২০০০ টাকার প্রলোভনে পা! চরম বিপাকে যুবক
নিজস্ব সংবাদদাতা, দক্ষিণ দিনাজপুর, ১৬ সেপ্টেম্বর: মাত্র ২০০০ টাকার প্রলোভনে নিজের আধার ও প্যান কার্ড অন্যের হাতে তুলে দিয়ে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির শিকার যুবক। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি প্রতারণার মামলাতেও জড়িয়ে পড়েন তিনি। এই ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই দিল্লী পুলিশ হানা দিয়েছে ওই ব্যক্তির বাড়িতে। দিলীপ মালী নামে ওই যুবক বর্তমানে নিজেকে নিরপরাধ প্রমাণ করতে স্থানীয় থানা থেকে সাইবার ক্রাইম থানা, এমনকি জেলা পুলিশ সুপারের অফিস ঘুরে বেড়াচ্ছেন ।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি থানার তিওড় মালিপাড়ার বাসিন্দা দিলীপ মালী, পেশায় দিনমজুর। এদিন তিনি জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন পার্শ্ববর্তী ত্রিমোহিনী এলাকার ডাঙ্গাপাড়ার বাসিন্দা খোকন মালী ও তার মা মাধবী মালীর বিরুদ্ধে।
দিলীপ মালির অভিযোগ, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে অভিযুক্ত খোকন মালী, দিলীপ মালীর স্ত্রীকে জানায়, মোবাইল সিমের অফার চলছে। নিজের আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ডের লিংক করলে ২,০০০ টাকা পাওয়া যাচ্ছে। সেই টাকার লোভে পড়ে এবং আধার-প্যান লিঙ্ক হবে ভেবেই অভিযুক্তদের সাথে স্থানীয় ব্যাংকে গিয়ে প্যান-আধার লিঙ্ক করেন। তার অভিযোগ, এর পরেই মোবাইলে ভিডিও কলে এক হিন্দি ভাষীর সঙ্গে দিলীপ মালীকে কথা বলিয়ে দেন অভিযুক্তরা। সেই কথামত এরপর ২০০০ টাকা পেয়ে খুশি মনে বাড়ি চলে আসেন তিনি।
এরপরেই শুরু হয় আসল খেলা, বেজে ওঠে বিপদের ঘণ্ট। হঠাৎ করেই দিলীপ মালীর খোঁজে, দিল্লী থেকে পুলিশ আসে তার বাড়িতে। এরপরেই দিলীপ মালীরা জানতে পারেন, তার নামে কলকাতায় একটি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। আর সেই অ্যাকাউন্ট থেকে দিল্লীর এক ব্যবসায়ীর সাথে আর্থিক প্রতারণা করা হয়। লক্ষ লক্ষ টাকা আর্থিক প্রতারণার দায় এসে পড়ে দিলীপ মালীর ওপরে। ঘটনায় কূল-কিনারা না পেয়ে দিলীপ মালী স্থানীয় হিলি থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে হিলি থানা থেকে তাদের বলা হয় বালুরঘাটের সাইবার ক্রাইম থানায় যোগাযোগ করতে।
দিলীপ মালী জানান, যেহেতু দিল্লী পুলিশ মামলা শুরু করেছে, তাদের সেখানেই যেতে হবে। সাইবার ক্রাইম থানাও কোন অভিযোগ নেয়নি। নির্দোষ প্রমাণের সব রাস্তা বন্ধ হয়ে যেতে দেখে শনিবার জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তরে অভিযোগ জানান দিলীপ মালী।
এই বিষয়ে দিলীপ মালী বলেন, 'আমি আজ পর্যন্ত কলকাতায় যাইনি, তাহলে ব্যাংক অ্যখকাউন্ট খুলব কি করে! ২০০০ টাকা পাওয়া যাবে বলে খোকন মালি আমাদের থেকে আধার ও প্যান কার্ড নেয়। এরপর এক ব্যক্তির সাথে ভিডিও কলে কথা বলায়। এখন দিল্লী থেকে পুলিশ আসায় জানতে পারি, আমার নামে কলকাতায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে আর্থিক প্রতারণা করা হয়েছে। আমি একাধিক থানায় গেলেও আমার অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে না, সেই কারণে আজকে আমি পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছি।'
No comments:
Post a Comment