পঞ্চায়েত হাতছাড়া হতেই আক্রান্ত তৃণমূল কর্মীরা! কাঠগড়ায় জোট
নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ২০ আগস্ট: তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত জোটের দখলে যেতেই আক্রান্ত তৃণমূল কর্মীরা, বিজয় মিছিল থেকে তৃণমূল কর্মীদের মারধর এবং বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ, কাঠগড়ায় কংগ্রেস-সিপিএম জোট। ঘটনা মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরের।
এতদিন নির্বাচনে জিতে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। আক্রান্ত হয়েছে বিরোধী দলের কর্মীরা। কিন্তু এবার যেন এক্ষেত্রেও উলটপুরান। তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের হাত ছাড়া হতেই আক্রান্ত তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। কাঠগড়ায় কংগ্রেস সিপিএম জোট। তৃণমূল কর্মীদের মারধর এবং বাড়িতে ইট পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ। সমগ্র ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়। লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়।
প্রসঙ্গত হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে শনিবার দিন ছিল পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন। ২০ টি আসন বিশিষ্ট মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ১ টি নির্দল প্রার্থীর সমর্থনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কংগ্রেস- সিপিআইএম জোট পঞ্চায়েত দখল করেছে। শনিবার বিকেলে পঞ্চায়েত দখলের পর থেকেই উল্লাসে মেতে ওঠেন জোট কর্মী-সমর্থকরা। মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় বের হয় বিজয় মিছিল।
তৃণমূলের অভিযোগ, সেই বিজয় মিছিল থেকেই তাদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মীকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। তাদের মধ্যে গাংনদীয়া গ্রামের আহত তৃণমূল কর্মী সামিউল হক গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। আরও একজন আহত তৃণমূল কর্মী হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
অন্যদিকে রামপুরে এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে ইট পাথর ছুঁড়ে বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে জোটের বিরুদ্ধে।এদিকে সমগ্র ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।আক্রমণের অভিযোগ অস্বীকার করেছে জোট। পাল্টা আক্রমণকারীদের কঠোর শাস্তির দাবী তুলেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
আক্রান্ত তৃণমূল কর্মী অশোক মণ্ডল বলেন, 'বিকেল বেলা আমার বাড়ির সামনে দিয়ে জোটের বিজয় মিছিল যাচ্ছিল। সেই সময় মিছিল থেকে বাড়ির দিকে ইট,পাথর ছোড়া হয়। বাড়িতে টালির চাল ভেঙে গেছে। আমার মেয়ের পায়ে লেগেছে। আমি তৃণমূল করি বলেই আমার বাড়িতে আক্রমণ করেছে।'
তৃণমূল নেতা স্বপন আলীর অভিযোগ, 'মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত জোটের দখলে যেতেই ওই পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় আমাদের কর্মীদের বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা অশুভ আঁতাত তৈরি হয়েছে। তারা এই ধরণের সন্ত্রাস চালাচ্ছে। আমরা এদের গ্রেফতার চাই।'
সিপিআইএমের উত্তর এরিয়া কমিটির সম্পাদক প্রণব দাস বলেন, 'আমরা সন্ত্রাসে বিশ্বাস করিনা। এই অভিযোগগুলো মিথ্যা অভিযোগ। পুলিশ রয়েছে, খতিয়ে দেখবে। তৃণমূল জনদেশ না পাওয়ার পরেও সন্ত্রাস করে বোর্ড দখল করার চেষ্টা করেছিল। তৃণমূলের জন্ম সন্ত্রাস থেকে।'
প্রসঙ্গত, নির্বাচন হোক বা ভোট পরবর্তী সময় এই রাজ্যে অব্যাহত রাজনৈতিক সন্ত্রাস। বিধানসভা ভোট হোক বা পঞ্চায়েত পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন নেই। গণতন্ত্রের উৎসবে বারবার লেগে থাকছে রক্তের দাগ।
No comments:
Post a Comment