ভারতের পদক্ষেপে খুশি রাশিয়া
প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ১১ সেপ্টেম্বর: নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত দুদিনের জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন ভারতের জন্য অনেক দিক থেকেই সফল হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, নয়াদিল্লীর ঘোষণাপত্রে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের কোনও উল্লেখ ছিল না। এটা করে এবং ঘোষণাপত্রে ঐকমত্য তৈরি করে ভারত মাস্টারস্ট্রোক খেলেছে। এই পদক্ষেপে বিস্মিত ভারতের বন্ধুও। ইন্দোনেশিয়ায় শেষ জি-২০ সম্মেলনে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে ঘোষণাপত্রে রাশিয়ার সমালোচনা করা হয়। কিন্তু এবার ভারতের উদ্যোগের সুবাদে তা হয়নি। এতে বিস্মিত রাশিয়া খুশি। ভারতের এই পদক্ষেপ নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের অবস্থান ভারতের শীর্ষ সম্মেলনের সাফল্যের পরিচয় দেয়।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে, ভারতে আয়োজিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন সফল বলে বর্ণনা করা হয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ জি-২০ সম্মেলনে ইউক্রেন যুদ্ধকে প্রভাব ফেলতে না দেওয়ায় ভারতের প্রশংসা করেছেন। সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলার সময়, লাভরভ বলেন, 'ভারত জি-২০ এজেন্ডা ইউক্রেনীয়করণ হতে দেয়নি।' নয়াদিল্লির ঘোষণাপত্রে ব্যবহৃত শব্দে রাশিয়া আনন্দের পাশাপাশি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছে, এমন ঘোষণাপত্র তারা কখনই আশা করেনি। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবিবার জি-২০র রাজনীতিকরণের প্রচেষ্টা আটকানো্য জন্য ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, "এই শীর্ষ সম্মেলন অবশ্যই সফল হয়েছে।" জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণার বিষয়ে ঐকমত্যের বিষয়ে ল্যাভরভ বলেন, "যখন তারা এতে সম্মত হয়েছিল, সম্ভবত এটি তাদের বিবেকের কণ্ঠস্বর ছিল। সত্যি বলতে, আমরা এটা আশা করিনি।" রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "ইউক্রেন এবং রাশিয়ার উল্লেখ করা বিবৃতিকে আমরা ঘোষণার বাকি অংশ থেকে আলাদা করতে পারি না। এই বছরের ঘোষণার মূল লাইনটি গ্লোবাল সাউথের একীকরণ সম্পর্কে।" ল্যাভরভ বলেন, 'জি-২০ সত্যিই তার মূল লক্ষ্যে কাজ করছে।'
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হতে পারে বলে তিনি মনে করেন কিনা জানতে চাইলে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, "এই মুহূর্তে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ রাশিয়ানদের শারীরিকভাবে ধ্বংস করার হুমকি দিচ্ছে।" লাভরভ বলেন, "সবাই শান্তি চায়। প্রায় ১৮ মাস আগে, আমরা এই বিরোধের সমাধানের জন্য একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে রাজি হয়েছিলাম। তারপর অ্যাংলো-স্যাক্সনরা জেলেনস্কিকে স্বাক্ষর না করার নির্দেশ দিয়েছিল। কারণ তারা ভেবেছিল, তারা আমাদের কাছ থেকে কিছু স্বীকারোক্তি পেতে সক্ষম হবে।"
প্রসঙ্গত, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং-এর জন্য এই সফরে নীরব দর্শক হয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই অর্জন করা হয়নি। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নিয়েও কথা বলতে পারেনি চীন। এমনকি চীনের প্রধানমন্ত্রী ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে কথা বলতে দ্বিধায় ছিলেন। মেলোনি রোমে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ত্যাগ করার কথাও বলেছেন। এছাড়াও ভারত আফ্রিকান ইউনিয়নকে ২১ তম সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এটি চীনের জন্য একটি গভীর ধাক্কা, যা দরিদ্র আফ্রিকান দেশগুলিকে তার ঋণের শিকার করে তুলেছিল।
No comments:
Post a Comment