মাটির হাঁড়িতে ইলিশ মাছের টক, মুখার্জী বাড়ীতে দেবীকে নিবেদন করা হয় বিশেষ ভোগ
নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রায় ৩৫০ বছরের প্রাচীন হুগলির চাঁপদানীর মুখার্জী গলির মুখার্জী বাড়ির দুর্গা পুজো। দীর্ঘকাল ধরে বংশ পরম্পরায় এই এলাকাতেই বাস মুখার্জী পরিবারের। কলকাতায় ব্যবসা থাকার সুবাদে সেখান থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়েই শুরু হয় দুর্গা পুজো। মূলত বাঙালি এবং অবাঙালি সহ মুসলিম অধ্যুষিত চাঁপদানীতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির সারা জীবনই দেখা যায় এই মুখার্জী বাড়ীতে। বাড়ীর লোকজন ছাড়াও মা দুর্গাকে নিয়ে আসা এবং পুজোয় অংশগ্রহণে সব ধর্মের, সব জাতির প্রতিবেশীরাই অংশগ্রহণ করেন এই বাড়ির পুজোয়।
সপ্তমীতে কলা বউ স্নান করানোর জন্য যেমন গঙ্গায় যাওয়ার রীতি রয়েছে, এই বাড়ির নিয়ম তার ব্যতিক্রম। কলা বউ স্নান এই বাড়ির দালানেই হয়ে থাকে। পুজোর অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে ১৪ রকমের নৈবেদ্য সহ প্রত্যেকদিন পুজো দেওয়া হয় মা দশভূজাকে। একই সাথে তিন দিন মাটির হাঁড়িতে ইলিশ মাছের টক ভোগ হিসাবে পরিবেশন করা হয়।
চাল কুমড়ো বলি এই বাড়ির পুজোর অন্যতম রীতি। সন্ধি পুজোর সময় ১০৮টি প্রদীপ জ্বালিয়ে মাকে বরণ করেন বাড়ীর বউরা। বিজয়ার দিনে মাকে বরণ করারও এক অন্যরকম নিয়ম রয়েছে মুখার্জী বাড়ীতে। এই পরিবারের যে মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে তারাই প্রথম বরণ করেন মাকে। তারপর বাড়ির বউরা বরণে অংশ নেন। গঙ্গায় দেবী বিসর্জনের পর সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয় এখনও পর্যন্ত।
তবে, সময় পাল্টেছে, যুগ বদলেছে; পরিবারের সদস্যরা কাজের তাগিদে অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়েছেন। কিন্তু পুজোর এই চার দিন এখনও সকলে একত্রে মিলিত হন। সকলের আর্থিক সহযোগিতায় মা পূজিতা হয়ে আসছেন চাঁপদানীর মুখার্জী গলির মুখার্জী বাড়িতে।
No comments:
Post a Comment