পৃথিবীর ইতিহাসে সবথেকে বড় সাপ! গিলে খেত আস্ত ডাইনোসর - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday 21 August 2023

পৃথিবীর ইতিহাসে সবথেকে বড় সাপ! গিলে খেত আস্ত ডাইনোসর

 


পৃথিবীর ইতিহাসে সবথেকে বড় সাপ! গিলে খেত আস্ত ডাইনোসর




প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২০ আগস্ট: সাপ, আমাদের আশেপাশে থাকা এমন একটি প্রাণী যাদের সম্বন্ধে আমাদের কৌতূহলের শেষ নেই। আপনি কি জানেন আজ থেকে কয়েক কোটি বছর আগে আমাদের পৃথিবীর বুকে দাপিয়ে বেড়াতো এক বিশালাকার রাক্ষুসে সাপ? হ্যাঁ যে একবারে একটি ডাইনোসরকে গিলে খাওয়ার ক্ষমতা রাখতো। আর আপনি কি এটা জানেন তার সাইজ প্রায় টাইটানিক জাহাজের সমান ছিল? মানে বুঝতেই পারছেন যার কাছে আজকের যুগের সবচেয়ে বড় সাপ এনাকোন্ডা কিছু ছিল না, যার নাম ছিল টাইটানোবোয়া।


২০০৯ সালে কলম্বিয়াতে গোল্ড মাইন্ড খোদাই করার সময় কর্মচারীরা মাটির নিচে কিছু হাড়ের টুকরো পায়। কিন্তু ওই হাড়ের টুকরোগুলো একত্রিত করেও বোঝা যাচ্ছিল না, যে ওই হাড়গুলো কোন প্রাণীর। এরপর কর্মচারীরা আরও খুঁড়তে থাকে। সেরকম ভাবেই বেশ কিছুটা খোঁড়ার পর আরও ৩০ টি সাপের হাড় খুঁজে পায় এবং তার মধ্যে একটি সাপের বিশাল মাথাসহ গোটা কঙ্কালটাই খুঁজে পায় তারা, যেটা ২৫ মিটার লম্বা ছিল।

 

এরপরে অনেক গবেষণার শেষে জানা যায় যে, ওইসব কর্মচারীরা নিজেদের অজান্তেই কয়েক কোটি বছর আগে পৃথিবীর জঙ্গলকে শাসন করতে থাকা রাক্ষুসের সাপ টাইটানোবোয়ার গোটা কঙ্কাল আবিষ্কার করে ফেলেছে। এটা পৃথিবীর ইতিহাসে পাওয়া এখনও অব্দি সবথেকে বড় সাপ, যার ওজন ছিল ১ হাজার ১৩৫ কিলো।


বিজ্ঞানীরা আরও জানায় আজ থেকে পাঁচ বা ছয় কোটি বছর আগে এই পৃথিবীতে তাদেরই রাজ ছিল। আর আপনাদের এটাও জানিয়ে রাখি এই টাইটানোবোয়ার কঙ্কালটি রিসার্চ করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা খুবই আশ্চর্য হয়ে যান। কারণ তারা এর আগে এত বড় সাপ না দেখেছেন, না কখনও শুনেছেন।


এই টাইটানোবোয়া অন্য সাপের মতোই কোল্ড ব্লাডেড ছিল। অর্থাৎ তার মেটাবলিক রেট আশেপাশের পরিবেশের ওপর নির্ভর করত‌। আজকের যুগে অ্যামাজন জঙ্গলে থাকা সব থেকে বড় সাপ অ্যানাকোন্ডার প্রায় তিনগুণ ছিল এই টাইটানোবোয়া। তাই বলাই যায় যে,টাইটানোবোয়ার সামনে অ্যানাকোন্ডা ছিল ছোট একটি শিশু। 



এই টাইটানোবো আর কোন বিষ ছিল না। সে শিকারকে জড়িয়ে চেপে মেরে ফেলত। আর ধীরে ধীরে গিলে ফেলত তার শিকারটিকে। এই বিশালাকার সাপটি ডাইনোসর যুগের প্রায় ১০ লক্ষ বছর পর পৃথিবীতে আসে। শোনা যায়, তখনকার সময় এক একটি টাইটানোবোয়ার সাইজ ছিল প্রায় ৫০ মিটার বা তারও বেশি আর তাদের ওজন ছিল এক হাজার পাঁচশো কিলোর আশেপাশে। তাই বলাই যায় যে কোনও না কোনও জায়গায় অবশ্যই মাটির নিচে পৃথিবীর বুকে এখনও টাইটানোবোয়ার কঙ্কাল রয়েছে, যা ভবিষ্যতে হয়তো আমরা খুঁজে বার করতে পারব।


এই টাইটানোয়ার সব থেকে প্রিয় খাবার ছিল কুমির আর এরা কুমিরকে না চিবিয়েই আস্ত গিলে খেয়ে নিত। উল্লেখ্য, সেই সময় এই কুমিরের সাইজ এখনকার কুমিরের থেকেও কিন্তু অনেকটা বড় ছিল। কিন্তু কথা হচ্ছে ওই টাইটানোবোয়া আমাদের পৃথিবীতে কি আবখর ফিরে আসতে পারে? বিজ্ঞানীরা বলেছে, হ্যাঁ আসতেই পারে, আর মানুষই তাকে ফেরানোর রাস্তা বের করে দিচ্ছে। কি অবাক হলেন তো! 


আসলে টাইটানোবোয়া গরম আবহাওয়া পছন্দ করত। কারণ সেই সময় পৃথিবীর তাপমাত্রা অনেকটা বেশি ছিল আর বর্তমানে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারনে এমনিতে পৃথিবীর তাপমাত্রা আবার বাড়ছে। তো এটা বলাই যায় যে, আমাদের সুইট হোমকে আমরাই টাইটানোবোয়ার হোম সুইট হোম বানিয়ে তুলছি। কে বলতে পারে যে, অ্যামাজনের গভীর অরণ্যে অলরেডি টাইটানোবোয়া ধীরে ধীরে নিজের বংশবিস্তার করছে না‌! কারণ অ্যানাকোন্ডা আর টাইটানাবোয়া, কিন্তু একই গোত্রের। কেবল এদের সাইজের পার্থক্য আছে এই যা।


একটি ফটো ১৯৫৯ সালের ইউএসএস সিআইএ নিজেরা পাবলিশ করে আর ফটোটা আফ্রিকার একটি জঙ্গলের, যা নেওয়া হয়েছিল হেলিকপ্টার থেকে আর এই সাপের ফটোটি একদমই রিয়েল যা আপনারা ইউএস- এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গেলে পেয়ে যাবেন। ছবিতে দেখানো এই সাপটি ৫৯ মিটার লম্বা।


তো এবার বুঝতেই পারলেন বিজ্ঞানীরা কেন টাইটানোবোয়ার আবার ফিরে আসার সম্ভাবনার কথা বলেছেন। তো একবার শুধু ভেবে দেখুন, আমাদের এই চাকচিক্যময় শহরে একবার যদি এত বড় একটি সাপ চলে আসে, তবে ঠিক কি হবে! এক চুটকিতেই সমস্ত কিছু শেষ করে দেবে এরা। আর মানুষকে তখন ভয়ে ভয়ে দিন কাটাতে হবে।


এই টাইটানোবোয়ার রাজত্বকাল বেশ ভালোই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই এই প্রজাতি পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা কেউই ঠিকমতো বিলুপ্তির কারণ বলতে পারেননি। তবে তাদের ধারণা যেভাবে পৃথিবীর পরিবেশ ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা হতে থাকে, সেভাবেই এই রাক্ষসের সাপেরও বিলুপ্তি ঘটে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad