পরপর তিন কন্যা সন্তান! স্ত্রী-সহ মেয়েদের প্রাণে মারার চেষ্টা, আশঙ্কাজনক ২
নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ১৮ সেপ্টেম্বর: পরপর তিন কন্যা সন্তান হওয়ায় স্ত্রী ও তিন কন্যা সন্তানকে কীটনাশক খাইয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাতে মালদা জেলার গাজোল থানার গোসানিবাগ এলাকায়। যদিও অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবী করেন অভিযুক্ত স্বামী। এদিকে গৃহবধূ ও তার এক মেয়ে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি দুই মেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে আপাতত সুস্থ রয়েছে বলে পরিবার সূত্রে জানা যায়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদা জেলার গাজোল থানার আলতোর গ্রামের যুবতী অর্পিতা মণ্ডল (৩২)-এর গাজোল থানার গোসানিবাগ এলাকার দীপক মণ্ডলের সাথে ভালোবাসা করে ১২ বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে পরপর তিন কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ওই গৃহবধূ। গৃহবধুর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, এরপর থেকেই অত্যাচার বেড়ে যায় ওই গৃহবধূর। একাধিকবার গৃহবধূকে মারধর ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। গতকাল রবিবার রাতে গৃহবধূ ও তার তিন কন্যা সন্তানকে কীটনাশক খাওয়ানোর চেষ্টা করে অভিযুক্ত স্বামী; এক মেয়ে ও তার স্ত্রীকে যখন কীটনাশক খাওয়ানো হয়। এরপর দুই কন্যা সন্তান সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে গ্রামবাসীদের বিষয়টি জানায়।
গ্রামবাসীরা খবর পেয়েই তড়িঘড়ি ছুটে এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এক মেয়ে ও গৃহবধূকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে প্রথম স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেইখান থেকে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় দুজনকে। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই গৃহবধূ ও তার এক মেয়ে। এই বিষয়ে গাজোল থানায় অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে আহত গৃহবধূর পরিবারের সদস্যরা।
আক্রান্ত গৃহবধূর বাবা গণেশ মণ্ডলের দাবী, তার মেয়ের পরপর তিন কন্যা সন্তান হওয়ায় তার মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার করে চলেছে তার জামাই। তিনি বলেন, 'গতকাল রাতে আমার মেয়ে এবং তিন নাতনিকে কীটনাশক খাইয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। সেই সময় দুই নাতনি সেখান থেকে পালিয়ে গ্রামবাসীদের বিষয়টি জানায়। বর্তমানে এক নাতনি ও আমার মেয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।'
আহত গৃহবধূর মা মালতি মণ্ডল বলেন, 'পরপর তিন কন্যা সন্তান হওয়ার জন্যই আমার মেয়েকে কীটনাশক খাইয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে আমার জামাই। আমরা অভিযুক্ত জামাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। তার উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করছি।
অপরদিকে অভিযুক্ত গৃহবধূর স্বামী দীপক মণ্ডলেয অভিযোগ, স্থানীয় এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের সাথে তাঁর স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, এই বিষয়টি জানাজানি হতেই আমার স্ত্রী নিজে ও আমার মেয়েদের কীটনাশক খাইয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা করে আমার স্ত্রী। আমাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে আমার শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা।' পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে গাজোল থানার পুলিশ।
No comments:
Post a Comment