডিমের মতো গন্ধের কথা জানিয়েছেন, যেটি থেকে বোঝা যায় হ্রদ থেকে গ্যাস নির্গমন হয়েছিল।
No comments:
Post a Comment