ঘোষ বাড়ির দুর্গা পুজোয় এখনও রয়েছে বলি প্রথা! - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, 20 September 2023

ঘোষ বাড়ির দুর্গা পুজোয় এখনও রয়েছে বলি প্রথা!

 


 ঘোষ বাড়ির দুর্গা পুজোয় এখনও রয়েছে বলি প্রথা! 

 



নিজস্ব সংবাদদাতা: টাকির জমিদারদের লাঠির জোর কেমন ছিল তা অনেকেরই জানা। আর তাই তো এলাকায় প্রচলিত প্রবাদ আছে টাকির লাঠি, সাতক্ষিরার মাটি ও ধান্যকুড়িয়ার জমিদারদের চাঁদি ছিল বিখ্যাত। এখনও টাকির জমিদারদের অর্থ, প্রভাব, প্রতিপত্তি জানান দিচ্ছে আনুমানিক ৩৭৫ বছর আগের পলেস্তরা খসে পড়া পাঁচ খিলানের দুর্গা দালানটি। 


ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে টাকির ইছামতীর পশ্চিম পারে ঘোষ বাড়িতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে দুর্গা দালানের খিলানগুলি। বয়সের ভারে ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেশ কয়েকবছর আগে দুর্গা দালানের ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কয়েক বছর আগে তা ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে জানান ঘোষ বাড়ির সদস্যরা।


জনশ্রুতি রয়েছে, টাকির জমিদারদের প্রভাব-প্রতিপত্তি এতটাই ছিল যে, এই বাড়ির দুর্গা পূজার  সময়ে এখানে এসেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শরৎ বসু, সুভাষ চন্দ্র বসু প্রমুখ মনীষীরা। এখনও ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া ঘোষ বাড়ির দুর্গা-দালানে বিভিন্ন সিনেমার শুটিং হয়ে থাকে। আনুমানিক প্রায় ৩৭৫ বছর আগে এই বাড়ির পূজা শুরু করেন হরিনারায়ণ ঘোষ। 


ঘোষ পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের সদস্যদের কাছ থেকে জানা যায়, অবিভক্ত বাংলার খুলনা জেলায় জমিদারি ছিল ঘোষ পরিবারের। কালের স্রোতে এখন আর জমিদারি না থাকলেও এবং বাড়ির পাশাপাশি দুর্গা-দালানের পলেস্তারা খসে পড়লেও বর্তমান প্রজন্মের সদস্যরা পূর্বপুরুষের দেখানো পথেই রীতি নীতি মেনে এখনও দুর্গা পুজো চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন দুর্গা দালানের মাঝে অস্থায়ী ছাউনির নীচে দুর্গা প্রতিমার মৃন্ময়ী রূপ থেকে চিন্ময়ী রূপ দেওয়ার কাজ চলছে। 


রাজ্য হেরিটেজ কমিটি এলাকার ঘোষ বাড়ি সহ বেশ কয়েকটি বাড়ি সংস্কারের ইচ্ছা প্রকাশ করলেও এখনও তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ঘোষ বাড়ির বর্তমান প্রজন্মের সদস্য সুপ্রভাত ঘোষ বলেন, 'পূর্বপুরুষের রীতিনীতি মেনে এখনও বৈষ্ণব মতে পুজো হয়। পুজোয় আখ ও চাল কুমড়ো বলি দেওয়ার রীতি এখনও আছে। বাড়ির বর্তমান প্রজন্মের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও পুজোর কয়েকটা দিন সকলেই জড়ো হন টাকির ঘোষ বাড়িতে। 


জানা গিয়েছে, এখনও দশমীর দিনে ধূমধাম করে বাড়ির মেয়েরা সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। দশমীতে নিয়ম-নির্ঘণ্ট মেনে বেয়ারাদের কাঁধে চাপিয়ে দেবীকে ইছামতীর তীরে নিয়ে যাওয়া হয়। নৌকায় ইছামতী বক্ষে ঘোরান হয় দেবীকে। সূর্যাস্তের পর প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। এই বাড়ির পুজোয় ভোগের একটি বৈশিষ্ট্য আছে। পুজোয় কোনও রান্না ভোগ ব্যবহার করা হয় না। ভোগ হিসেবে যা দেওয়া হয়, সবই কাঁচা।


                    

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad