সদ্যোজাত অদল-বদল ঘিরে উত্তেজনা! গ্রেফতার সেবিকা, কাঠগড়ায় সেই বেসরকারি হাসপাতাল
নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ১৮ সেপ্টেম্বর: সদ্যোজাত অদল-বদলের অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার চাঁচলের এক বেসরকারি হাসপাতালে। পুলিশের হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি। এইভাবে সদ্যোজাত অদল-বদলের চক্র সক্রিয় রয়েছে ওই বেসরকারি হাসপাতালে, আশঙ্কা সদ্যজাতের পরিবারের লোকেদের।নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে অভিযোগ করতে চলেছে সদ্যজাতের পরিবার। এদিকে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক সেবিকার প্রতি দায় চাপাচ্ছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার সেই সেবিকা।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঐ নার্সিংহোমে হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের দক্ষিণ শালদহ ও ইলাম গ্রামের দু'জন প্রসূতি একই সময়ে ভর্তি হন। সেদিন রাতেই জানবি পারভীন ও চুমকি খাতুন পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। দুই পরিবারের অভিযোগ, শুক্রবার রাতে এক সেবিকা তাদের সদ্যোজাতের মধ্যে অদল-বদলের চেষ্টা করে। সেই সময় সদ্যোজাতের মায়েরা দেখে ফেললে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে।পরিবারের সদস্যরা নার্সিংহোমে ছুটে আসলে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সাথে বাকবিতন্ডা তাদের হয়।খবর পেয়ে চাঁচল থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। রাতেই একজন সেবিকাকে চাঁচল থানার পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যান।
চাঁচল থানার পুলিশ জানায়, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের তরফে অভিযোগ পেয়ে এক সেবিকাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, রবিবার তাকে চাঁচল মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। যদিও ওই সেবিকার দাবী, তাকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। সদ্যোজাত শিশু বদলানোর মিথ্যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে আরও খবর, বর্তমানে দুই সদ্যোজাত প্রকৃত মায়ের কাছে রয়েছে বলে পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে।
সদ্যোজাত শিশু বদলানোর চক্র আগে থেকেই কি এই নার্সিংহোমে সক্রিয় রয়েছে?;সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিবারের লোকেরা। তারা সঠিক তদন্তের দাবী জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরেও অভিযোগ জানাবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
ইলাম গ্রামের সদ্যোজাত শিশুর বাবা সাহিল আক্তার বলেন, 'রাতেই নার্সিংহোমের এক কর্মীর ফোন পেয়ে ছুটে আসি। আমার স্ত্রী জানান, আমাদের ছেলেকে বদল করার চেষ্টা করা হয়। এইরকম চক্র কি আগে থেকে সক্রিয় রয়েছে এখানে? এই ঘটনায় প্রশ্ন জাগছে।'
দক্ষিণ শালদহের প্রসূতি চুমকি খাতুনের ঠাকুরমা নুরজাহান বেওয়া বলেন, 'রাতে ওয়ার্ডের বাইরে ছিলাম।নাতনির চিৎকারে ছুটে গিয়ে দেখি শিশু অদল-বদল নিয়ে ঝগড়া চলছে। এইরকম ঘটনা ঘটলে সারাজীবন বাবা মায়ের সন্দেহের চোখে থাকবে শিশু সন্তান। এমন যেন আর কারও সঙ্গে না হয়,সেই দাবী রাখছি।'
যদিও এই প্রসঙ্গে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। চাঁচলের এই নার্সিংহোম চলতি মাসের ৯ তারিখেই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল।সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়েছিল নার্সিংহোম চত্বর। ভাঙচুর হয়েছিল নার্সিংহোম।গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এবার সদ্যোজাতের অদল বদলের অভিযোগ।
চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েতের সঞ্চালক প্রণব দাস বলেন, 'আমরা লোকাল স্বাস্থ্য দফতরকে বলব এই ব্যাপারে নজরদারি চালাতে। আমরা নিজেরাও দেখব। আর চাঁচল সুপার স্পেসালিটি হাসপাতালে যখন সব পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে তখন মানুষকে বলব এখানেই আসুন।'
এই প্রসঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলেন, 'অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখব।'
No comments:
Post a Comment