'চীন-পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে কোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা সবসময় প্রস্তুত': উত্তর কমান্ডের প্রধান
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ১১ সেপ্টেম্বর: সেনাবাহিনী পাকিস্তানের সাথে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) এবং চীনের সাথে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) 'অপারেশনের জন্য সর্বদা প্রস্তুত', সোমবার এমনই মন্তব্য করলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর উত্তর কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। তিনি বলেন, কাউকে ভারতীয় সীমান্তে অনুপ্রবেশ করতে দেবেন না। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি) জম্মুতে তিন দিনের নর্থ টেক সেমিনার ২০২৩-এ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "পাকিস্তান এবং চীনের বিরুদ্ধে যে কোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য আমরা সর্বদা LOC এবং LAC-তে সক্রিয়ভাবে প্রস্তুত রয়েছি।"
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নর ব্রিগেডিয়ার (অবসরপ্রাপ্ত) বিডি মিশ্র বলেছেন যে, 'চীন এই এলাকায় এক ইঞ্চি ভারতীয় জমিও দখল করেনি।' জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, "লাদাখের পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং খুব ভালো। নর্দার্ন কমান্ডের একজন সামরিক কমান্ডার হিসেবে আমি যেটা পাহারা দিচ্ছি সেটা আমাদের এলাকা এবং আমি কাউকে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকতে দেব না।” উল্লেখ্য, এর আগে লাদাখে তার ৯ দিনের সফরের সময়, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী পূর্ব লাদাখে চীনা অনুপ্রবেশের অভিযোগ করেছিলেন। বিজেপিও এর পাল্টা জবাব দিয়েছে এবং এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
গত তিন বছর ধরে পূর্ব লাদাখে ভারত ও চীনের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সীমান্ত অচলাবস্থা চলছে। ২০২০ সালের জুনে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় একটি হিংসাত্মক সংঘর্ষের পর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। চীনা সৈন্যদের সাথে হাতাহাতি লড়াইয়ে ২০ জন ভারতীয় সেনা শহীদ হয়েছিলেন। ১৩ এবং ১৪ আগস্ট, দুই দেশ চুশুল-মোল্ডো সীমান্তে ১৯তম কোর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক করেছে।
লেফটেন্যান্ট গভর্নর ব্রিগেডিয়ার বিডি মিশ্র বলেন, "রাহুল গান্ধী যা বলেছেন তা নিয়ে আমি মন্তব্য করব না, তবে আমি জমিতে যা দেখেছি তাতে মন্তব্য করতে পারি। ঘটনা হল এক ইঞ্চি জমিও দখল করা হয়নি।'' পাশাপাশি লেফটেন্যান্ট জেনারেল দ্বিবেদী আরও বলেন, সেনাবাহিনী LOC এবং LAC-তে সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। সেইসঙ্গে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস অভ্যন্তরীণ এলাকায় CI এবং CT অপারেশনে (সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান) খুব ভালো কাজ করছে।" তিনি জানান, প্রায় ২০০ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
তিনি বলেন, "সন্ত্রাসীরা অনুপ্রবেশের তালে আছে। LOC জুড়ে অপেক্ষা করছে পাকিস্তান। কিন্তু আমাদের সতর্ক সৈন্যরা সীমান্তে মোতায়েন রয়েছে এবং আমরা তাদের সেখানে নির্মূল করার চেষ্টা করছি।" তিনি বলেন, "গত নয় মাসে ৪৬ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ৩৭ জন বিদেশী এবং নয়জন স্থানীয়।"
তিনি বলেন, "তীব্র অর্থনৈতিক সংকট ও অন্যান্য সমস্যায় নিমজ্জিত থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করছে। পাকিস্তান শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করে এবং স্থানীয় সন্ত্রাসীদের খুঁজে না পেয়ে বিদেশি সন্ত্রাসীদের পাঠায়।" তিনি বলেন, "আমাদের নিরলস সিআই এবং সিটির অভিযানের কারণে মানুষ এখন বলছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে চলেছে।" তবে, তিনি রাজৌরি ও পুঞ্চের দুই সীমান্ত জেলায় হঠাৎ করে সন্ত্রাসবাদ বৃদ্ধির জন্য পাকিস্তানের হতাশাকে দায়ী করেছেন।
ড্রোন সম্পর্কে তিনি বলেন, "যতদূর ড্রোন প্রযুক্তির কতা, আমরা অনেক সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্ত করেছি। ড্রোন প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে আমাদের পাল্টা ড্রোন প্রযুক্তি বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, "সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা তাদের সাথে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে এসেছেন, যা সেনাবাহিনীর কাউন্টার ড্রোন প্রযুক্তিকে উন্নত করবে, তা সফটওয়্যার হোক বা গতিশীলতা।"
No comments:
Post a Comment