পুজোর আবহে থিমের চাপ! চিড়ে চ্যাপ্টা শোলা শিল্প, চিন্তায় শিল্পীরা - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday 26 September 2023

পুজোর আবহে থিমের চাপ! চিড়ে চ্যাপ্টা শোলা শিল্প, চিন্তায় শিল্পীরা

 


পুজোর আবহে থিমের চাপ! চিড়ে চ্যাপ্টা শোলা শিল্প, চিন্তায় শিল্পীরা





নিজস্ব সংবাদদাতা, দক্ষিণ দিনাজপুর, ২৬ সেপ্টেম্বর: দুর্গা পুজো ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। মণ্ডপে মণ্ডপে দেখা যাবে থিমের বাহার। আর থিমের এই কদর বেড়ে যাওয়ায় শোলার কদর বর্তমানে তলানিতে পৌঁছেছে। ফলত কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার শোলা শিল্পীদের। এক মাসও নেই দুর্গা উৎসবের। কিন্তু এখনও সেইরকম ব্যস্ততা নেই বললেই চলে মালাকার পাড়ায়। কাজের অভাবে ধুঁকছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের শিল্পীরা। পেটের তাগিদে কেও বা পূর্বপুরুষের পেশা ছেড়ে পাড়ি দিচ্ছে ভিন রাজ্যে আবার কেউ শিল্পীর কাজ ছেড়ে অন্য কোনও পেশায় যুক্ত হয়েছেন। 

    

উল্লেখ্য আজ থেকে দশ বছর আগেও ছবিটা অন্যরকম ছিল মালাকার পাড়ায়। নাওয়া-খাওয়া ভুলে বাড়িতে বাড়িতে তখন ব্যস্ততা থাকত তুঙ্গে। শুধু পুজোর সময় বলে নয়, সারা বছরই ব্যস্ততা থাকত মালাকার পাড়ায়। চলতো মায়ের সাবেকি ডাকের সাজের প্রস্তুতি। দুর্গা প্রতিমার সাবেক সাজ মানেই ডাকের সাজ, সাবেক এই রূপেই মা দুর্গাকে দেখতে অভ্যস্ত বাঙালি। কিন্তু পাল্টেছে মানুষের অভিরুচি, বর্তমান সময়ে প্রতিমার গয়নায় জরি থেকে চুমকি সহ অত্যাধুনিক মানের চকচকে জিনিস বাজারে আসায় চাহিদা কমেছে শোলার। থিম পুজোর হিড়িকে এসেছে আরও নিত্যনতুন উপাদানও। তাই দুর্গা পূজা এলেও আর তেমন বরাত আসে না শোলার গয়না তৈরির।

     

গ্রাম বাংলার এই কুটির শিল্পকে বাঁচানোর তাগিদও নেই কারও, এর ফলে শোলার ডাকের সাজের জায়গায় বাজার দখল করেছে রোল গোল্ড এবং প্লাস্টিকের তৈরি পোশাক, যা রংচংয়ে এবং দেখতে উজ্জ্বল। সাবেকি ডাকের সাজ যারা তৈরি করতেন সেই সমস্ত শিল্পীরা এখন প্রায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে। শোলা শিল্পীদের নতুন প্রজন্ম আর এ কাজে আসতে চায় না। পুরনো যে কয়জন রয়েছেন, তারাও বয়সের ভারে কোনও রকমে পূর্বপুরুষদের এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। 


এই প্রজন্ম শেষ হয়ে যাওয়ার পর পরের প্রজন্ম আর এ কাজে অংশগ্রহণ করবে না বলে আক্ষেপের সুরে জানান শোলা শিল্পীরা। ফলে গ্রামাঞ্চল থেকে আগামী দিনে হারিয়ে যাবে শোলার তৈরি ডাকের সাজ, হারিয়ে যাবে সাবেকি কুঠির শিল্প। এখন ব্যস্ততা বলতে বিয়ের জন্য ব্যবহৃত মুকুট তৈরি, তাতেই কিছু টাকা উপার্জন হয়। পুজোর কাজের বরাত সেভাবে আর আসে না শিল্পীদের কাছে। দুর্গা পুজাকে কেন্দ্র করে শিল্পীরা যে বরাত পেতেন, সেই আয় থেকে পরবর্তী কয়েক মাসের সংসার খরচ চলতো। বর্তমানে বাজারে অত্যাধুনিক ছায়া, চকচকে জিনিসপত্র চলে আসায় নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে শোলা শিল্পীদের।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad