মাংস-মুড়ি খেতে গিয়ে গলায় ধাতব তার! উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বিরল অপারেশনে প্রাণরক্ষা
নিজস্ব সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি, ১৭ আগস্ট: সাধ করে মাংসের ঝোল দিয়ে মুড়ি খেতে গিয়েই মহা বিপদ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গলার নালিতে বিঁধে যায় লোহার তার। অবশেষে অস্ত্রোপচার করে মহিলার গলা থেকে সেই তার বের করলেন চিকিৎসকেরা। উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ার লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা এক মহিলার সঙ্গে ঘটে গেল এমনই ঘটনা। মুড়ি খাওয়ার সময় গলায় বিঁধে যায় লোহার তার। এরপর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে সবের করা হল সেই তার।
জানা গিয়েছে, উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা আকলামি খাতুন, বয়স ৫৫ বছর। কয়েকদিন ধরে গলায় কিছু বিঁধেছিল, তা বুঝতে পারছিলেন তিনি। কিন্তু শেষে জানতে পারেন যে গলায় লোহার তার আটকে রয়েছে। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে তাঁর গলা থেকে তারটিকে বের করা হয়।
জানা গিয়েছে, গত সোমবার মাংসের ঝোল দিয়ে মুড়ি খেতে বসেছিলেন। সেই সময় গলায় কিছু বিঁধে যায় তা বুঝতে পারেন তিনি। বাড়িতেই বিভিন্ন শক্ত খাবার খেয়ে সেটিকে বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু লাভ হয়নি। এরপর ইসলামপুর হাসপাতালে ছুটে যান ওই মহিলা। সেখানে চিকিৎসা করিয়েও লাভ হয়নি। এরপর বিহারের কইষআণগঞ্জএর একটি হাসপাতালে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পরিকাঠামোগত অভাব থাকায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যান তার আত্মীয়রা। সেখানে ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকেরা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখেন যে গলার ভিতরে সরু তার জাতীয় একটা কিছু রয়েছে। তখনই চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন।
মহিলার খাদ্যনালীতে ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশনের জন্য টিম গঠন করেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তাররা। বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার রাধেশ্যাম মাহাতোর তত্ত্বাবধানে ওই মহিলার খাদ্যনালী থেকে তিন সেন্টিমিটার এর একটি ধাতব তার বের করে আনে চিকিৎসকদের সেই টিম।
বৃহস্পতিবার ঘন্টাখানেকের অস্ত্রোপচার করে সরু তারটিকে বের করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ রয়েছেন আকলামি খাতুন। ইএনটি বিভাগের প্রধান রাধেশ্যাম মাহাতো জানান, বিপজ্জনক অবস্থায় ধাতব তারটি গলার মধ্যে ছিল। সেটিকে বের না করলে ভবিষ্যতে প্রাণহানির মত ঘটনা ঘটতে পারত। ওই মহিলাকে আপাতত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment