বড় দেবীর পুজোর সূচনা ভাদ্রের শুক্লাষ্টমীতে
নিজস্ব সংবাদদাতা, কোচবিহার, ২৪ আগস্ট: ময়না কাঠ পূজোর মধ্য দিয়ে ভাদ্রের শুল্কা অষ্টমীতে শুরু হল বড় দেবীর পুজোর আবাহন। কোচবিহারের মহারাজাদের স্থাপন করা দেবী বাড়িতে প্রায় ৫০০ বছর যাবৎ এই ময়না কাঠ পুজোর মধ্য দিয়েই শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হয়।অন্যান্য পুজোর থেকে এই পুজোর নিয়ম পদ্ধতি সম্পূর্ণ আলাদা। প্রতিবছর শ্রাবণী শুক্লাষ্টমীতে এই পুজো হয়ে আসে। কিন্তু এবারে একটু ব্যতিক্রম, মূলত এবারে শ্রাবণ মাস মল মাস, তাই ভাদ্র মাসের শুক্লা অষ্টমী তিথিতে কোচবিহার শহরের গুঞ্জবাড়িতে ডাঙারাই মন্দিরে এই ময়না কাঠ পুজো হয় বৃহস্পতিবার।
পুজো শেষে মহাস্নান, এরপর ময়না কাঠরূপী মাকে কাপড় পরিয়ে শুরু হয় বিশেষ পুজো। পুজো শেষে বলি দেওয়া হয় পায়রা। মায়ের উদ্দেশ্যে নিবেদন করা হয় পরমান্ন ভোগ। রাজ-পুরোহিত হীরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এদিন বলেন, এদিন সন্ধ্যায় রাজপরিবারের দুয়ার বক্সী অজয় কুমার দে বক্সীর উপস্থিতিতে বাদ্যযন্ত্র সহকারে মাতৃরূপী ময়না কাঠটিকে কাপড় পরিয়ে, সুন্দর ভাবে সাজিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় মদনমোহন বাড়িতে। পুরো এক মাস সেখানে হয় নিত্য পুজো।
এরপর কৃষ্ণ অষ্টমী তিথিতে মাতৃরূপী এই ময়না কাঠকে বাদ্যযন্ত্র সহযোগে নিয়ে আসা হয় বড়দেবী বাড়িতে এবং রাধা অষ্টমী তিথি থেকে নিষ্ঠা সহকারে শুরু করা হয় এই ময়না কাঠের পুজো ও বড় দেবীর মাটির প্রতিমা তৈরির কাঠামোর কাজ। তিনদিন তাতে হাওয়া লাগানোর পর চূড়ান্তভাবে শুরু হয় এই মৃন্ময়ী মূর্তি নির্মাণের কাজ। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী এই বড় দেবীর পুজোর ইতিহাস এই জেলার প্রায় সকলেরই জানা। বড়দেবীর মৃন্ময়ী মূর্তি, দেবী দুর্গার অন্যান্য মূর্তি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এই বড় দেবীর গায়ের রং লাল, এখানে বড় দেবীর বাহন সিংহ নয়, বাঘ এবং বড় দেবীর সাথে থাকেন জয়া এবং বিজয়া। কোচবিহারের মহারাজা বিশ্ব সিংহের আমলে স্বপ্নাদেশে এই পুজোর সূচনা হয়েছিল। দেবী দুর্গার এই বড় দেবী রূপ ৫০০ বছর ধরে ঐতিহ্যের সাথে পূজিত হয়ে আসছেন।
No comments:
Post a Comment